শারদোৎসব এর রেশ ধরে রাখতে, লক্ষ্মীপুজোর প্রস্তুতি শুরু করেছে বাঙালি। ফল, সবজি কিনতে ব্যাগ হাতে বাজারমুখী। উৎসবের মরশুমে চাহিদা বেশি থাকায় এমনিতেই বাজারে সব কিছুর দাম অনেকটাই বেশি। তার মাঝেই সাধ্যমতো চলছে কেনাকাটা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দোকানে এসে গেছে প্রতিমা। প্যাকেটবন্দি নাড়ু, মোয়া বিক্রি শুরু হয়েছে। লক্ষ্মীপুজোর ফল–সবজির দাম আকাশছোঁয়া। তবে পদ্ম ছাড়া অন্যান্য ফুলের দাম হাতের নাগালে। গত বছরের তুলনায় এবছর ফুলের দাম কিন্তু অনেকটাই আয়ত্তে। ফুলের মধ্যে পুজোর প্রধান উপকরণ পদ্মের দাম কিছুটা বেশি। কিন্তু গাঁদা, দোপাটি, গোলাপের দাম দুর্গাপুজোর পর নতুন করে বাড়েনি। উওর ২৪পরগনার ঠাকুর নগর ফুলবাজারের ব্যবসায়ীদের কথায়, অন্য বছর পুজো হয় অনেক আগে। সেই সময় বৃষ্টির মরশুম থাকে। বৃষ্টিতে পচে গেলে ফুলের দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এবছর পুজো অক্টোবরে হওয়ায় বৃষ্টি হয়নি। ফুল পচে যায়নি। জোগান ঠিক রয়েছে। তাই দাম বাড়াতে হয়নি।

ফুল বাজারের ব্যাবসায়ী মণীন্দ্র বিশ্বাস জানালেন, ‘‌চাহিদার ওপর ফুলের দাম অনেকটাই নির্ভর করে। এখন ১টা পদ্মফুলের দাম ১o টাকা রয়েছে। পুজোর দিন কিছুটা বাড়বে। লাল গাঁদা ফুলের মালা ১৫-২০ টাকা, হলুদ গাঁদা ফুলের মালা ২০-২৫ টাকার কাছাকাছি থাকবে। খুচরো ফুল যেমন দোপাটি ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি।’‌ ফুল ব্যবসায়ী অরুপ গাইন জানালেন, ‘‌এখনও বেশ কিছু বাজারে গাঁদার মালা ১o টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য বছর এই দাম বেশি থাকে। খুচরো ফুল ২৫ টাকা।’‌ পুজোর অন্যতম অঙ্গ নারকোলের নাড়ু। নারকোল এখন ৫০ টাকার নিচে নেই বললেই চলে। আপেল থেকে শুরু করে সব ফলের দামই অনেকটা বেশি। পেয়ারা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। আপেল ১২০ থেকে ১৩০। শসা কোথাও ৫০, কোথাও ৬০ টাকা। পানিফল ৩০০ গ্রাম ১০ থেকে ১২ টাকা। খেজুর ১০০ টাকা কেজি। কিসমিস ১ কেজি ৩২ থেকে ৩৫ টাকা। মোসাম্বি লেবু ১৫ টাকা। কাঁঠালি কলা ৬টা ২০ থেকে ২২ টাকা। বনগাঁ আমলাপাড়ার বাসিন্দা অনামীকা ব্যানার্জী জানালেন, ‘লক্ষ্মীপুজোয় ভোগ দিয়ে আসছেন বরাবর। তাই প্রসাদে ফলের পাশাপাশি চাল, ডাল, সবজিও কিনতে হয়। গোবিন্দভোগ চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি। চন্দ্রমুখী আলু ২৫ টাকা, জ্যোতি আলু ২০ থেকে ২২ টাকা। সোনামুগ ডাল ১২০ টাকা কেজি, মুগ ডাল ৯০ টাকা। ফুলকপি জোড়া ৪০ টাকা। বাঁধাকপি একটা ২৫ টাকা। মুলো, বেগুন, ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।’‌
বিভিন্ন মাপের ,নানান রকম দামের প্রতিমাও এসে গেছে বিভিন্ন বাজারে। একদম ছোট প্রতিমা ১০০ টাকা থেকে শুরু। আড়াই থেকে তিন ফুটের প্রতিমার দাম ১২০০ থেকে ১৪০০। চার ফুট উচ্চতার প্রতিমার দাম ১৬০০ টাকা।

পাঁচ ফুটের দাম ২৫০০ টাকা। ৬০ থেকে ৭০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে মাটির সরা। তবে বাজার যেরকমই হোক, ধনদেবীর পুজোর আয়োজনে কমতি রাখতে দেবে না বাঙালি। ‌সরগরম লক্ষ্মীর বাজার ,কেনাকাটার ধুম লেগেছে,গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র৷ বাড়ি বাড়ি গৃহিণীরা ব্যস্ত পুজোর প্রস্তুতিতে৷

“কথিত আছে, ‘কে জাগো রে’ এই কথাটির সূত্র ধরে এই লক্ষ্মীপুজো কোজাগরী নামে খ্যাত। বর্তমান বছরে, ৬ কার্তিক, মঙ্গলবার ইং ২৩ অক্টোবর রাত ১০টা ৩৭ মিনিটের পর পূর্ণিমা শুরু হবে। পূর্ণিমার নিশিপালন। লক্ষ্মীপুজোর আরাধনার নিয়ম ও বিধি সবারই প্রায় জানা। বাঙালির প্রতি ঘরেই যে যেমন ভাবেই পারুক না কেন, মা লক্ষ্মীর পুজো করে থাকেন। লক্ষ্মীর আরাধনার আগে নারায়ণের আরাধনা করতে হবে।

এখন দেখে নেওয়া যাক বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত ও গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে কোজাগরী পূর্ণিমার নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি-

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে-

৭ কার্তিক (ভাঃ ২ কার্তিক), ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, বুধবার-

পূর্ণিমা রাত্রি ঘ ১০/১৫। শ্রীশ্রীসত্যনারায়ণ ব্রতম ও শ্রীশ্রীকোজাগরী লক্ষ্মীপূজা। রাত্রৌ কোজাগরী কৃত্যম্।

গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে-

৭ কার্তিক (ভাঃ ২ কার্তিক), ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, বুধবার-

পূর্ণিমা রাত্রি ঘ ১০/১৫। শ্রীশ্রীসত্যনারায়ণ ব্রতম ও শ্রীশ্রীকোজাগরী লক্ষ্মীপূজা। রাত্রৌ কোজাগরী কৃত্যম্।…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here