দেশের সময়, বনগাঁ : উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় রবিবার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র বিজয়া কর্মসূচির মঞ্চে দেখা যায়নি রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিকের কোন ছবি ৷ পাশাপাশি অনুষ্ঠান-স্থলে উপস্থিত অতিথিরাও তাঁর কথা মুখে আনেননি এদিন৷

বনগাঁ শহরে নিউমার্কেট বাজার এলাকায় রবিবার দিন আইএনটিটিইউসি-র বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজয়া সম্মিলনী ছিল। মঞ্চ, তোরণ-সহ সর্বত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধায়ের ছবি ছিল। কিন্তু কোথাও প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু-র)ছবি দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে রীতিমতো জোর চর্চাও হয়েছে।

সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত, তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস, আইএনটিটিইউসি-র বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নারায়ণ ঘোষেরা ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।

জ্যোতিপ্রিয়ের ছবি না থাকা প্রসঙ্গে নারায়ণ ঘোষ জানান , ‘‘আগে বালুদা’র ছবি থাকতো, কারণ তিনি কর্মসূচিতে আসবেন বলে সম্মতি দিতেন। তা ছাড়া, তিনি তো আর এখন দলের জেলার দায়িত্বে নেই। এখন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। তাই বালুদা’র ছবি লাগানো হয়নি।’’

তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কর্মসূচিতে জ্যোতিপ্রিয়ের কোনও ছবি না থাকা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলেরর বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের মন্তব্য, ‘‘দেরিতে হলেও তৃণমূলের কিছুটা লজ্জা হয়েছে! ছবি না রেখে তৃণমূল প্রমাণ করে দিল, জ্যোতিপ্রিয় চোর!’’

তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বনমন্ত্রীর নাম সরাসরি না নিলেও তাঁর কথায়, ‘দিল্লিতে আমরা গরিব মানুষদের ঘরের টাকা, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বকেয়া টাকার দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। সে কারণে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে বিজেপি আমাদের নেতৃত্বকে মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করে মানুষের নজরকে ঘোরাতে চাইছে। লোকসভায় জিততে চাইছে। এতে কোনও কাজ হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই মানুষ ভোট দেবেন।’

প্রসঙ্গত, রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় আজ ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে (Jyotipriya Mallick)। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বনমন্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে চাইবে ইডি (ED)।

সূত্রের খবর, রেশন-কেলেঙ্কারির তদন্তে উঠে এসেছে বেশ কিছু কোম্পানির নাম। ওই সব সংস্থায় বাকিবুর রহমানের জড়িত থাকার প্রমাণও মিলেছে। অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেড নামে আরও একটি সংস্থার হদিশ মিলেছে। যারা বাকিবুর-মডেলেই কলকাতা, হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে, দাবি ইডি-র।

এই সমস্ত সংস্থায় রেশন দুর্নীতির কালো টাকা ঢুকেছে বলে মনে করছে ইডি। সেই সমস্ত তথ্য প্রমাণ দাখিল করে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে ফের হেফাজতে নিতে আবেদন জানাবে ইডি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here