দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মাত্রাছাড়া কোভিড সংক্রমণের কারণে দিল্লিতে মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হল বেসরকারি অফিস। বন্ধ করে দেওয়া হল রেস্তরাঁও। কার্যত লকডাউনের চেহারায় ফিরে গেল দিল্লি। বলা হয়েছে, কেবলমাত্র জরুরি ভিত্তিক অফিসগুলি খোলা থাকবে। বাকি সব অফিস বন্ধ থাকবে। এর আগে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস চালানোর অনুমতি দিয়েছিল দিল্লি সরকার। কিন্তু তা এ বার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হল।

রাজধানীতে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে সামগ্রিক লকডাউনের পথে না গিয়েও ক্রমশ কড়াকড়ির পথে হাঁটছে অরবিন্দ কেজরিবালের দিল্লি সরকার। হোটেল, রেস্তরাঁ, পানশালায় বসে পানভোজন বন্ধ করার পর এ বার রাজধানীতে বন্ধ হতে চলেছে সমস্ত বেসরকারি কার্যালয়। কর্মীরা বাড়িতে বসেই সারবেন অফিসের কাজ। সেই মর্মেই জারি হয়েছে নয়া নির্দেশিকা।

জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাকে অবশ্য ছাড় দিয়েছে দিল্লি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ।

ওমিক্রন-সংক্রমণ মোকাবিলায় সোমবারই বন্ধ হয়েছিল দিল্লির রেস্তরাঁ, হোটেলে বসে খাওয়াদাওয়া। বলা হয়েছিল, খাবার কিনে তা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খেতে হবে। চালু থাকবে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা। এতদিন ৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে চালু ছিল সরকারি ও বেসরকারি অফিস। এ বার সেই নিয়মে বদল আনল ডিডিএমএ। নয়া নির্দেশিকায় সমস্ত বেসরকারি অফিস বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ওই সমস্ত অফিসের ১০০ শতাংশ কর্মী বাড়ি থেকে কাজ করবেন। প্রত্যাশিত ভাবেই জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে এই নিয়মের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।

দিল্লিতে ক্রমে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কে ভুগতে বারণ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু তিনি এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ঢিলেমির কোনও স্থান নেই। কারণ, সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে না পারলে ভবিষ্যতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার বাড়বে না, এ কথা স্পষ্ট করে বলা যায় না। তাই এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে সাধারণ মানুষকে।

রাজধানী দিল্লিতে সোমবার ১৯ হাজারের বেশি নতুন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। যা রবিবারের (২২,৭৫১) তুলনায় খানিকটা কম হলেও সামগ্রিক বিচারে প্রচুর। সোমবার রাজধানীতে সংক্রমণের হার ছিল ২৫ শতাংশ। যা গত ৫ মে-র পর সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে ১৭ জন করোনা রোগীর মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি দিল্লি সরকার।

সোমবার দিল্লির স্বাস্থ্য মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানান, আরও কয়েকদিন মধ্যে সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছে যাবে দিল্লি। সত্যেন্দ্র জৈন বলেন, আমরা মনে করছি, করোনা সংক্রমণের শীর্ষে প্রায় পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে পুরোটা স্পষ্ট হবে। তার পর থেকে সংক্রমণ পড়তে শুরু করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সংক্রমণের হার কমাতে একটি কার্ফু জারি করতেও হতে পারে। তাঁর কথাই সত্যি হল মঙ্গলবার। কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেল দিল্লির দৈনিক কার্যকলাপ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here