গান শুনতে কার না ভালো লাগে
গান দেখতেও খুব খারাপ লাগে কি?
গানের সঙ্গে আড্ডা থাকলে তো কথাই নেই ৷ বুধবার সীমান্ত শহর বনগাঁর পুরসভার শারদসম্মান অনুষ্ঠানের আগে দেশের সময়-এর প্রতিনিধি অর্পিতাকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন সংগীত শিল্পী শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
দেখুন ভিডিও
অর্পিতা,প্রশ্ন: সীমান্ত শহর বনগাঁতে এসে কেমন লাগছে?
উত্তর:ভালো লাগছে আমি আগেও এসেছি। সব জায়গায় আমাদের গান গাওয়া টা তো কাজ।
প্রশ্ন: একসময় আপনি তো মালদা থেকে কলকাতায় গান শিখতে আসতেন। সেই সময়ে স্ট্রাগল কেমন ছিল?
শুভমিতা, উত্তর: মালদা থেকেই গান শিখেছি আমি। বাবার কাছেই গান শিখেছি। তারপরে কলকাতায় higher secondary এর পরে এসেছি । স্ট্রাগল সবার যেমন থাকে তেমনই আমার আলাদা করে কিছু নেই। গান শিখেছি, রেওয়াজ করেছি ,তারপর গান রেকর্ড হয়েছে, জনপ্রিয় হয়েছে। নচিদা ছিলেন সেখানে, তারপর নচিদা গান লেখেন সুর করেন ।ওখান থেকেই আমার জার্নি শুরু৷
অর্পিতা,: প্রশ্ন: ‘সখী হম’ গানটার সময় ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়েছিল কি? সেই সময়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
শুভমিতা উত্তর: ছিলেন আমার ডাবিং এর সময়ে। উনি তো বেশি কথা বলতেন না। গান গাওয়ার পর বললেন খুব ভালো হয়েছে।
অর্পিতা,প্রশ্ন: রিয়ালিটি শো–গুলো যে হয় সেখান থেকে কি সত্যিই ট্যালেন্ট বেরোয়, নাকি ক্ষণিকের চমক?
শুভমিতা উত্তর: না সবাই ভালো গায় ।অনেকেই তো ভালো গান গায়। তারপর আস্তে আস্তে নিজেকে ডেভেলপ করে টিকে থাকার একটা ব্যাপার থাকে সেটা সবসময় সকলের ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে না।
অর্পিতা,প্রশ্ন:‘তোমায় ছাড়া বহুদূরে যাবো কোথায়’ এরপর ‘চোখের পলকে’ এই গান গুলো তো তোমার গাওয়া ও খুব জনপ্রিয় এই গান গুলো। কলকাতার পাশাপাশি বাংলাদেশেও এখন ব্যাপক জনপ্রিয় তোমার গান ৷ নতুন বছরে দুবাংলার শ্রোতাদের জন্য নতুন কোন গান আসছে কি ?
শুভমিতা উত্তর:না কোনো গান আসছে না নতুন বছরে। এখনো কোনো প্ল্যান নেই ।আমি খুব কম কাজ করি।
অর্পিতা, প্রশ্ন:এখন তো শোনা যায় সফটওয়্যারের মাধ্যমে গান রেকর্ড করা হয় বলে, গান গাওয়া খুব সোজা হয়ে গিয়েছে। যার সুবাদে অভিনেতারাও হয়ে উঠেছেন সুগায়ক। এর ফলে কি গায়কদের কঠিন প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছে?
শুভমিতা উত্তর:technological advancement. তার খারাপ দিক ভালো দিক সব আছে। যেমন ভাবে যুগের সাথে সব চলছে, চলতে দিতে হবে এতে কারো কোনো হাত নেই। ভালো খারাপ আবার যুগ বিচার করবে।
অর্পিতা, প্রশ্ন: বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান গেয়েছিলেন সেটা সম্ভবত ২০১৯ সালে কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
শুভমিতা, উত্তর:হ্যাঁ আমার গানটা কলকাতাতে রেকর্ড হয়েছিলো। ভালো লেগেছিল গানটা গেয়ে। আর সবথেকে ভালো লেগেছিল আমাদের একেবারে প্রতিবেশী দেশ একই ছিল একটা সময়ে সেখানে এরকম একজন freedom fighter এর জন্য গান গাওয়া সত্যি গর্বের। ভালো লেগেছে।
অর্পিতা, প্রশ্ন: তোমার গলার সঙ্গে লতাজির গলার এত মিল। অনুরাগীরা তো বলেনই– তুমি নিজে কী মনে করো?
শুভমিতা, উত্তর:মনে করি না আমি কিছু ৷
অর্পিতা, প্রশ্ন: স্বর্ণযুগের শিল্পীদের তুলনায়, এখন তোমাদের কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়?
শুভমিতা,উত্তর:এই যুগটাও স্বর্ণযুগ হবে পঞ্চাশ বছর পরে। এটাকেও স্বর্ণযুগ বলবে।অনুরাগের টান বোধহয় বড়ই অদ্ভুত। ভালোবাসার টানে বোধহয় আরও অনেকদূর যাওয়া যায়। তেমনটাই যেন নতুন করে বনগাঁর অনুষ্ঠানে এসে দেখিয়ে দিয়ে গেলেন গায়িকা শুভমিতা।- অর্পিতা বনিক, দেশের সময় ৷
অর্পিতা, প্রশ্ন: বাণিজ্যিক গানের ক্ষেত্রটাতে আমরা এত বেশি মুম্বইয়ের মুখাপেক্ষী কেন? আমাদের এখানে ট্যালেন্ট–এর কি কোনও অভাব আছে বলে মনে হয়?
শুভমিতা, উত্তর:ডিরেক্টরদের প্রশ্ন করুন। এটা আমি বলতে পারবো না। যারা গান গায় তাদের জন্য এই প্রশ্নটা নয়।
অর্পিতা, প্রশ্ন:দেশের সময়ের মাধ্যমে দ’ বাংলায় যে দর্শক বা শ্রোতারা আছেন, যারা তোমার গান পছন্দ করেন তাদের তুমি কী বার্তা দেবে?
শুভমিতা, উত্তর: আমরা এমন একটা জায়গায় শো করতে এসেছি হাতখানেক দূরেই বাংলাদেশ।আমি বাংলাদেশের জন্য প্রচুর কাজ করেছি। প্রচুর যাতায়াত আছে, আমার ভাই বোনেরা আছে। তারা সবাই খুব ভালোবাসেন ।আমি খুব ভালোবাসা আদর যত্ন পাই ।সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে বাংলাদেশে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে ভীষণ ভালো লাগে। এতো বাংলা গান এবং সংস্কৃতিকে যদি সত্যি মনে প্রাণে ভালোবেসে থাকেন তাহলে সেটা বাংলাদেশের মানুষজন। কারণ গোটা দেশটা বাংলা ভাষা নিয়ে বেঁচে থাকেন। আমাদের মতো বহু ভাষাভাষীর দেশতো বাংলা দেশ নয়। সেখানে বাংলার যা কদর ডেফিনেটলি অন্য সব জায়গা থেকে বেশি থাকবে। আমার অনেক শুভেচ্ছা বাংলাদেশের সব বন্ধু ভাইবোনদের জন্যে। আর দুই পারের বাংলার শ্রোতা বন্ধুদের জন্যেও আমার অনেক শুভ কামনা। কারণ আমরা বেশিরভাগ সময় আমাদের পশ্চিমবঙ্গে কাজ করি। তারাও ভীষণ আদরযত্ন উৎসাহের সঙ্গে আমাদেরকে ডেকে নিয়ে যান, গান শোনেন। বাংলাদেশেও তাই। আপনারা সবাই খুব ভালো থাকবেন, ভালো গান শুনবেন,সঙ্গে থাকবেন এই কামনা করি।
অনুরাগের টান বোধহয় বড়ই অদ্ভুত। ভালোবাসার টানে বোধহয় আরও অনেকদূর যাওয়া যায়। তেমনটাই যেন নতুন করে বনগাঁর অনুষ্ঠানে এসে দেখিয়ে দিয়ে গেলেন গায়িকা শুভমিতা।