দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গতকাল বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর গেরুয়া শিবিরের বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩-এ। আজ তা থেকে আরও এক দাগ নামল ।

মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের উপস্থিতি দলীয় পতাকা হাতে তুলে নেন তিনি। বিজেপি বিধায়কের সঙ্গেই যোগ দেন কাউন্সিলর মনোতোষ দাস ও কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত পাল। ঘাসফুলের পতাকা হাতে নিয়ে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘বহিরাগতদের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হয় না। বিজেপি-তে কাজ করার কোনও পরিবেশ নেই। ভুল বোঝাবুঝির জন্য দল ছেড়েছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সামিল হতেই তৃণমূলে ফিরলাম।’

একুশের ভোটে ৭৭টি আসন জিতেছিল বিজেপি। তারপর নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা সাংসদ পদে থেকে যাবেন। দিনহাটা ও শান্তিপুরের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন তাঁরা। ফলে বিজেপির সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭৫।
এরপর গত ১১ জুন তৃণমূলে ফিরে আসেন মুকুল রায়। এবার মুকুলবাবু কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন। মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৪-এ। গত কাল অর্থাৎ সোমবার তন্ময় ঘোষের যোগদানের পর সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৭৩।

এদিন মঙ্গলবার বিশ্বজিত্‍ দাস পদ্ম ছেড়ে জোড়া ফুলে এলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা নেমে দাঁড়াল ৭২-এ।

বিশ্বজিৎ দাস ২০১৬ ভোটে তৃণমূলের টিকিটেই জিতেছিলেন। তারপর উনিশের লোকসভার পর গেরুয়া হাওয়ায় গা ভাসিয়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। একুশের ভোটের কয়েক মাস আগেও তাকে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়।

একদিন বিধানসভার করিডোরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে পেয়েই প্রণাম করেন বাগদার বিধায়ক। দিদি তাঁর উদ্দেশে বলেন, কী রে! ডিসিশন নিলি? বিশ্বজিতের সঙ্গে সেদিন ছিলেন নোয়াপাড়ার তৎকালীন বিধায়ক সুনীল সিংও। তারপর মমতার ঘরে দীর্ঘক্ষণ বৈঠকও করেছিলেন বিশ্বজিৎরা।

তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সদস্য ছিলেন বিশ্বজিৎ। ২০১১ এবং ২০১৬ বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে জেতেন বিশ্বজিৎ। গত বছর লোকসভা ভোটের আগে দিল্লিতে গিয়ে বিশ্বজিৎ বিজেপিতে যোগদান করেন। জল অনেক অনেক দূর গড়িয়েছে। কিন্তু কোনও পক্ষই সম্পর্ক তিক্ত হতে দেয়নি। বরং শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বিশ্বজিতের দূরত্ব বজায় থেকেছে প্রথম থেকে। সেই দূরত্বই চিরবিচ্ছেদ রচিত হল আজ।

প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটে জিতলেও বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন বিশ্বজিৎ। দলের বৈঠকে যাচ্ছিলেন না। ওদিকে সত্যেন রায়ও বিপ্লব মিত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছিলেন। এদিন এই দু’জনই যোগ দিলেন শাসকদলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here