দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ আঘাতের পাল্টা এবার প্রত্যাঘাত। কাবুলে ইসলামিক স্টেটের বিস্ফোরণের ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আফগানিস্তানে হানাদারি চালালো মার্কিন সেনাবাহিনী। সূত্রের খবর আফগানিস্তানের নানাগহর উপত্যকায় আইসিস-এর ঘাঁটিতে হানা দিয়েছে মার্কিন সৈন্য। আগাম কোনও ইশারা না রেখেই অতর্কিতে এই হানা। সংবাদসংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, ইসলামিক স্টেট অব ইরাকের মাথাদের চিহ্নিত করেই ড্রোন হামলা চালিয়েছে  মার্কিন সৈন্যরা।

প্রসঙ্গত, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বৃহস্পতিবারের জোড়া বিস্ফোরণে ১৩ মার্কিন সেনা সহ কমপক্ষে ১৭০ জনের মৃত্যুর পর আমেরিকা পাল্টা আঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। নাশকতায় দোষীদের এর মূল্য চোকাতে হবে বলে জানিয়েছিলেন কান্নায় ভেঙে পড়া  মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বলেছিলেন, যারা হামলা চালিয়েছে বা যে কেউ, যে আমেরিকার ক্ষতি চায়, তাদের উদ্দেশে বলছি, আমরা ক্ষমা করব না, ভুলে যাব না। তোমাদের খুঁজে বের করে মূল্য চোকাতে বাধ্য করব।

পাশাপাশি কাবুল থেকে মার্কিন নাগরিকদের বিমানে উদ্ধার করে নিয়ে আসার অভিযানও পুরোদমে চলবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

ভয়াবহ নাশকতার ৪৮ ঘন্টা না যেতেই তার দায় স্বীকার করা আইসিস (খোরাসান) সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর এক প্ল্যানারের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাল মার্কিন সামরিক বাহিনী। সংবাদ সংস্থা এপি-র খবর, মার্কিন সেন্ট্রাল কম্যান্ডের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন বিল আরবান বলেছেন, এক আইসিস-কে চক্রীর বিরুদ্ধে আকাশ সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসদমন অভিযান চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের তরফে ক্যাপ্টেন বিল আরবান জানিয়েছেন. “আমাদের এই এয়ার স্ট্রাইক-এর আলাদা করে কোন নাম ছিল না। আমরা হানা দিয়েছিলাম আফগানিস্তানের নানাগহর প্রদেশ। প্রাথমিক ভাবে যেটুকু খবর আসছে তাতে আমরা আমাদের লক্ষ্যকে নিকেশ করেছি। কোনও সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়নি তা নিশ্চিত।”

আফগানিস্তানের ননগরহর প্রদেশে চলেছে মানবহীন বিমান হামলা। প্রাথমিক ইঙ্গিত, আমরা টার্গেট করা লোকটিকে খতম করেছি। কোনও অসামরিক নাগরিকের প্রাণ হারানোর খবর নেই।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবর, আইসিস-কের ওই প্ল্যানারের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলা চালানোয় চূড়ান্ত সবুজ সঙ্কেত দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

এর মধ্যেই কাবুলের মার্কিন দূতাবাস ফের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দরজায় দরজায় জড়ো হওয়া মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তার বিপদের আশঙ্কার উল্লেখ করে অবিলম্বে সেখান থেকে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। তাঁদের বিমানবন্দর যাত্রা ও সেখানকার দরজা এড়িয়ে যেতে বলা হয়।

গত পরশুর প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের পরও বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা টিম তাঁকে জানায়, কাবুলে ফের সন্ত্রাসবাদী হামলার শঙ্কা রয়েছে। তবে তাঁরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুরক্ষার আয়োজনই করছেন। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, আমরা এখনও বিশ্বাস করি, নির্দিষ্ট বিপদ, আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণগুলির একটির সাক্ষী হওয়ার পরও কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দেশ ছাড়তে  মরিয়া আফগানদের থিকথিকে ভিড়ের বিরাম নেই। কাতারে কাতারে মানুষ সেখানে অপেক্ষা করছেন। শহরের হাসপাতালগুলিতে বিস্ফোরণে আহতদের চিকিত্সায় শুক্রবার সারাদিন ব্যস্ততা চোখে পড়েছে। কাবুলের আকাশে বাতাসে আশঙ্কা, এই না ফের কখন আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে যায়!

এদিকে,আর দিন তিনেকের মধ্যেই আফগানিস্তান ছাড়বে মার্কিন নাগরিক এবং সেনা। তারপর কাবুল বিমানবন্দরের দখল নেবে তালিবান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here