দেশের সময়, উত্তর ২৪ পরগনা:১৫০০ বৃক্ষরোপণের শর্তে বনগাঁ থেকে বারাসতের মধ্যে যশোহর রোডের (Jessore Road ) পাঁচটি রেলওয়ে লেভেল ক্রসিংয়ে ওভারব্রিজ তৈরির জন্যে ৩০৬টি গাছ কাটার অনুমোদন দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ২০১৮-য় শীর্ষ আদালতই হেরিটেজ গ্রোত্রের বহু পুরনো বিশাল গাছগুলি কাটার পরিকল্পনায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। দু’দু’টি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গড়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই কমিটিও তথাকথিত উন্নয়ন প্রকল্পে নির্বিচার বৃক্ষনিধনের বিরুদ্ধেই মত দেয়।

বিকল্প অনুসন্ধানের কথা বলে। কিন্তু গত সপ্তাহে বিচারপতি বিআর গাভাই ও বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চ বিলম্বে প্রকল্প-ব্যয় বেড়ে যাওয়ার যুক্তিতে দেশজুড়ে মোট ১১৮টি প্রকল্পে পরিবেশ-প্রশ্নে দীর্ঘ দিন ধরে বজায় থাকা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এই ১১৮টি প্রকল্পের অন্যতম যশোহর রোডে প্রস্তাবিত ৫টি রোড ওভারব্রিজ।

যশোররোডে এই পাঁচটি রোড ওভারব্রিজ তৈরি ও পুরো ৬০ কিলোমিটার রাস্তা চওড়া করতে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি এবং রাজ্য পূর্ত দপ্তর ২০১৫ সালে মোট ৪০৩৬টি গাছ কাটার পরিকল্পনা করেছিল। গাছ বাঁচাতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে এপিডিআর বারাসত শাখা। তদানীন্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ গাছ কাটায় স্থগিতাদেশ দেয়।

পরিবেশের বিপন্নতার পাশাপাশি ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রি অ্যাক্টের বিধি অমান্যের বিষয়টিও আদালতের নজরে আসে। পরে প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ একটি বৃক্ষ নিধনের বদলে পাঁচটি গাছ রোপণের শর্তে শুধু রোড ওভারব্রিজের জন্যে ৩৫৬টি গাছ কাটায় সায় দেয়। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মদন বি লোকুরের বেঞ্চ হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল।

পাঁচ গুণ পরিপূরক বৃক্ষরোপণের শর্তেই পাঁচ বছর পর ৩০৫টি গাছ কাটায় সায় দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ তবে যে কোনও উন্নয়ন-প্রকল্পে পরিবেশবিধি কঠোর ভাবে যাতে কার্যকরী হয়, সে লক্ষ্যে এপিডিআরের মামলাটি বজায় রেখেছে শীর্ষ আদালত। তিন মাস পরে ফের শুনানি।

আবার এই পরিপূরক বৃক্ষরোপণেরও নির্দিষ্ট বিধি রয়েছে ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রি অ্যাক্টে। যে এলাকায় গাছ কাটার কথা, সেখানেই এবং একই প্রজাতির গাছ লাগানোর কথা যে কোনও প্রকল্প শুরুর আগেই। তবে বহু ক্ষেত্রেই সেই শর্ত মানা হয় না এবং পরিপূরক বৃক্ষরোপণ আদৌ হয় না বলে অভিযোগ।

সেই অভিযোগ উঠেছে তারকেশ্বর-চকদিঘি রাস্তার প্রকল্পেও। যা নিয়ে মামলা এখন বিচারাধীন হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। রাজ্যের কাছে এ নিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে হাইকোর্ট। শুনানির কথা সোমবার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here