দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: আমপানে বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে রাজ্যে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা একই হেলিকপ্টারে দুই ২৪ পরগনার বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। সেই হেলিকপ্টারে রয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। আরও একটি হেলিকপ্টারে রয়েছেন এই রাজ্য থেকে নির্বাচিত দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরী। জানা গিয়েছে, পরিদর্শন শেষ বসিরহাটে বৈঠক করবেন মোদী ও মমতা।

ঘূর্ণঝড় আমপানের দাপটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। একই অবস্থা ওড়িশারও। তবে বাংলার ক্ষতি তুলনায় বেশি। মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৭২ জনের। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পরিদর্শনে এলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন যা ঠিক রয়েছে আকাশ পথে উত্তর ও দক্ষিম ২৪ পরগনার বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে করবেন বৈঠক। সেই বৈঠক হবে বসিরহাটে। সেখানে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সেখানে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী ওড়িশার উদ্দেশে রওনা দেবেন।

দীর্ঘ ৮৩ দিন পরে দিল্লির বাইরে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শেষবার তিনি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ ও চিত্রকূটে গিয়েছিল ২৯ ফেব্রুয়ারি।

বুধবার পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে বয়ে যায় বিধ্বংসী ঘুর্ণিঝড় আমপান। ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও কলকাতা। এযাবৎ নথিভুক্ত বঙ্গোপসাগরের সাইক্লোনগুলির মধ্যে উমফান ছিল সবচেয়ে সাংঘাতিক। কলকাতার ওপর দিয়ে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঝড় বয়ে যায়। ব্যাপক ক্ষতি হয় কলকাতারও বহু গাছ উপড়ে যায়। অনেক বাড়ির ক্ষতি হয়।

প্রধানমন্ত্রী ওই দিনই টুইট করে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের অনেক ছবি দেখলাম। সাইক্লোন উমফান ভয়ংকর ক্ষতি করেছে। এখন খুব কঠিন সময়। সারা দেশ বাংলাকে সংহতি জানাচ্ছে। ওই রাজ্যের মানুষের কল্যাণের জন্য প্রার্থনা করছি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি যাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে।”এরপরেই এদিন প্রধানমন্ত্রী নিজে এলেন পরিস্থিতি দেখতে।

এক নজরে মোদীর সফর:

প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। 

• বসিরহাট কলেজের মাঠে নামল প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার।

• বসিরহাটে মোদীর কপ্টার।

• রাজারহাট, গোসাবা, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি এবং হিঙ্গলগঞ্জ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন মোদীর।

• রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপির নেতা-নেত্রীরা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, ১৭৩৭ সালের পর এমন দুর্যোগ আর হয়নি। আমপানের তাণ্ডবে রাজ্যে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কলকাতায় ১৯ জন এবং বিভিন্ন জেলায় ৬১ জন মারা গিয়েছেন। এ ছাড়া, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা-সহ রাজ্যের অন্তত ১৩টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাত-আটটি জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবং আরও চার-পাঁচটি জেলা বিপর্যস্ত।

এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনায় প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর দুপুর ১টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর দুপুর দেড়টা নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কথা তাঁর। সেখান থেকে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের দিকে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

আমপানে বিধ্বস্ত রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে এমনিতেই আর্থিক সঙ্কট চলছে রাজ্যে। এই আবহে আমপানের জেরে ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইবে মমতা সরকার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here