দেশের সময়, কলকাতা: মঙ্গলবার রথযাত্রা। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসায়নেস (ইসকন) আয়োজিত এ বছরের রথযাত্রার থিম মানসিক শান্তি। এটি ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনার পাশাপাশি মানসিক অসুস্থতা বৃদ্ধিকে তুলে ধরবে। করোনার প্রকোপ কমার পর থেকে ইসকনের মন্দিরে ভক্তদের ভিড় বাড়ছে। সম্প্রতি করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতদের সিংহভাগই বাংলার বাসিন্দা। তাই ৫২ তম রথযাত্রায় বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একথা জানিয়েছেন কলকাতার ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস।

সোমবার ভোর সাড়ে চারটের সময় নিহতদের উদ্দেশে একটি প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার অ্যালবার্ট রোড মন্দিরে ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ডান্স ট্রুপ দীক্ষামঞ্জুরী একটি ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন দুপুরে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন। আরতি সেরে ইসকন মন্দিরে রথের রশি টানলেন মমতা ৷ শুরু হয় রথ যাত্রা ৷সেখান থেকে রথযাত্রার (Rath Yatra 2023) শুভেচ্ছা জানালেন সকলকে। মিমি, নুসরত, সায়ন্তিকা পাশে, ইসকনে মমতার পাশে ডোনাও ৷

এদিন মমতা বলেন, “দেবতা তো মানুষের মধ্যে থেকেই তৈরি হয়। মানুষের অন্তরাত্মাই দেবতার অন্তরাত্মা। দেবতা শুধু মাটির বা কাঠের পুতুল নয়। দেবদেবীর মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের হৃদবাসনা, মনোবাঞ্ছা, স্বপ্ন, ব্যথা, কথা, সুখ-দুঃখ সব দেবতার চরমে অর্পণ করি। কারণ আমাদের বিশ্বাস এটা। বিশ্বাসে মিলায়ে বস্তু, তর্কে বহুদূর।” 

ছবিগুলি তুলেছেন ধ্রুব হালদার ৷

মমতা এদিন বলেন, “জগন্নাথ অনুমতি দিলে, আগামী রথযাত্রা আমরা দিঘায় যে বিরাট মন্দির করছি, সেখানে পারি। মাহেশের উন্নয়ন করে দিয়েছি আমরা। ইসকনকেও মায়াপুরে ৭০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। ওরা বিরাট সিটি তৈরি করছে সেখানে। ইসকনকে অভিনন্দন।”

পুরীর আদলে দিঘাতেও তৈরি হচ্ছে জগন্নাথ মন্দির। সেই খবর আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ইসকনের রথ যাত্রায় অংশ নিয়ে আরেক বড় ইঙ্গিত দিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী বছর দিঘায় রথ যাত্রার চেষ্টা করব।

প্রসঙ্গত চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতেই দিঘা গেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মন্দির নির্মাণের কাজ খতিয়ে দেখেন মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সেখানে বিরাট কর্মযজ্ঞ চলছে৷ আর একটা জগন্নাথ দেবের মন্দির প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের উচ্চতাতেই তৈরি হবে দিঘার এই নির্মীয়মাণ মন্দির। এখানে রথ থাকবে। এখানে থাকবে ভোগ ঘর-সহ আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা। রাজস্থান থেকে বিশেষ স্যান্ডস্টোন আনা হয়েছে। সেই পাথরেই দিঘায় তৈরি হচ্ছে জগন্নাথদেবের মন্দির।

নির্মীয়মাণ মন্দির পরিদর্শন করার সময় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাকে নবীন পট্টনায়কের তরফে যে রথ উপহার দেওয়া হয়েছিল, সেটা আমি দিলাম ওখানে। ওখানে মার্বেলের মূর্তি হবে। আর ধ্বজাও উঠবে । ঝড়ে মন্দিরের কোনও ক্ষতি হবে না।’’

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় দিঘার যে দুটি বিচের নামকরণ করেছেন তা হল ঢেউ সাগর এবং সূর্য সাগর। মূলত দিঘায় দীর্ঘ ৭ কিলোমিটার বরাবর বিচকে আরও মনোরমভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। যা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে চলেছে। সম্প্রতি দিঘা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেরিন ড্রাইভ রোড ধরে মর্নিং ওয়াকও করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here