দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ টিভিতে দেখলেন, কাশ্মীরের পুলওয়ামার লেথপোরাতে ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর সিআরপিএফ জওয়ানদের কনভয়ের উপর আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ। শহিদ হয়েছেন অন্তত ৪০ জন জওয়ান। তারপরেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর পান জওয়ানদের পরিবারের ব্যাপারে। জানতে পারেন, কেউ হয়তো পরিবারের একমাত্র রোজগেরে, কারও বা সবে সন্তান হয়েছে।
দেওয়াসি মানেক তখনই ঠিক করে নেন, মেয়ের বিয়েতে খাওয়াদাওয়ার খরচের জন্য যে টাকাটা তুলে রেখেছেন, সেটা দান করে দেবেন। সেইমতো ১১ লক্ষ টাকা তিনি দান করেন জঙ্গি হামলায় নিহত শহিদদের পরিবারের উদ্দেশে। বাকি ৫ লক্ষ টাকা তিনি ডোনেশন হিসেবে দেন সিআরপিএফকে। পুরো টাকাটাই অবশ্য দেওয়া হয়েছে সিআরপিএফকে। শহিদ জওয়ানদের পরিবারের মধ্যে টাকাটা ভাগ করে দেবে সিআরপিএফ।
এ’কথা জানতে পারার পর অবশ্য বরের বাড়ির লোক থেকে শুরু করে নিমন্ত্রিত অতিথি, সবাই তাঁর প্রশংসা করেছেন। নিজের আনন্দের থেকে দেশের স্বার্থ আগে রাখার জন্য ওই ব্যবসায়ীকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন অনেকে। মেয়ে অ্যামি’ও খুব খুশি।
আর দেওয়াসি নিজে কী বলছেন?
তাঁর কথায়, “বিয়েটা ঠিক হয়ে গিয়েছিল, তাই সেটা বন্ধ করিনি। কিন্তু বিয়ের খরচ বাদে আনুষঙ্গিক আর কোনও খরচ করিনি। পুরোটাই দিয়ে দিয়েছি শহিদ জওয়ানদের পরিবারের উদ্দেশে। আমি জানি, তাঁরা যা হারিয়েছেন, তার ভরপাই হয় না। এই টাকায় আর্থিকভাবে যদি কিছুটা সাহায্য হয়, তাহলেই আমি ভাববো, আমার জীবন সফল। আশা করি তাঁরা আমার মেয়েটাকে আশীর্বাদ করেছেন।”
বিয়ে হয়েছে সাদামাটা ভাবেই। কিন্তু খাওয়াদাওয়ার আয়োজন কই? বরপক্ষ থেকে শুরু করে নিমন্ত্রিত, সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। কনের বাবার সে সবে হেলদোল নেই। কারণটা জানার পর অবশ্য কারও মুখেই কোনও ক্ষোভ নেই। বরং সবাই প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন পাত্রীর বাবাকে। মেয়ের বিয়ের খাওয়াদাওয়ার খরচের জন্য রাখা ১৬ লক্ষ টাকার পুরোটাই যে তিনি দিয়ে দিয়েছেন পুলওয়ামায় শহিদ জওয়ানদের পরিবারের উদ্দেশে।
গুজরাতের সুরাটের ছোটখাটো হীরের ব্যবসায়ী দেওয়াসি মানেক। মেয়ে অ্যামি’র বিয়ে ছিল শুক্রবার। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই তৈরি ছিল সব আয়োজন। ভেবেছিলেন ধূমধাম করে একমাত্র মেয়ের বিয়ে দেবেন। কিন্তু বিয়ের আগের দিন বিকেলেই এমন একটা খবর পেলেন, তাতে মন খারাপ হয়ে গেল।