দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মারণ ভাইরাস নোভেল করোনার আতঙ্কে চিন ছাড়ছেন বহু মানুষ। কিন্তু তাঁরা যাচ্ছেন কোথায়? জার্মানির হাম্বডলট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রবার্ট কোচ তাঁর গবেষণায় জানাচ্ছেন, আতঙ্কে যাঁরা চিন ছাড়ছেন তাঁরা ২০টি দেশে যেতে চাইছেন। তার মধ্যে রয়েছে ভারতও।
২০টি দেশের যে তালিকা এই গবেষক দিয়েছেন তার ১৭ নম্বরে নাম রয়েছে ভারতের নাম। বিমানবন্দরে চিন থেকে মানুষের আসার সংখ্যা, সেখানকার বাতাসের গুণগতমান, ইত্যাদি থেকে এই তথ্য দিয়েছেন ওই গবেষক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-কেও রিপোর্ট দিয়েছেন রবার্ট কোচ।

যে ২০টি দেশে অতি সহজপথে নোভেল করোনাভাইরাস ঢুকে পড়তে পারে তার মধ্যে অন্যতম ভারত। জার্মানির হামবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবার্ট কোশ ইন্সটিটিউটের করা একটি সমীক্ষায় এমনটাই জানা গিয়েছে।

সারা বিশ্বের ৪০০০ বিমানবন্দর এবং তাদের মধ্যে সরাসরি ২৫০০০ সংযোগকারীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে করা রিপোর্ট বলছে, ওই ২০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১৭তম এবং ভারতে এই রোগ সংক্রমণের হার ০.‌২১৯ শতাংশ। কারণ চীন ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের আরেকটি অন্যতম গন্তব্যস্থল হল ভারত।
দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা বিমানবন্দরকেও তাঁর তালিকার মধ্যে রেখেছেন রবার্ট। এছাড়াও রয়েছে বেঙ্গালুরু, কোচি বিমানবন্দর। এই গবেষণায় সারা পৃথিবীর চার হাজার বিমানবন্দরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অথচ প্রতি ১০০০ জন আক্রান্তের মধ্যে মাত্র দুজনের গন্তব্য জার্মানি। করোনাভাইরাস আমদানির আশঙ্কা, কলকাতা বিমানবন্দরে ০.‌০২০ শতাংশ, দিল্লিতে ০.‌০৬৬ শতাংশ, মুম্বইয়ে ০.‌০৩৪ শতাংশ। চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং কোচির বিমানবন্দরও এই তালিকায় আছে। সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, ভারতে সেভাবে সতর্কতামূলক আয়োজন বা যন্ত্রপাতি না থাকার দরুম সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও বেশি।

শুধু চিন থেকে আসা মানুষজনই নন। করোনা ছড়িয়েছে এমন দেশ থেকে আসা মানুষজনের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, ধরা যাক কোনও ব্যক্তি ইংল্যান্ডে থাকেন কর্মসূত্রে। তিনি দিল্লিতে ফিরবেন। হয়তো তাঁর কর্মস্থলের সহকর্মীদের বেশ কয়েকজন চিনা নাগরিক। তাহলে যে ব্যক্তি লন্ডন থেকে দিল্লিতে আসছেন তাঁর মধ্যেও করোনা সংক্রমণ থাকতে পারে।
২০০২-০৩ সালে সার্স মহামারি ঘুম কেড়ে নিয়েছিল সারা বিশ্বের। মৃত্যু হয়েছিল সাড়ে সাতশোর বেশি মানুষের। কিন্তু নোভেল করোনা ভাইরাস তাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা হু সরকারি ভাবে জানাল চিন-সহ বিভিন্ন দেশে ৮০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যেই। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৭ হাজার।
চিনের উহান থেকে যে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছিল সেটা এখন থাবা বসিয়েছে দেশের অন্যান্য শহরেও। রাজধানী বেজিংয়ে ৩০০-র বেশি মানুষের ভাইরাস-জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। সাংঘাই শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বার্তা দিয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংও।
বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে হু। ভারতের কেরলে তিনজনের শরীরে করোনা সংক্রমণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। দক্ষিণের এই রাজ্যেও স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। সব মিলিয়ে যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি ততই উদ্বেগজনক হচ্ছে। তার উপর এই জার্মান গবেষণা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।

এই জরুরি অবস্থায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পেট্রাপোল স্থলবন্দর কতটা সুরক্ষিত প্রশ্ন উঠেছে! যদিও “দেশের সময়”এর খবরের জেরে নরেচড়ে বসেছে প্রশনাসন৷

অনেকটা দেরিতে হলেও “দেশের সময়” এর খবরের জেরে শেষপর্যন্ত পেট্রাপোল সীমান্তে পৌছল মেডিকেল টিম, খোলা হয়েছে করোনাভাইরাস হেল্প ডেস্ক”


বাংলাদেশ থেকে আসা প্রতিটি যাত্রীকে পরিক্ষা করে দেখা হচ্ছে কারো শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আছে কিনা এবং বিশেষ নমুনা পাঠানো হচ্ছে পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে (NIV) ।

এখন প্রশ্ন হলো পেট্রাপোল সীমান্তের পাশে বহু এলাকা রয়েছে যেখান থেকে খুব সহজে কাঁটাতার পেড়িয়ে সামান্য টাকার বিনিময়ে ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় চিকিৎসার জন্য আসছেন অনেকেই এমনটাই সূত্রের খবর৷সেই সব রোগীদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশের শ্রমিক যারা চিনেও শ্রমিকের কাজে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই৷ স্থানীয় সূত্রের খবর বিভিন্ন সময়ে তারা দালালদের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকছে চোরা পথে। যাদের হদিস পাওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে৷ পাশাপাশি পেট্রাপোল সীমান্তের যাত্রীদেরও কতটা পর্যবেক্ষণ করছেন সেখানে দায়িত্বরত স্বাস্থ কর্মিরা সেটাই এখন দেখার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here