দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আজ থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। গত কয়েক মাসে যেভাবে সীমান্তে চিনের সঙ্গে ভারতের সংঘাত হয়েছে তাতে এই বিষয়টি এবারের অধিবেশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হতে চলেছে। তাই অধিবেশনের আগে নিজের বার্তায় সেই চিন প্রসঙ্গই তুলে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, তাঁর আশা সংসদ ও সাংসদরা এই বার্তা দেবে যে দেশ ভারতীয় সেনার পাশে রয়েছে।

এদিন নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনী অসীম সাহস, নিষ্ঠা ও দেশের প্রতি আত্মত্যাগের ভাবনা থেকে সীমান্তে মজবুত দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁরা কঠিন উচ্চতায় রয়েছেন। কিছুদিন পরেই বরফ পড়া শুরু হবে। তাই আমি আত্মবিশ্বাসী যে এই অবস্থায় সংসদ ও সাংসদরা এক হয়ে একটা বার্তা দেবেন, যে সেনার পাশে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশ।”

মোদীর এই বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার চিনের বিরোধিতা প্রসঙ্গে সব দলের কাছে একতার বার্তা দিতে চাইলেন তিনি। গত ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার উপর আচমকা চিনা সেনার হামলা হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস। বিশেষ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী প্রায় প্রতিদিনই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আঙুল তুলছেন। কখনও ভারতের সীমান্ত সামলাতে মোদী সরকার ব্যর্থ, কখনও আবার লাল ফৌজের চোখরাঙানিকে ভয় পাচ্ছে কেন্দ্র, এই সব অভিযোগ তুলেছেন রাহুল। কিন্তু তারপরেও সব দলকে পাশে থাকার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

করোনা সংক্রমণের জেরে মার্চ মাসে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সংসদের অধিবেশন। ফের তা শুরু হচ্ছে। চলতি পরিস্থিতিতে অনেক কিছু বদল হয়েছে অধিবেশনে। যেমন প্রতিদিন দুই কক্ষ অর্থাৎ লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশনের জন্য চার ঘণ্টা করে সময় ধার্য করা হয়েছে। জিরো আওয়ার কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। প্রশ্নোত্তর পর্ব নেই। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে বিরোধীদের।

জানা গিয়েছে প্রতিদিন রাজ্যসভার অধিবেশন চলবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। অন্যদিকে দুপুর ৩টেই শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে লোকসভার অধিবেশন। অর্থাৎ দুটি অর্ধে দুটি সেশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একমাত্র প্রথম দিন অর্থাৎ আজ সকালের সেশন হবে লোকসভায়।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, নতুন নিয়মে সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জিরো আওয়ারের সময়ও অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিরোধী দলগুলি। তাদের দাবি, বিরোধীদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।

সংবিধানকেও মানছে না মোদী সরকার। এদিন অধিবেশন শুরু হলে যে এই বিষয় নিয়ে বিরোধীরা সোচ্চার হবে তা নিশ্চিত। সেটা জানতেন মোদী। তাই তার আগেই সেনাবাহিনী ও সীমান্তের প্রসঙ্গ টেনে এনে অধিবেশনের সুর বেঁধে দেওয়ার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here