দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন ১৮ দিন হল। আজ বুধবার, ১৯ দিনের মাথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা ছাড়ার ২ সপ্তাহ পর তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। গত ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল, শুভেন্দুর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে। গত কয়েক দিন ধরে এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে, এ বার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন। শেষ পর্যন্ত সেই জল্পনাই সত্যি হল আজ ।

বুধবার বিকেলে বিধানসভায় পৌঁছে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁতে অবিলম্বে তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।

এদিন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় দুপুর ১টায় বেরিয়ে গিয়েছেন। তাই বিধানসভা ভবনের দোতলায় স্পিকারের সচিবের কক্ষে গিয়েছেন শুভেন্দু। স্পিকারের উদ্দেশে দেওয়া ইস্তফা পত্র তাঁর কাছে জমা দেন বলে সূত্রের খবর ।


একুশ সালের গোড়ায় বিধানসভা ভোট আসন্ন বাংলায়। তার আগে আজ বুধবার সম্ভবত সব থেকে উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি ঘটছে রাজ্য রাজনীতিতে। বড় রকমের ভাঙনের মুখে পড়ল বাংলায় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

প্রবীণ সাংবাদিক তথা উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তী প্রজন্মে তৃণমূলে সব থেকে বড় নেতা হলেন শুভেন্দু অধিকারী। দলের মধ্যে ও বাইরে ওঁর অনেক ফলোয়ার রয়েছে (পরে তিনি অবশ্য বলেছিলেন, আমার বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে)।

তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, শুভেন্দুবাবুর দল তৃণমূল ত্যাগ কেবল একজনের ইস্তফা হিসেবে দেখলে হয়তো ভুল হবে। কারণ, শুভেন্দুর নিজস্ব জনভিত্তি রয়েছে। দুই মেদিনীপুর ও জঙ্গলমহল তো বটেই রাজ্যের কম-বেশি প্রায় সব জেলাতেই তাঁর অনুগামী রয়েছেন। হতে পারে, তাঁর ইস্তফার সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু বিধায়ক ও ছোট, মাঝারি নেতার তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আসা এখন সময়ের অপেক্ষা।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, এদিন শুভেন্দু যখন বিধানসভায় পৌঁছেছেন তাঁর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের সাংসদ সুদীপ মুখোপাধ্যায়। শুভেন্দু যুব তৃণমূল সভাপতি পদে থাকার সময় থেকে সুদীপ ছিলেন তাঁর অনুগামী। তিনি শুভেন্দুর রাজনৈতিক পথ অনুসরণ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

২৭ নভেম্বর রাজ্য মন্ত্রিসভার পাশাপাশি আরও কয়েকটি পদ থেকে ইস্তফা দেন। মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেওয়ার পর শুভেন্দু ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর ‘রাজনৈতিক অবস্থান’ জানাবেন বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার পর। সেই পর্বও এ বার সম্পূর্ণ হল। অন্য দিকে বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার পরে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এর পর তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।

রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর শুভেন্দু প্রকাশ্যে এখনও দল বা সরকার সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে এসে তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার তিনি কী বলেন! কেন এই পদত্যাগ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here