দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী। বৃহস্পতিবার ভবানীপুরে দলের তরফে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়, হাজির ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা ভবানীপুরের বিধায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবানিপুরের উত্তীর্ণতে এই বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে বিভিন্ন বিষয়ে অনুপ্রাণিত হওয়ারই বার্তা দিলেন ৷

মুখ্যমন্ত্রীর ছবি আঁকা, কবিতা লেখার কথা সর্বজনবিদিত। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, গান সম্পর্কেও একটা আইডিয়া আছে। শুধু আইডিয়া নয়, ৩ বছর গান শিখেছিলেন তিনি। এদিন বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে বক্তৃত্বা দিতে গিয়ে একথা প্রকাশ্যে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। তাঁর কথায়, “ছোটবেলায় তিনটে বছর গান শিখেছিলাম অফিসিয়ালি। থার্ড ইয়ার পর্যন্ত করে আর আমার করা হয়নি। তার মধ্যেই সারে গা মা পা বা কিছু খেয়াল বা কিছু শিখেছিলাম সেটা থেকেই কিছুটা এধার-ওধার করে গানের একটা আইডিয়া আছে।”

এবছর পুজোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কথায় ও সুরে গানের অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছে।

ইচ্ছা আর উৎসাহ থাকলেই শিখে নেওয়া যায় বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ডান্ডিয়া আমাকে কেউ শেখায়নি। নিজে-নিজেই একটা-দুটো এদিক-ওদিক করতে পারি। ধামসা বাজাতে আমাকে কেউ শেখায়নি, মাদলও কেউ শেখায়নি। সবকিছু শেখা ভাল। সবকিছু জেনে রাখা ভাল।” অর্থাৎ ইচ্ছা থাকলেই এগিয়ে যাওয়া যায় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে গুরুদ্বারের হালুয়া তিনি খুব পছন্দ করেন বলেও জানিয়েছেন।

” বাংলা ভাষার সঙ্গে আমরা যাঁরা যুক্ত, তাঁরা তো আছি-ই, বাংলা যাঁদের মাতৃভাষা নয়, তাঁরাও আছেন। বিহারি, জৈন, ইউপি সমাজ, গুজরাতি, রাজস্থানী, সংখ্যালঘু সমাজের সকলে আছেন। পুলিশের বন্ধুরাও আছেন। এখন লুকনোর ব্যাপার নেই৷ সবার হাতে এখন স্মার্ট ফোন। আমাদের দল মুক্ত হাওয়ার মতো চলে। দুর্গা পুজো প্রায় ১ মাস ধরে শুরু হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর মিছিলে বাজনা বেজে গিয়েছিল।

সব কিছু স্বপ্ন বলে মনে হচ্ছে। পুজো হয়ে গিয়েছে, তারপর পুজো কার্নিভাল। ১০০ ক্লাবের কার্নিভাল করতে ৬ ঘণ্টা লেগেছিল। সবাই খুব ভাল ছিলেন। গতকাল বিজয়া সম্মিলনী ছিল। সেটিও দারুন হয়েছে। এরপর আমাদের কালীপুজো, দীপাবলি, ছট পুজা আছে।”

এদিন তিনি আরও বলেন, ” রেড রোডে ইদের নামাজ হয়, আবার কার্নিভাল-ও হয়। অনেকে এটা নিয়ে আদালতে গিয়েছিল। সে অবশ্য যেতেই পারে। আমরা সবাই একসঙ্গে চলি। ভাল করে কালীপুজো করতে হবে। বাজি নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। আমার আনন্দ যেন, অন্যদের দুঃখ না হয়। আমি পরেশনাথ মন্দিরের গিয়েছিলাম। আমি ইস্কন মন্দিরেও গিয়েছিলাম। ওরা আমাকে রথে ডাকে।”

১১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর রাজ্যের প্রতিটি জেলার সব ব্লকে অন্তত একটি করে সভা হবে। পাঁচশোর বেশি সভা হবে গোটা রাজ্যজুড়ে। পুজোর আগেই দলীয় নেতৃত্বকে এ-বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজয়া সম্মিলনীর আবহে এই সভায় কোন বিষয়গুলি তুলে ধরতে হবে সেই সংক্রান্ত গাইডলাইনও দিয়েছিলেন অভিষেক।

ছবিগুলি তুলেছেন ধ্রুবহালদার ৷

উত্তীর্ণ স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ” আমাদের রাজ্যে অনেক বুদ্ধ মন্দির, গুরুদ্ধারা আছে। ওদের হালুয়া আমাকে ইন্সপিরেশন দেয়। গুজরাতিদের ডান্ডিয়া নাচ আমাকে কেউ শেখায়নি। আমাকে ধামসা মাদল কেউ শেখায়নি। আমি তিন বছর গান শিখেছি ছোটবেলায়। আমার হিন্দি, অলচিকি ভাষায় বই বেরিয়েছে।

পঞ্জাবি ভাষায় সাহায্য করলে বা গুজরাতি ভাষায় যথাযথ অনুবাদ করলে হতে পারে। পুজো থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা এসেছে। অনেকে বলেছেন, ষাট হাজার টাকা কেন দিলে? কিন্তু কেউ জিজ্ঞেস করছে না, ফুচকা বা ঢাকিওলারা কী অবস্থায় রয়েছে? হাজার মানুষ, হাজার জাতি। একটাই মিল মানবতার।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here