দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভোট হয়ে গিয়েছে। মোদী ফের প্রধানমন্ত্রী। অভিষেকও পুনরায় সেই ডায়মন্ড হারবার থেকেই নির্বাচিত সাংসদ। বহিরঙ্গে বিরোধ এখনও যা-ই থাকুক, দরজা বন্ধ ঘরে পারস্পরিক সৌজন্যের স্রোত বয়ে গেল বুধবার।

এ দিন সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কক্ষে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূল সাংসদরা। দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, সৌগত রায়দের সঙ্গে অভিষেকও ছিলেন প্রতিনিধি দলে।

সাধারণত এ রকম প্রতিনিধি দল দেখা করতে গেলে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কনফারেন্স রুমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন মোদী। সে ঘরে মস্ত একটি ওভাল টেবিলের চার দিকে সার দিয়ে চেয়ার।

তৃণমূলের এক সাংসদ জানান, ওই ঘরে ঢুকে তৃণমূলের সাংসদরা সবাই টেবিলের এক দিকেই বসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ঘরে ঢুকে তাঁদের উদ্দেশে নমস্কার করে হেসে বলেন, “এ কী, আপনারা সবাই আমার উল্টো দিকে কেন? আমার পাশে এসেও কয়েক জন বসুন। ভয় নেই, দিদি বকবেন না, কারও চাকরি যাবে না!”

বৈঠকের পরিবেশ এটুকুতেই অনেকটা সহজ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই ডেরেক উঠে প্রধানমন্ত্রীর ডান পাশে গিয়ে বসেন। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বসেন মোদীর বাঁ দিকে। সুদীপের পাশে বসেন সৌগত রায় এবং তাঁর পাশে অভিষেক। তবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুখেন্দুশেখর রায় প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখিই বসেছিলেন। আড্ডার মেজাজে এক বার কল্যাণকে প্রধানমন্ত্রী এ-ও বলেন, “কী আজকাল তো আপনার গলা বিশেষ পাচ্ছি না!”

লোকসভায় বিতর্কের সময় বা স্লোগান তোলায় প্রবল চিৎকারের জন্য কল্যাণের পরিচিতি রয়েছে। এক বার তা নিয়ে অধিবেশনের মধ্যেই তাঁকে খোঁচাও দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

এ দিনের বৈঠক যখন শেষের দিকে, তখন আলাদা করে অভিষেকের কুশল জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে বলেন, “কী আপনার চোখ এখন কেমন আছে?” জবাবে অভিষেক বলেন, “আগের থেকে অনেকটা ভাল। দু’বার অপারেশন করতে হয়েছে। আরও এক বার করতে হতে পারে।” প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাছে জানতে চান, কোথায় চিকিৎসা করাচ্ছেন তিনি। অভিষেক জানান, হায়দরাবাদে চিকিৎসা হচ্ছে।

২০১৬ সালের অক্টোবরে মুর্শিদাবাদে দলের কর্মিসভা সেরে ফেরার সময়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন অভিষেক। তাঁর চোখে সব থেকে বেশি আঘাত লাগে। প্রথমে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হয়। পরে হায়দরাবাদের এক হাসপাতালে অপারেশন হয় তাঁর চোখে। চোখে রোদ-ধুলো যাতে বেশি না লাগে সে জন্য ডাক্তাররা অভিষেককে এখনও সতর্ক থাকতে বলেছেন।

তৃণমূলের এক সাংসদের কথায়, প্রধানমন্ত্রী এ দিন যে সৌজন্য দেখিয়েছেন, ততটা আমরা অনেকেই আশা করিনি। তবে আমাদের দিক থেকে একটা ত্রুটি বোধ হয় রয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী পদে পুননির্বাচিত হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই জন্য শুরুতে তাঁকে অভিনন্দন জানানো উচিত ছিল।

উল্লেখ্য,লোকসভা ভোটের সে দিনই শেষ প্রচার। ডায়মন্ডহারবারের সভা মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, খুব শিগগির তালা লাগবে ‘ভাইপো’-র অফিসে। মোদীকে পাল্টা আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here