দেশের সময় : করোনা মহামারীর সময় বিধ্বস্ত জন্মভূমি গোবরডাঙার পাশে দাঁড়ালেন এক প্রবাসী যুবক। চারটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন তিনি।
কাজের প্রয়োজনে ২০১১ সালে তুরস্ক পাড়ি দিয়েছিলেন গোবরডাঙার চ্যাটার্জিপাড়ার একসময়কার বাসিন্দা রোমিও নাথ। সেখানে তিনি গড়ে তোলেন যোগার স্কুল। এখন সেটি যোগা স্টুডিওতে পরিনত হয়েছে। তুরস্কের ইস্তানবুলের অন্যতম নামী যোগার প্রশিক্ষক এখন রোমিও। স্থানীয় তরুণী এব্রু অজদেমির-কে বিয়ে করে দু’জনে মিলে যোগার স্টুডিয়ো চালান।

রোমিও-র মা-বাবা-ভাই গোবরডাঙাতেই থাকেন। তাঁদের কাছ থেকেই জানতে পারেন, করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এই কারণে এলাকায় অক্সিজেনের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় অক্সিজেনের জোগান কম। এই পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষের প্রয়োজনে চারটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কিনে ইস্তানবুল থেকে তা গোবরডাঙায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তাঁর পরিবারের পক্ষে রোমিওর ভাই সন্দীপ নাথ গোবরডাঙা পুরসভার প্রশাসক সুভাষ দত্তের হাতে সেগুলো তুলে দেন।


এব্যাপারে সন্দীপ নাথ দেশের সময় কে জানান, ‘করোনার অতিমারীর কারণে গোবরডাঙায় অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আমাদের মতো এলাকার অনেক মানুষই ভুক্তভোগী। বিষয়টি জেনে দাদা গোবরডাঙার মানুষের জন্য এই পদক্ষেপ করেছে। দাদার বেশ কয়েক জন বন্ধু, আমরা সবাই মিলে গোবরডাঙা জুড়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়ছি। আক্রান্তদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি।’

ইস্তানবুল থেকে রোমিওর প্রতিক্রিয়া, ‘আমার জন্মভূমি গোবরডাঙা আমাকে জীবনে বাঁচতে শিখিয়েছে। সেই জন্মভূমির দুঃসময়ে আমি পাশে থাকতে পেরে আমি খুশি। আমার পরিবারের পাশাপাশি এলাকার সব স্তরের মানুষের কথা ভেবেই আমার এই সামান্য উদ্যোগ।’


অক্সিজেন কনসেনট্রেটর খুশি পুরপ্রশাসক সুভাষ দত্ত জানান, ‘পুরসভার চালু করা ২৪ ঘণ্টার অক্সিজেন পার্লারে এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটরগুলি রাখা থাকবে। সেখান থেকে প্রয়োজন মতো একসঙ্গে চার জনকে অক্সিজেন দেওয়া যাবে। থাকছেন সর্বক্ষণের চিকিৎসক, নার্স।’


অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের পাশাপাশি রোমিও কয়েক লক্ষ টাকা নগদ পাঠিয়েছেন দেশে। সেই টাকায় চাল-ডাল-আলু-সয়াবিন-বিস্কুট কিনে দাঁড়ানো হচ্ছে কোভিড আক্রান্তদের পাশে। শুধু তাই নয়, কোভিড পরবর্তী সময়ে কোন কোন যোগব্যায়ামে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা যায়, নিজের স্টুডিয়োয় তোলা সেই সব ভিডিয়োর ইউটিউব লিঙ্কও পাঠাচ্ছেন, যাতে গোবরডাঙাবাসীর কাজে লাগে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here