Durga Puja 2022 : করোনামুক্তি, হেরিটেজ স্বীকৃতি, আগেভাগেই প্রতিমা তৈরির তোড়জোড় বনগাঁর পটুয়া পাড়ায়

0
888

অর্পিতা বনিক, বনগাঁ:দাম বাড়ছে প্রতিমার, করোনা-মূল্যবৃদ্ধির জোড়া ধাক্কা সামলাতে লাইফ লাইন খুঁজছে বনগাঁর পটুয়াপাড়া ৷

ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতি পেয়েছে কলকাতার দুর্গাপুজো। পাশাপাশি অতিমারির খরা কাটিয়ে আশার আলো, দূরদূরান্ত থেকে আসছে প্রতিমার বরাত, আর তাই রথের রশিতে টান পড়ার অনেক আগেই এবছর প্রতিমা তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে বনগাঁর পটুয়া পাড়ায়৷ চরম ব্যস্ততায় প্রতিমা শিল্পীরা ৷ দেখুন ভিডিও –

তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও একটা সমস্যা শুরু হয়েছে এবছর। গত দু’বছর করোনার জন্য বাইরে কাজের জন্য যাননি বেশিরভাগ কারিগর। যেকারণে কাজের লোকের অভাব হয়নি। এবছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় বহু কারিগর পাড়ি জমিয়েছেন মুম্বই, ব্যাঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ। ওইসব জায়গায় মজুরি বাংলার থেকে বেশি। তাই কারিগরের সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা মৃৎশিল্পীদের।

শিল্পী সেন্টু ভট্টাচার্য্য বলেন, কিন্তু এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই অনুকুল। করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। দু’বছর কার্যত বন্ধ থাকার পর পুজোতে মানুষের উৎসাহ অনেকটাই বেশি। এছাড়াও এই উৎসবকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ায় বাড়তি উদ্যমে নেমে পড়েছেন উদ্যোগতারা। পটুয়াপাড়ার সর্বত্রই এবারে বড় প্রতিমার বায়না বেশি। তবে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে অনেকটাই। এতকিছুর মধ্যে উদ্যোগতারা একটু দরাজ হাতে দাম দেবেন বলেই আশাবাদী প্রতিমা শিল্পীরা। পাশাপাশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুর্নিশ জানিয়েছেন শিল্পী সেন্টু ৷ তাঁর কথায় এবারের দূর্গা পূজোয় দিদির বিশেষ উদ্যোগে আরও বেশি উৎসাহ পেয়েছেন গোটা বাংলার পূজোর উদ্যোগতারা ৷

রথের রশিতে টান পড়ার অনেক আগেই এবার প্রতিমা তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে পটুয়া পাড়ায় ৷ শিল্পী স্বপন ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, বহু বছর পর এত তাড়াতাড়ি বায়না শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাড়ির পুজোগুলোর বেশিরভাগেরই অর্ডার এসে গেছে। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিমার প্রচুর অর্ডার এসেছে।

করোনা আবহের পর এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। আর তাই রথের অনেক আগে থেকেই বনগাঁর পটুয়া পাড়াতে যাতায়াত শুরু করে দিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। আর এই পরিস্থিতিতে নিজেদের লোকসান পুষিয়ে নিতে চাইছেন শিল্পীরা। গত দু’বার করোনা আবহে অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে গোটা বাংলার কুমোরপাড়া ৷


২০২০ সালে করোনার ধাক্কায় নমো নমো করেই পুজো সারতে হয়েছিল উদ্যোগতাদের। পুজো করা, ঠাকুর দেখা থেকে শুরু করে সবকিছুর উপরেই বিধিনিষেধ করা হয়েছিল। প্রতিমার সাইজ হয়েছিল ছোট। পুজো কমিটির আয়ও অনেকটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে বেশ লোকসানে পড়তে হয়েছিল শিল্পীদের।

জমানো পুঁজি খরচ করে প্রতিমা তৈরি করলেও সেই খরচও তুলতে পারেননি অনেকে। বিশেষ করে অনেক শিল্পীর সারা বছরের রুটিরুজি ওঠে এই দুর্গা পুজো থেকে। গত বছর বিধি নিষেধ অনেকটা উঠে গেলেও পুজোর সময় আবার জেগে ওঠে করোনাসুর। ফলে সে বারেও বেশ জোরেই ধাক্কা লাগে সীমান্ত শহর বনগাঁর শিমুলতলা, তালতলার মতো পটুয়াপাড়া থেকে কলকাতার কুমোরটুলি সর্বত্রই৷

সাধারণত রথযাত্রার দিন বায়না করা হয় দুর্গা ঠাকুরের। সেদিন থেকেই শুরু হয় প্রতিমায় মাটি দেওয়া। কিন্তু এবছর আগেভাগেই তা শুরু করেছেন মৃৎশিল্পীরা। এর অন্যতম কারণ হিসেবে তাঁরা জানাচ্ছেন, গতবছরও পুজোয় করোনাবিধি মানতে হয়েছে। এবছর একপ্রকার করোনামুক্ত পুজো হবে। পাশাপাশি ইউনেস্কো বাংলার পুজোকে হেরিটেজ ঘোষণা করেছে। যে কারণে বাড়তি উন্মাদনা থাকবে পুজোকে ঘিরে। তাই আগেভাগেই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন তাঁরা।

Previous articleSovan Chatterjee:মমতাদির ইচ্ছা বাস্তবায়িত করাই আমার কাজ : শোভন,অভিমানের প্রাচীর ভেঙে গেল: বৈশাখী
Next articleHandcraft : বনগাঁয় পাঁচশো মহিলাকে স্বনির্ভর করে তুলেছে ইছামতি নদীর কচুরিপানা ! কী ভাবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here