দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ বিশ্ব জুড়ে দাপট দেখাচ্ছে করোনাভাইরাস। এরই মধ্যে আসছে গ্রীষ্ম। পারদ উঠছে দেশের সর্বত্র। একটি মহল থেকে শোনা গিয়েছিল, গরম পড়লে করোনাভাইরাসের দাপট কমবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমা বা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্পর্ক নেই। তাঁদের বক্তব্য, কোভিড-১৯ রোগটি ছড়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ছোঁয়াছুঁয়ির মাধ্যমে। তার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বড় আকারের জনসমাবেশ এড়িয়ে চলা উচিত। সেই সঙ্গে ঘন ঘন হাত ধুতে হবে।

ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই। বিশ্ব জুড়ে ওই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লক্ষ। মোট ১০০ টি দেশে ছড়িয়েছে ওই ভাইরাস। মারা গিয়েছেন ৩৮০০ জন। এইমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকলে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ে। কিন্তু তাপমাত্রা বাড়লেই করোনাভাইরাস মারা পড়বে, এমনটা ভাবা ঠিক নয়। সিঙ্গাপুরের মতো নিরক্ষীয় দেশে তাপমাত্রা বেশি। বাতাসেও যথেষ্ট পরিমাণে আর্দ্রতা রয়েছে। সেখানে করোনাভাইরাসে অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন।

দিল্লিতে গত কয়েকদিনে গরম আচমকা কমেছে। গত তিন-চারদিনে সেখানে তাপমাত্রা রয়েছে ১১-১২ ডিগ্রি। দিল্লি সরকারের হেলথ সার্ভিসেসের ডিরেক্টর জেনারেল নূতন মুন্দেজা বলেন, তাপমাত্রার হ্রাসবৃদ্ধির সঙ্গে করোনাভাইরাসের প্রকোপের কোনও সম্পর্ক আছে বলে এখনও প্রমাণিত হয়নি।
ম্যাক্স হেলথকেয়ারের মেডিক্যাল ডিরেক্টর সন্দীপ বুধিরাজা বলেন, কোভিড-১৯ রোগটি নতুন। বিজ্ঞানীরা এখনও এসম্পর্কে বেশি কিছু জানেন না। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আগে দেখা গিয়েছে, ফ্লু ভাইরাস মূলত শুকনো ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় বৃদ্ধি পায়। গরমের মধ্যে তাদের বৃদ্ধি হয় না। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রায় এই ভাইরাসের বৃদ্ধি কমে যায়। কিন্তু করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে কী হয় এখনই বলা যাচ্ছে না।”

ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসের জেরে বিরাট ধস নেমেছে স্টক মার্কেটে। গত চার বছরে কখনও এতটা পড়েনি বাজার। বিশ্বজুড়ে ৬.৮৪ লক্ষ কোটি টাকা খুইয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ২০১৫ সালের অগস্ট মাসের পর ফের এত বড় ধস নামল স্টক মার্কেটে।
সোমবার স্টক মার্কেট সূচক নেমেছে ৫ শতাংশ। অপরিশোধিত তেলের দামও কমেছে। সেনসেক্স পড়েছে ২৪৬৭ পয়েন্ট। দিনের শেষ তা দাঁড়িয়ে আছে ৩৫,৬৩৫ এর ঘরে। অন্যদিকে নিফটি পড়েছে ৬৯৫ পয়েন্ট। তা এখন দাঁড়িয়ে আছে ১০,৩০০ এর ঘরে। সেনসেক্সের পতনের হার ৫.১ শতাংশ। অন্যদিকে নিফটির পতনের হার ৪.৯ শতাংশ।

নিফটিতে নথিভুক্ত ৫০ টি সংস্থার মধ্যে ৪৬ টির শেয়ারেরই দাম কমেছে। শতাংশের বিচারে যে সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম সবচেয়ে বেশি কমেছে, তার মধ্যে আছে ওএনজিসি, বেদান্ত, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, জি এন্টারটেনমেন্ট, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক এবং টাটা স্টিল। তাদের শেয়ারের দাম ৫.৯৬ থেকে ১০.৬২ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। অন্যদিকে সেনসেক্সে নথিভুক্ত শেয়ারগুলির মধ্যে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক ও ইনফোসিসের শেয়ারের দর কমেছে সবচেয়ে বেশি।
এই মুহূর্তে সৌদি আরবের তেলের বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৩১.৫ শতাংশ হারে ১৪.২৫ ডলার কমেছে। এই মুহূর্তে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ৩১.০২ ডলার। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি উপসাগরীয় যুদ্ধের পর এত বেশি পরিমাণে তেলের দাম কখনও কমেনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here