প্রদীপদে, ঢাকা: বর্ষার এই মরশুমে বাংলাদেশের নদীগুলিতে ইলিশ ধরা পড়ার কথা। কিন্তু সেভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে জালে ইলিশ উঠছে না। এনিয়ে হতাশ সেখানের মৎস্যজীবীরা। তাদের কথায়, সামান্য কিছু ‘জাটকা’ উঠছে। সেগুলির দাম অনেক বেশি। যদিও মৎস্যসম্পদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জালে ইলিশ না ওঠায় হতাশ হওয়ার কিছু নেই। বৃষ্টি ও নদীতে জোয়ারের চাপ ও স্রোত বাড়লে ইলিশ ধরা পড়বে। এজন্য আরও একটু সময় লাগবে ।

সে দেশের আধিকারিকরা জানান, প্রতি বছর বাংলাদেশের ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। চলতি বছরেও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের মাছ ধরার ক্ষেত্রে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। গত ২৩ জুলাই রাত থেকে শুরু হয়েছে সমুদ্রে মাছ ধরা।

কিন্তু নদীতে সামান্য ইলিশ ধরা পড়ে। তার দামও চড়া মৎস্যজীবীরা জানান, সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকার সময় নদীতে ‘টুকিটাকি’ ইলিশ মিলেছে। বৃষ্টি কম হওয়ার কারণেই নদীতে ইলিশ কম ধরা পড়েছে বলেও জানান তারা। তবে এখন বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তাই জালে ইলিশ ভালো পড়তে পারে বলেও আশা তাদের।

একই আশা ইলিশ গবেষক এবং মৎস্য দফতরের আধিকারিকদের। তারা জানান, মাছ কেমন হবে, তা বোঝার জন্য কিছু নির্ণায়ক আছে। সেগুলো সুখবর দিয়েছে। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের এক বিজ্ঞানীর কথায়, ইলিশের প্রজনন–সফলতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। মা ইলিশের ডিম ছাড়ার হার বা প্রজনন–সফলতা গত বছর ছিল ৫২.৩২ শতাংশ। তার আগের বছরে এই হার ছিল ৫১.৭৬ শতাংশ। ‘ইলিশের প্রজনন–সফলতার হার কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে। এর পাশাপাশি জাটকার বাঁচার হারও বেড়েছে। তাই ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে।’ ‘প্রতি বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। এখন নদীতে ইলিশ কম হবে এটাই স্বাভাবিক। অগাস্টের আগে ইলিশ ভালো করে মিলবে না এটা বলা যায়। এখন ইলিশের প্রাপ্তির সময় পরিবর্তন হয়েছে।’

আধিকারিকরা আরও জানান, এখন ইলিশ রক্ষার জন্য বাংলাদেশে তিনদফায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এখন এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে। মৎস্য অধিদফতরের ইলিশ শাখার এক প্রধান বলেন, ‘এবারও ইলিশের ভালো উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।’

আধিকারিকা জানান, গত এক দশকে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে দুলাখ মেট্রিক টনের বেশি। ২০১১-১২ সালে ইলিশের উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৪৭ হাজার মেট্রিক টন। আর ২০২০-২১ সালে উৎপাদন হয়েছে ৫.৬৫ মেট্রিক টন। এবারে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে ৭লাখ মেট্রিক টন হবে বলেও আশাবাদী তাঁরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here