বৈশালী দাশগুপ্ত,দেশের সময় : বনগাঁ- চাকদহ সড়ক ছেড়ে গ্রামের রাস্তা ধরে যাওয়ার পথে অনেকটা দূর থেকেই ঠক ঠক আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় আজও ৷
তবে আগের মত জোড়াল আওয়াজ কিন্তু এখন আর নেই৷ শব্দ তরঙ্গে কোথাও যেন তাল কেটেছে ঠিকই তবু কান পাতলে এখনও বহু দূর থেকে ভেসে আসছে ঠক আওয়াজ।

হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, চরকায় সুঁতো কাটার শব্দ৷ এই
গ্রামটিতে এখনও প্রায় শতাধিক তাঁতির বসবাস। গ্রামের প্রায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ এক সময় তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দরাপপুরের তাঁতের কাপড়ের সঙ্গে গামছার কদর এলাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা হারিয়ে যেতে বসেছে। দেখুন ভিডিও:

আগে গ্রামটিতে কয়েক হাজার মানুষ তাঁতের কাজ করলেও বর্তমানে মাত্র শতাধিক’ তাঁতি এ পেশায় যুক্ত রয়েছেন। বাকিরা ঐতিহ্যগত এ পেশা ছেড়ে যুক্ত হয়ে পড়ছেন বিভিন্ন কাজে।

একটা সময় দিন-রাত তাঁতিদের কর্মব্যস্ততায় গমগম করতো পুরো দরাপপুর। এখন নেই সেই কর্মচাঞ্চল্য, তবে তাঁতি বাড়িতে গেলে দেখা যায় রংবেরঙের সুত, কাপড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রযেছে ৷

এখনও শুনতে পাওয়া যায় তাঁতের ঠক ঠক আওয়াজ। তবে এখন আর এই রঙিন সুতো যেন আর রঙিন স্বপ্ন বোনে না তাঁতির চোখে। তাঁতগুলি যেন জীবনের গান ভুলে এখন গায় শোকগাথা!

কাপড়ের সঙ্গে রঙিন স্বপ্ন বোনা তাঁতিদের জীবনে কেন এই দুরবস্থা নেমে এলো? এই প্রশ্ন করতেই তাঁরা জানালেন যে মুনাফ‍া কমে যাওয়ায় তরুণ প্রজন্মের কেউ তাঁতের পেশায় আসতে চায় না, অভিভাবকর‍াও চান না অনিশ্চিত ভবিষ্যতের এই কাজে জড়িয়ে পড়ুক ছেলে-মেয়েরা। সব মিলিয়ে এক সময়ের তাঁত শিল্পের জমজমাট নদীয়া জেলার দরাপপুর গ্রাম এখন কেবলই ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিতে চলেছে।
হারিয়ে যাচ্ছে দরাপপুরের ঐতিহ্যের তাঁতশিল্প ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here