সম্প্রতি তাপস কুমার পাল একাডেমির দশম বার্ষিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হলো দক্ষিণ কলকাতার নিরঞ্জন সদনে। এই অনুষ্ঠানে প্রজ্ঞা আন্তর্জাতিক সন্মান তুলে দেওয়া হয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের হাতে।
গৌড়ীয় নৃত্যের মাধ্যমে অতিথিদের বরণ করা হয়। এরপর বেহালা সম্রাট পন্ডিত ভি.জি.যোগ -এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। পরবর্তীতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন পর্বে অংশ নেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিত্রা গুপ্ত, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ডিন ড: দেবাশীষ মন্ডল, ড: শঙ্কর চক্রবর্তী, সভাপতি সুভাষ দে নিয়োগী, অধ্যাপক কালাম মাহমুদ ( বাংলাদেশ) পন্ডিত অমিতাভ মুখোপাধ্যায়, পন্ডিত এস হরিহরণের পুত্র শ্রীনাথ হরিহরণ, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক রূপক সাহা প্রমুখ। এছাড়া ছিলেন একাডেমির কর্ণধার এবং বিশিষ্ট বাদ্যযন্ত্রশিল্পী লেখক ও অধ্যাপক তাপস কুমার পাল।
উপস্থিত অতিথিদের পুষ্পস্তবক, উত্তরীয় ও স্মারক দিয়ে বরণের পর অনুষ্ঠানটি মূল পর্বে পৌঁছায়। তাপস কুমার পালের লেখা সঙ্গীতের আনাচে কানাচে সিরিজের প্রথম বই ‘লকডাউনে লকার ভেঙে পেলাম ‘ বইটি আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত। বইটির প্রকাশক স্বপন কুমার ঘোষও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম পর্বের শেষ অনুষ্ঠান ছিল প্রজ্ঞা আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড। প্রথমেই বাংলাদেশের অতিথি অধ্যাপক কালাম মাহমুদকে এই সন্মান প্রদান করা হয়। পরবর্তী পুরস্কার প্রাপকরা হলেন পন্ডিত অমিতাভ মুখোপাধ্যায়, পন্ডিত প্রতাপ কুমার চক্রবর্তী, পন্ডিত সমরেন্দ্র নাথ মুখার্জী এবং পন্ডিত এস হরিহরণ উপস্থিত না থাকায় তাঁর সুযোগ্য পুত্র শ্রীনাথ হরিহরণ পিতার হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠানটি ছিল বেশ চমকপ্রদ। এই পর্বের শুরুতে অন্ধকার অনুষ্ঠান কক্ষের দুই প্রধান গেট দিয়ে বেহালা বাজাতে বাজাতে ছাত্রছাত্রীদের প্রবেশ ঘটে। এরপরই ছিল মঞ্চ কাঁপানো সুরের মূর্ছনা। মোট দশটি গান ৫০ জন শিল্পীর যৌথ যন্ত্রসঙ্গীতে সুরের ঢেউ যেন সারা প্রেক্ষাগৃহে আন্দোলিত হতে থাকে। অনুষ্ঠানের সমাপ্তি পর্বে পন্ডিত শ্রীনাথ হরিহরণ কর্ণাটী বেহালাতে বাজায় রাগ হংসধ্বনি। মৃদঙ্গে ছিলেন বিদ্যান এম. রামকৃষ্ণ। এই সুরের গভীরতা দর্শকদের হৃদয় স্পর্শ করে। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন অধ্যাপক ড: শুভাশিস বসু ও জয়তী মুখার্জী।