দেখুন ভিডিও:

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আমি আপনাদের রক্ষাকর্তা। রাজ্য সরকার আপনাদেরকে নাগরিকত্ব দিয়েছে। ফলে বিজেপি যতই চেষ্টা করুক এই রাজ্যে আমরা কিছুতেই এন আর সি, সি এ এ, এন পি আর চালু করতে দেবনা। বুক দিয়ে আগলে রাখব এই অপচেষ্টা। এই ঘোষণা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।মঙ্গলবার বনগাঁ স্টেডিয়াম এ জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে। সেই সভায় জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সুজিত বসু, তাপস রায়, ইন্দ্রনীল সেন, বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, জেলার নেতা রতন ঘোষ এবংএকাধিক বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, লোকসভার চেয়ারম্যান গোবিন্দ দাস, বনগাঁ পুরসভার প্রধান শঙ্কর আঢ্য,ছয়ঘরিয়ার প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ সহ অন্যান্য নেতারা।কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে মমতা বনগাঁয় আসেন। তাকে বরণ করে নেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, এনআরসির প্রথম ধাপ হলো এন পি আর। এর পাশাপাশি রয়েছে ক্যা। আমরা এই রাজ্যে কোনোভাবেই কেন্দ্র সরকারের এই অনৈতিক নিয়ম চালু করতে দেব না। আমরা আপনাদের রেশন কার্ড দিয়েছি। সেটাই আপনাদের নাগরিকত্বের বড় প্রমাণ।আপনারা শুধু দেখে নেবেন ভোটার তালিকায় আপনাদের নাম আছে কিনা। বিজেপিকে তুলোধোনা করে মমতা বলেন সারা বছর মানুষের পাশে থাকে না শুধু মিথ্যা কথা বলে আর ভোট এলেই নানান প্রতিশ্রুতি দেয়। আমরা এই ভোট রাজনীতি করিনা। আমরা সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। বুলবুলের মতন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও রাত জেগে পাহারা দিয়েছি মানুষের পাশে থেকে। বড়মার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের পরিচয়। তার কথায় মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি।আর ভোট পেতে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরনগরে এসে মতুয়া দরদী হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন। শুধু মিথ্যে কথা বলে বনগাঁ লোকসভা তারা জিতে যায়। এদিনের বনগাঁ স্টেডিয়াম এর জনসভা ছিল পরিপূর্ণ। মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল বেশ ভালো। ধামসা মাদল আদিবাসী নৃত্য সবই ছিল এই জনসভায়। বক্তব্য শেষে ইন্দ্রনীল সেনের গানের গলা মিলিয়ে কাঁসর বাজান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিন বনগাঁর জন সভায় তিনি আরও বলেন সহনশীলতার মাধ্যমেই মানুষের মন জয় করতে হবে। মানুষের কাছে গেলেই তাঁদের পাশে পাওয়া যাবে। মঙ্গলবার বনগাঁর জনসভায় এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী । নাম না করে এদিন মোদিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‌আমরা শুধু ভোটের সময় নিজেদের চৌকিদার বলি না। সব সময় পাশে থাকি। আমি অ্যাকশন নেওয়া ছাড়া কথা বলি না।’‌সিএএ, এনআরসি বা এনপিআর তিনি বেঁচে থাকাকালীন কিছুতেই রাজ্যে হতে দেবেন না বলেও এদিন ফের স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির বিরুদ্ধে মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ এনে তাঁর মন্তব্য, ‘মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বিজেপি। আমরা উদ্বাস্তুদের জন্য নিঃশর্তে দলিলের ব্যবস্থা করেছি।হিন্দু, মুসলিম, মতুয়া, নমঃশূদ্র, সবাইকে সাহায্য করেছি।’‌ শাহিনবাগ, জেএমআইইউ–তে গুলি চালানোর ঘটনার জন্যও এদিন বিজেপির কড়া সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শেষে বনগাঁ থেকে হেলিকপ্টারে তিনি রানাঘাটের জনসভার উদ্যেশ্যে রওনা হন।রানাঘাট এর জন সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন “ভাত চাই, সিএএ–এনআরসি চাই না’‌, এই স্লোগানে আন্তর্জাতিক নারী দিবস আট মার্চ তৃণমূলের মহিলা সমিতির সদস্যরা মাথায় ভাতের হাঁড়ি নিয়ে মিছিল করবেন। মঙ্গলবার রাণাঘাটে সিএএ–বিরোধী জনসভায় এই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এনআরসি, এনপিআর, সিএএ রাজ্যে তিনি কখনও করতে দেবেন না বলে ফের স্পষ্ট করে জানিয়ে মমতা বললেন, ‘আমি আন্দোলন থেকে জন্মেছি, আন্দোলনেই মৃত্যু হবে। তাই কিছুতে ভয় পাইনা। ‌এক ইঞ্চি জমি বিনা যুদ্ধে দেব না।’‌ এই সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর নিজের মুখে বলা কথা ছাড়া কেউ তাঁর ছবি দেখিয়েও কিছু জানতে চাইলে তা বিশ্বাস না করতে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।দিন কয়েক আগে কর্নাটকে অনুপ্রবেশকারী অভিযোগে, মালদার কয়েকজন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে কর্নাটক পুলিস। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মমতার অভিযোগ, ‘‌দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, কর্নাটকে যাওয়া বাঙালিদের অনুপ্রবেশকারী নাম দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ‌এটা বাংলার অপমান।’‌এনআরসি আতঙ্কে রাজ্যে ৩০ জন এবং অসমে ১০০ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‌বিজেপি নানাভাবে ভয় দেখাচ্ছে। কুৎসা করছে। আর ‌‌সিপিএম–কংগ্রেস ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে।’‌মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‌এবার বিজেপি বলছে তাবিজ দেবে। সেই তাবিজ গলায় ঝুলিয়ে প্রমাণ দিতে হবে নাগরিকত্বের।১৩০ কোটির দেশে যদি শরণার্থী বলে মাত্র ৩০০০০–কে নাগরিকত্ব দেওয়া হয় তাহলে তারাই কি বিজেপির কাছে ‘‌এ–গ্রেডের নাগরিক আর বাকিরা ‌বি–গ্রেডের নাগরিক।
নদিয়ায় গত লোকসভায় ভালো ফল করেছে বিজেপি। সেকথা উল্লেখ করে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘যাঁরা এখান থেকে জিতে গিয়ে বিজেপির হাত শক্তিশালী করেছেন তাঁদের লক্ষ্য রাখুন।’‌
এর আগে বনগাঁর জনসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বিজেপি।আমরা উদ্বাস্তুদের জন্য নিঃশর্তে দলিলের ব্যবস্থা করেছি। হিন্দু, মুসলিম, মতুয়া, নমঃশূদ্র, সবাইকে সাহায্য করেছি। সহনশীলতার মাধ্যমেই মানুষের মন জয় করতে হবে। মানুষের কাছে গেলেই তাঁদের পাশে পাওয়া যাবে।’‌ নাম না করে এদিন মোদিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‌আমরা শুধু ভোটের সময় নিজেদের চৌকিদার বলি না। সব সময় পাশে থাকি। আমি অ্যাকশন নেওয়া ছাড়া কথা বলি না।’‌বনগাঁ এবং রাণাঘাট, দুজায়গার জনসভাতেই শাহিনবাগ, জেএমআইইউ–তে গুলি চালানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যোগী আদিত্যনাথ, অনুরাগ ঠাকুর, পরবেশ ভার্মার প্রতিবাদীদের গুলি করে মারার হুমকির কড়া সমালোচনা করেছেন। তাঁর প্রশ্ন, বিজেপিশাসিত উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির সরকাররা যখন সেখানে সিএএ, এনআরসি লাগু হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন তখন কেন সারা দেশে তা লাগু করতে চাইছে কেন্দ্র।‌‌বনগাঁ স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় ছবিগুলি তুলেছেন – পার্থ সারথি নন্দী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here