দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বনগাঁ আদালতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছিল। আর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন লস্কর-ই-তইবা সদস্য শেখ আব্দুল নইম। বর্তমানে তিনি তিহার জেলের বন্দি হলেও মামলায় সওয়াল করতে কলকাতায় আসতে চেয়েছেন তিনি। সেই মতো নিয়েও আসা হয় নইমকে।

মঙ্গলবার নিজেই আদালতে সওয়াল করলেন মৃত্যুদণ্ডের সাজা-প্রাপ্ত সেই আসামী। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আসার সময় বনগাঁয় গ্রেফতার হন নইম ও তাঁর বেশ কয়েকজন সঙ্গী। পরে ২০১৮ সালে বনগাঁ আদালতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন নইম।

এদিন ইদের ছুটি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে । কিন্তু সেই ছুটির মধ্যেও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চে জরুরি শুনানি হল। তার বিরুদ্ধে মৃত্যদণ্ডের সাজাকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের সামনে নিজেই সওয়াল করল লস্কর ই তোইবার জঙ্গি।


ভারতের একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এই জঙ্গির। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দিল্লি ও মুম্বইয়েরও পুলিশের খাতায় নাম আছে তার। অভিযোগ ছিল, সে মানব বোমা তৈরি করত এবং অন্যকে উৎসাহিত করত মানব বোমা তৈরি করতে। তার নাম তার শেখ আব্দুল নঈম। লস্কর-ই-তোইবার সক্রিয় সদস্য ছিল সে।
২০০৭ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বেনাপোল সীমান্তে তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার সঙ্গে আরও চারজনকেও। তারপর কেটে যায় ১১ বছর। বনগাঁ আদালতে মামলা চলে। অবশেষে ২০১৮ সালে তাকে ফাঁসির আদেশ শোনায় আদালত।

এরপরই দিল্লি বিস্ফোরণে নাম জড়িয়ে যায় নঈমের। এনআইএ-এ নিজের হেফাজতে নেয় তাকে। এই রাজ্য থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া তিহার জেলে। সেখানেই এতদিন ছিল সে। কিন্তু তখনও তার মাথার ওপর ঝুলছিল বনগাঁ আদালতের ফাঁসির নির্দেশ।

এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে নঈম। সেই মামলার শুনানি ছিল মঙ্গলবার। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের বিশেষ বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। শুনানির সময়ই নঈম আদালতের সামনে দাবি করে যে, এটা জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন। সে বাঁচতে চায়। তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই যে ভুল তা প্রমাণ করতে ছারপএ দিন ৷

আদালত তাকে সেই সুযোগ দিয়েছে। আদালত তাকে তার দাবি প্রমাণ করার কথা জানিয়ে বলেছে, আগামী ১৭ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। এদিন নঈমের পক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না, তবুও আগামী শুনানিতে তাকে একটি জুনিয়র আইনজীবী দিয়ে সাহায্য করা হবে বলে কোর্ট জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে শেখ আবদুল নইম ও তার সঙ্গীরা প্রবেশ করার চেষ্টা করছিলেন। বাকি তিনজনের মধ্যে ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মহম্মদ ইউনুস, আবদুল্লা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা মুজাফফর আহমেদ। তাঁদের কাছে থেকে ভুয়ো পরিচয়পত্র, লাইসেন্স পাওয়া যায়। সঠিক নথি দেখাতে পারেননি তাঁরা। পরে নইমদের কাছ থেকে বিস্ফোরকও বাজেয়াপ্ত করা হয়। সিআইডি এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছিল। তাঁদের লস্কর যোগের প্রমাণ পাওয়া যায়।

পরে বিচারাধীন অবস্থাতেই পালিয়ে যান নইম। পরবর্তীকালে তাঁকে দিল্লিতে এনআইএ আদালতে পেশ করা হয়। এরপর থেকেই তিহার জেলে বন্দি তিনি। তবে শুনানি চলাকালীন আপাতত কলকাতাতেই রাখা হবে নইমকে। তিনি কোন জেলে থাকবেন, তা ঠিক করবেন রাজ্য পুলিশের ডিআইজি।

নঈম একা নয়, ২০০৭ সালে তার সঙ্গে আরও চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নঈম ছাড়াও বাকিদের মধ্যে ছিল পাক নাগরিক মহম্মদ ইউনুস, আবদুল্লাহ ও জম্মু কাশ্মীরের বাসিন্দা মুজাফ্ফর আহমেদ। সবাইকেই ফাঁসির আদেশ শোনানো হয়েছিল। আগামী ১৭ মে পাঁচ জনেরই মরণ বাঁচন নিয়ে করা মামলার শুনানি হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here