দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনাভাইরাসের প্রকোপে চিনে আরও কত মৃত্যু বাড়ছে, তা নিয়ে আমরা ততটা আতঙ্কিত নই। কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি আতঙ্কিত, চিনের বাইরে কত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই মারণ ভাইরাসের আক্রমণ।– দিন কয়েক আগে এমনই মন্তব্য করেছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর ডিরেক্টর টেড্রোস অ্যাডানোম গেব্রিয়েসাস। তাঁর সেই আতঙ্ক অক্ষরে অক্ষরে সত্যি করে ভয়ানক সংক্রমণের দিকে এগোতে শুরু করেছে করোনাভাইরাস। হু জানিয়েছে, চিনের বাইরে ১৭ গুণ বেশি দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস!

চিনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছেন অন্তত ১১ জন। এর পরে এশিয়া পেরিয়ে ইউরোপে আগেই পৌঁছে গেছিল এই ভাইরাসের আতঙ্ক। আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে, তথ্য বলছে, চিনের পরেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার বিচারে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ইরান। দেড়শোরও বেশি মানুষ মারা গেছেন সেখানে। তার পরেই রয়েছে ইউরোপের ইতালি। সেখানে মারা গিয়েছেন ১৪৩ জন। জাপানেও এই দাপট বাড়তে শুরু করেছে বলে খবর। সবমিলিয়ে গোটা বিশ্বজুড়ে ছড়াচ্ছে আতঙ্ক। বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে অসুখ।

হু বলছে, এ নিয়ে আতঙ্কের আরও বড় একটা কারণ হল, চিন এই দু’মাসে এই রোগের সঙ্গে লড়াই করার জন্য যত দ্রুত প্রস্তুত হতে পেরেছে, অন্য দেশগুলির পক্ষে তা বেশ কঠিন। তার উপর এই ভাইরাস একবার কোনও নতুন জায়গায় গিয়ে থাবা বসালে, সে জায়গাকে সুরক্ষিত রাখা কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। সেইসঙ্গে যত দিন যাচ্ছে, ভাইরাসটির প্রকৃতিও তত দ্রুত বদলাচ্ছে। কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাপদ্ধতি।


করোনাভাইরাসের সংক্রমণে হওয়া কোভিড ১৯ অসুখের মূল লক্ষণ হল জ্বর, সর্দি, হাঁচি ও শ্বাসকষ্ট। সেই সঙ্গে ডাইরিয়ার উপসর্গও দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত হলে সেই ভাইরাসকে প্রতিহত করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে মানবশরীরে। ফলে একের পর এক মৃত্যু ঘটছে। ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে চিনের উহান শহরে শুরু হওয়া এই ভাইরাসের সংক্রমণে চিনে মৃত্যু হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি মানুষের।
এখন চিনের বাইরে ১৭ গুণ বেশি দ্রুত এগোচ্ছে করোনা! হু বলছে, এই মুহূর্তে তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রথমত, সব দেশকে নিজের স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বয়স্ক ও অন্য রোগে ভুগছেন, এমন ব্যক্তিদের এই মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য তাঁর আশবপাশের কমিউনিটিকে সচেতন করতে হবে। তৃতীয়ত, ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে রক্ষার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। তাঁর কথায়, “এখন আর এই অসুখের ভয় চিনের একার নয়, ভয় সকলের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। সকলে মিলেই এর মোকাবিলা করতে হবে।”

এই আতঙ্ক থেকে আর পিছিয়ে নেই ভারতও। দেশে এখনও পর্যন্ত ৩০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাঁদের মধ্যে আছেন ১৬ জন ইতালীয় পর্যটক। দিল্লিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইতিমধ্যেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুলগুলি। সরকারি ভাবে জারি করা হয়েছে নানা সাবধানতা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here