দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ শাহীন বাগ-জামিয়ায় গুলি চালানোর ঘটনায় এবার স্পষ্ট করেই বিজেপি নেতাদের দিকে আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বনগাঁর জনসভা থেকে মমতা বলেন, ‘একদল গুন্ডা বলছে গোলি চালা দো, তাদের আগে বিজেপি নেতারাও বলছেন, গুলি চালাও। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও বলছেন, গুলি চালানোর কথা।’ কলকাতার পার্ক সার্কাসের মহিলা-শিশুদের আন্দোলনকে অবশ্য হুমকি দিয়ে বন্ধ করা যাবে না বলেই পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘আমাদের মেয়েরা হাতে শুধু কাঁচের চুড়ি বসে আছে, এটা ভাববেন না। ওঁরা রান্না করতেও জানে, আবার হাতে হাতা-খুন্তি ধরতেও জানে।’

সেইসঙ্গে তিনি স্পষ্টতই দাবি করেন, জামিয়ায় ও শাহিনবাগের বাইরে গুলি চালানোর ঘটনা শান্তিপূর্ণ মানুষকে সন্ত্রস্ত করানোর জন্যই ঘটানো হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট নিয়েও এদিন সুর সপ্তমে চড়িয়েছেন মমতা। বলেন, ‘কর নিয়ে বাজেটে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। দেশের সবকিছু বেচে দিচ্ছে ওরা। বিএসএনএল, এলআইসি, এয়ার ইন্ডিয়া কিছুই আর থাকবে না।’ মোদীকে কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ‘যিনি নিজেকে চৌকিদার বলে দাবি করেন, সে শুধুই ভোটের সময় মানুষের প্রতি যত্নশীল আর সারাবছর কোনও অসুবিধার খেয়াল রাখেন না।’


মতুয়া এবং উদ্বাস্তু অধ্যুষিত, সীমান্ত শহর বনগাঁয় মুখ্যমন্ত্রীর এই সভা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ কেন্দ্রটি তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল। মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যেও রাজনৈতিক বিভাজন প্রকট হয়ে পড়ে। বনগাঁ পুরসভা হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। যদিও শেষমেশ তা রয়েছে রাজ্যের শাসকদলের হাতে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, বনগাঁয় সিএএ বা এনআরসি-র বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রচার এখনও সে ভাবে জমাট বাঁধেনি। এখানে প্রতিবাদের স্বর উচ্চগ্রামে নিয়ে যেতে তৃণমূল নেত্রীর এই সভা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এদিনের সভা থেকে মমতা স্পষ্টতই বলেন, ‘এ রাজ্যে কোনও এনআরসি হবে না। উদ্বাস্তুদের নিয়ে ওরা কী ভাববে? আমরা উদ্বাস্তুদের বিনা শর্তে দলিল দিয়েছি।’
বনগাঁর মানুষদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘টাকার বদলে ভোট দেবেন না, টাকা ফুরিয়ে যায়, ঠিকানা হারিয়ে গেলে কেউ ঠিকানা দিতে আসে না।’


এই বনগাঁতেই ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে সিএএ-র সমর্থনে মিছিল ও সভা করেছে বিজেপি। মুকুল রায়ের নেতৃত্বে সোমবার সংশোধিত নাগিরকত্ব আইনের প্রচার সেরেছে গেরুয়া শিবির। মুকুল রায় সোমবার বলেছিলেন, ‘নাগরিকত্ব বিষয়টি পুরোপুরি কেন্দ্রের বিষয়। রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই। কারও নাগরিকত্ব কাড়া হচ্ছে না। এই আইনে বরং অতিরিক্ত কিছু মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সিএএ এবং এনপিআর হবেই। আসলে তিন তালাক, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ রুখতে পারেননি বলেই মমতা এখন সিএএ-র বিরোধিতার পথে নেমেছেন।’


যদিও এদিন বনগাঁ থেকে সেই অভিযোগ উড়িয়ে মানুষকে তিনি বোঝান কীভাবে মিথ্যের জাল বুঁনছে গেরুয়া শিবির।সতর্ক করেন সাধারণ মানুষকে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here