দেশের সময় ওয়েবডেস্ক:‌ মান্যতা পেল না বঙ্গ বিজেপি-র আবেদন। ভোটে কোনও স্থগিতাদেশ নয়। নির্দিষ্ট দিনেই অর্থাৎ ১৯ ডিসেম্বর হচ্ছে কলকাতা পুরভোট।

বুধবার জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি বকেয়া পুরভোটগুলি যত দ্রুত সম্ভব করাতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ পুরভোট মামলার এই রায় দিয়েছে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, তারা আশা করছে, বাকি থাকা পুরসভায় দ্রুত ভোট করবে কমিশন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৩ ডিসেম্বর। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মামলার শুনানিও পিছিয়ে গেল বুধবার। বৃহস্পতিবার ফের ওই মামলার শুনানি হবে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একক বেঞ্চে সেই শুনানি হবে।

রাজ্যে সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করার দাবিতে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল বিজেপি। সেই সঙ্গে তাদের দাবি ছিল, কলকাতা–সহ রাজ্যের পুরভোটে ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট রাখতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। বিষয়টি আদালতে উঠতে কমিশনের তরফে জানানো হয়, তাদের কাছে যে এম১ ও এম২ ইভিএম রয়েছে, তাতে ভিভিপ্যাটের সুবিধা নেই। ভিভিপ্যাটের সুবিধা রয়েছে এম৩ ইভিএমে, যা শুধু লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে ব্যবহার করা হয়। প্রায় সব রাজ্যেই পুরভোটের মতো স্থানীয় নির্বাচনে এম১ ও এম২ ইভিএম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

তবে, এদিন আদালত বুঝিয়ে দিয়েছে, দ্রুত রাজ্যের ১১১ পুরসভার ভোট চায় হাইকোর্ট। রাজ্যের যুক্তি ছিল কোভিড পরিস্থিতি, মার্চ এপ্রিল পরীক্ষা মাস সব চুকিয়ে মে ২০২২ মধ্যে সমস্ত পুরভোট করা হবে রাজ্য। অন্যদিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যুক্তি ছিল, একসঙ্গে ভোট করার মতো ইভিএম অপ্রতুল। তাই সব পুরভোট একসঙ্গে করা সম্ভব হচ্ছে না। জাতীয় নির্বাচন কমিশন ও ২০ রাজ্যের কাছে ইভিএম ধার চেয়েও মেলেনি বলে জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাই রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই ১১১ টি পুরসভার ভোট করতে চাইছে কমিশনও।

রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে আদালতের প্রশ্ন ছিল, সব পুরসভায় একত্রে ভোট কেন হচ্ছে না? জবাবে কমিশন জানায়, ইভিএমের ঘাটতির কথা। এরপরেই আদালতের প্রশ্ন, তা হলে কেন অন্য রাজ্য থেকে ইভিএম নিয়ে আসা হল না? জবাবে কমিশনের আইনজীবী বলেন, সেই চেষ্টাও করা হয়েছিল। কিন্তু অরুণাচলপ্রদেশ ছাড়া অন্য কোনও রাজ্য থেকে এখন ইভিএম পাওয়া সম্ভব নয়।   

প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরভোট করার পর হাতে ৮৪৭৭ ইভিএম থাকছে। এই ইভিএম দিয়ে বাকি পুরসভায় ভোট কেন হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ। নির্বাচন কমিশনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ১১১ টি পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করতে প্রয়োজন আরও অন্তত ২০,০০০ ইভিএম। যা কোনও ভাবেই পাওয়া সম্ভব নয়। এ নিয়ে টানটান শুনানি হয়েছে হাইকোর্টে। কিন্তু বিজেপি-র দাবি মতো রাজ্যের সব পুরভোট একসঙ্গে যে হচ্ছে না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল এদিনই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here