দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বৃহস্পতিবারই উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, কয়েক হাজার টন সোনা-সমৃদ্ধ একটি স্বর্ণখনি আবিষ্কৃত হয়েছে উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্রে। দাবি করা হয়েছিল, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (জিএসআই) টিম ২০০৫ সাল থেকেই এই এলাকায় সোনা খোঁজার কাজ করছিল, অবশেষে সাফল্য এসেছে। কিন্তু ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এমন দাবি উড়িয়ে দিল খোদ জিএসআই। জানাল, ১৬০ কিলো মতো সোনা মাটির নীচে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে মাত্র। তিন বা সাড়ে তিন হাজার টন সোনার কোনও সম্ভাবনা নেই।

বৃহস্পতিবার সোনভদ্র জেলার খনি সংক্রান্ত বিভাগের আধিকারিক কেকে রাই সংবাদমাধ্যমকে জানান, সোনভদ্র জেলার সোনাপাহাড়ি এবং হারদি এলাকায় দুটি সোনার খনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ওই সোনার খনি দু’টি মাইনিংয়ের জন্য লিজে দেওয়ার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সাত বিশেষজ্ঞ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। গোটা এলাকার পরিদর্শন করে আই খনিজ সম্পদ দফতরকে রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল সেই কমিটির।


এর পরেই গতকাল, শনিবার জিএসআই-এর ডিরেক্টর জেনারেল এম শ্রীধর কলকাতার দফতরে বসে জানিয়ে দিলেন, ৩৩৫০ টন নয়, মাত্র ১৬০ কিলোর মত সোনা মাটির নিচে থাকতে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ১৯৯৮-৯৯ এবং ১৯৯৯-২০০০ সালে দু’বার ওই অঞ্চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিল জিএসআই। সেই রিপোর্টও উত্তরপ্রদেশের সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্টেই স্পষ্ট ছিল, সোনভদ্র এলাকায় মাটির নীচে থাকা সোনার পরিমাণ এমন কিছু আশাব্যঞ্জক নয়। তার পরেও কী করে এমন কয়েক হাজার টন সোনার কথা সামনে এল, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এম শ্রীধর।

সমস্ত দাবি উড়িয়ে শ্রীধর বলেন, “সংবাদমাধ্যমে যে সাড়ে তিন হাজার টন সোনার কথা বলা হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। আদতে ওই এলাকায় ৫২ হাজার ৮০৪ টন আকরিক রয়েছে। প্রতি টনে ৩.০৩ গ্রাম সোনা রয়েছে। সেটা হিসেব করলে, সব মিলিয়ে ১৬০ কেজির কাছাকাছি সোনা পাওয়া যেতে পারে। সেটাও বেশ সময়সাপেক্ষ এবং শ্রমসাধ্য।”

বৃহস্পতিবার জেলা খনি আধিকারিক কে কে রাই-এর মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। আজ জিএসআইয়ের বক্তব্য জানার পরে তা অনেকটাই মিইয়ে গেছে।

জিএসআই সোনার খনির অলীক দাবি ওড়ানোর পরে শাসকদলকে তীব্র কটাক্ষ করেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। তিনি টুইট করেন, “কেন আমাদের সরকার টন-মন-ধন নিয়ে এত অন্ধকারে পড়ে আছে? প্রথমে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৫ মিলিয়ন টন অর্থনীতির কথা বলেছিলেন। তারপর ৩ হাজার ৩৫০ টন সোনা উত্তরপ্রদেশের মাটির তলায় চাপা পড়ে আছে বলে দাবি করে পরে ১৬০ কেজি সোনার খবর জানাল। সরকারের উচিত টন-টানা-টন সম্পর্কে একটু কম কথা বলা।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here