দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ আরিয়ান খানের ফোনে মাদকযোগের ‘প্রামাণ্য নথি’ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করল এনসিবি। শাহরুখ-পুত্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদক-চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন এনসিবি আধিকারিকরা। যে কারণে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত আরিয়ানকে নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন করল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)।

প্রমোদতরীতে বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে মৌজ করে মাদক সেবন করছিলেন এ কথা নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন বলি-বাদশা শাহরুখ-পুত্র আরিয়ান খান । তার লেন্সের বক্সে ঠাসা ছিল মাদক। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) অফিসারদের হাতে এসেছে আরিয়ানের সেই লেন্স বক্স। অফিসাররা বলছেন, মাদক লুকনোর আরও অনেক ফন্দি বের করেছিল সুপারস্টার-তনয়। তাঁর বান্ধবীবের স্যানিটারি প্যাড, ওষুধের বাক্সেও মাদক পাওয়া গেছে।

এনসিবি-র তদন্তকারীরা বলছেন, নিজের লেন্সের বক্সে মাদক রাখত আরিয়ান। জেরায় এ কথা নিজেই স্বীকার করেছে। অনুমান বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি বা বিলাসবহুল ট্রিপে যাওয়ার সময় এই লেন্সের বক্স সবসময় থাকত তাঁর কাছে। আরিয়ানের মতো তরুণদের মাদক সেবনের প্রতি আসক্তি দেখে হতবাক নারকোটিক্সের অফিসাররা। তাঁরা জানিয়েছেন, মাদক লুকিয়ে নিয়ে যাওয়ার নানা কৌশল আয়ত্ত করেছিল এই তরুণ-তরুণীরা। কখনও লেন্স বা চশমার বাক্স, ওষুধের বাক্স এমনকি মহিলাদের স্যানিটারি প্যাডের মধ্যে থেকেও মাদক পাওয়া গেছে। নিজেদের অন্তর্বাসের সেলাইয়ের মধ্যে মাদক লুকিয়ে নিয়ে যেত বলেও প্রমাণ মিলেছে।

মাদকে কেনাবেচা যে চলত তা শাহরুখ-পুত্রের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকেও স্পষ্ট। বন্ধুদের সঙ্গে তার গ্রুপ চ্যাটে বহুবার মাদকের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তদন্তকারীরা বলছেন, আরিয়ান ও তার বন্ধুদের কাছ থেকে ১৩ গ্রাম কোকেন, ২১ গ্রাম চরস, ২২টি পিল (এমডিএমএ) ও ৫ গ্রাম এমডি ও নগদ ১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এত মাদক কীভাবে ও কোথা থেকে এল তার তদন্ত করছে এনসিবি।

মাদক পাচার ও মাদকের কারবারিদের খোঁজে মুম্বই জুড়েই তল্লাশি চলছে। বলিউডের একাধিক তারকা, প্রযোজক, পরিচালকের নাম জড়িয়েছে মাদক-কাণ্ডে। সেই তালিকায় এবার উঠে এসেছে শাহরুখ-পুত্রের নামও। গোয়াগামী প্রমোদতরীতে তল্লাশি চালিয়ে রবিবারই আট জনকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি।

তাদের মধ্যে রয়েছে আরিয়ান খানও। ১৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস আইনের আওতায় গ্রেফতার করা হয়েছে  আরিয়ান ও তার দুই বন্ধু মুনমুন ধমেচা এবং আরবাজ শেঠ মার্চেন্টকে।

শনিবার রাতে আটক হয়েছিলেন শাহরুখ-পুত্র। রবিবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার আদালতে গিয়ে হেফাজতের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানাল এনসিবি।

আরিয়ানকে সোমবার বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার পরেই তাঁর হয়ে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডে। শাহরুখ তাঁর ছেলের জন্য সতীশকে নিয়োগ করেছিলেন।

পর্যন্ত এই তিনজনেই এনসিবি হেফাজতে থাকবে। আরিয়ানকে নিষিদ্ধ মাদক রোধ আইনের ৮ (সি), ২০ (বি), ২৭ ও ৩৫ ধারা প্রয়োগ করেছে এনসিবি।

নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস’ (এনডিপিএস)-আইনের আওতায় গ্রেফতার হন আরিয়ান-সহ মুনমুন এবং আরবাজ। আরিয়ানের গ্রেফতারি পরোয়ানায় লেখা রয়েছে, তাঁর কাছ থেকে ১৩ গ্রাম কোকেন, ২১ গ্রাম চরস, ২২টি এমডিএমএ বড়ি এবং নগদ ১,৩৩,০০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে।

গ্রেফতারের পর বলা হয়েছিল, এক দিনের জন্য আরিয়ানকে এনসিবি-র হেফাজতে রাখা হবে। কিন্তু সোমবার সকালে জানা যায়, আদালতের কাছে শাহরুখ-পুত্রকে আরও কয়েক দিন হেফাজতে রাখার অনুমতি চাইতে পারে এনসিবি। কারণ হিসেবে বলা হয়, মুম্বইয়ের মাদকযোগের তদন্তে আরও কিছু তথ্যের জন্য আরিয়ানকে আরও কিছু দিন নিজেদের হেফাজতে রাখতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here