দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ বিহার বিধানসভা নির্বাচনে জেডিইউ-এর আসন কমলেও নিজেদের বিধায়ক বাড়িয়েছে বিজেপি শিবির। আর এই পুরো কৃতীত্বটাই যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর পকেটে। বলা হচ্ছে ‘ব্র্যান্ড মোদী ‘তে ভর করেই বিহারে ফের সরকার গড়ার সুযোগ পেয়েছে এনডিএ শিবির। এবার তাই দলের সেরা অস্ত্রটিকে বাংলা বিজয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।

একুশ-এর বিধানসভা ভোটের দিকে লক্ষ্য স্থির রেখে বিজেপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমন  হচ্ছে বাংলায়। ইতিমধ্যে দক্ষিণবঙ্গ সফর করেছেন অমিত শাহ। তবে শোনা যাচ্ছে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের মিসাইল সামলাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই। 

ভোট প্রচারের ক্ষেত্রে তিনিই যে প্রধান ‘মুখ’ সেকথা বহুদিন আগেই  ঠিক করে রেখেছে বিজেপি । এখন শুধুমাত্র মোদীর কর্মসূচি চূড়ান্ত করার পালা। এর আগে লোকসভা ভোটের প্রচারে একাধিকবার বাংলায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তার ফলস্বরূপ গত লোকসভা নির্বাচনে অভাবনীয় রেজাল্ট হয়েছিল গেরুয়া শিবিরের। বাংলা থেকে ১৮ টি লোকসভা আসনে যেতে বিজেপি।

বিজেপি সূত্রে খবর, এবার বাংলায় প্রায় এক ডজন নির্বাচনী জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, সেই সমস্ত জনসভা হবে রাজ্যে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পরেই। ভোটের দিন ঘোষণার পরে জনসভা শুরু হলেও বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর প্রচার অবশ্য তার অনেক আগেই শুরু হয়ে যাচ্ছে বলে খবর।

সূত্রের খবর একুশের বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে ডিসেম্বরের শুরুতেই  রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে রাজ্যে আসছেন মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও।

জানা যাচ্ছে ১ থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে কোনও একটি দিন প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে আসবেন। তবে এখনও তারিখ সুনির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি বিজেপির পক্ষ থেকে। সূত্রের খবর রাজ্যের দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই সফর। আর মোদীর এই  সফর থেকেই রাজ্যের বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা ময়দানে নেমে পড়বেন।

শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নন, রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডাও। একুশের ভোটকে টার্গেট করে রাজ্যে প্রতিমাসেই আসার পরিকল্পনা নিয়েছেন বিজেপির চাণক্য অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডা। কোনও ভাবেই তাঁরা বাংলার ময়দান এখন ছাড়তে চাইছেন না। এরাজ্যে ভোট পরিচালনার দায়িত্বেও দিল্লির নেতাদেরই রাখছেন অমিত শাহ।

শোনা যাচ্ছে মোদী তো থাকবেনই সঙ্গে দলের তারকা প্রচারকদেরও বাংলায় ভোট প্রচারে নামানো হবে বলে ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের ‘ফায়ার ব্র্যান্ড’ নেতা ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে বাংলার নির্বাচনে প্রচারের কাজে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হবে। মোদীর পরেই তিনিই সবথেকে বেশি সংখ্যক জনসভা করবেন।

পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির মতো তুখোড় বক্তাদের বেশি করে ব্যবহার করা হবে। একদিকে যেমন তুখোড় রাজনৈতিক বক্তাদের বাংলার ময়দানে নামানো হবে, অন্যদিকে আবার হেমা মালিনী, জয়াপ্রদা, রবি কিষেণ, মনোজ তিওয়ারির মতো ফিল্মি দুনিয়া থেকে রাজনীতির ময়দানে আসা তারকাদেরও বাংলায় ভোট প্রচারে ব্যবহার করা হবে। ঠিক হয়েছে যে একঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও রাজ্যে জনসভা করবেন। 

শোনা যাচ্ছে আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে বাংলায় প্রচারের কাজ শুরু করে দেবে বিজেপি। দলীয় কর্মসূচি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প উদ্বোধনের মতো অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মোদী কখনও ভারচুয়াল মাধ্যমে, কখনও বা সশরীরে হাজির থাকবেন পশ্চিমবঙ্গে। 

এদিকে একুশের ভোটের আগে প্রথম রাজ্য সফরে এসেই দলীয় কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের বার্তা দিয়েছিলেন অমিত শাহ। ২৩ দফা কর্মসূচি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলের প্রচারে জোর দিয়েছিলেন অমিত শাহ। সেই নির্দেশ মেনেই এবার তৃণমূলের দুয়ারে দুয়ারে কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে পথে নামছেন বিজেপির যুব মোর্চার নেতা-কর্মীরা। বিজেপি সূত্রের খবর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ২ লক্ষ যুব কর্মী মোদী সরকারের উন্নয়নের প্রচার করবেন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here