দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ :‌ বাংলার বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্রর চলে যাওয়ার পরে ৪৮ ঘণ্টাও পেরোল না। ফের দুঃসংবাদ। চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র নারায়ণ দেবনাথ। ৯৬ বছরের কমিকশিল্পী বেলভিউ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন আজ সকালে।নারায়ণ দেবনাথের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগত। শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি লিখেছেন, ‘‌বিশিষ্ট শিশুসাহিত্য শিল্পী ও কার্টুনিস্ট নারায়ণ দেবনাথের প্রয়াণে আমি গভীর শোকপ্রকাশ করছি। তাঁর সৃষ্টি ‘বাঁটুল দি গ্রেট’, ‘হাঁদা ভোঁদা’, ‘নন্টে ফন্টে’ প্রভৃতি চরিত্র কয়েক দশক ধরে মনে চিরস্থায়ী আসন লাভ করেছে। আমরা তাঁকে ২০১৩ সালে বাংলার সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘‌বঙ্গবিভূষণ’‌ প্রদান করতে পেরে গর্বিত। তাঁর মৃত্যু অবশ্যই সাহিত্য সৃজনশীলতা এবং কমিক্স জগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।’‌

আমি নারায়ণ দেবনাথের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি ।”
গত ২৪ ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতায় বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ফুসফুস এবং কিডনির সমস্যা বাড়ছিল তাঁর, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমছিল। রক্তচাপ ওঠানামা করছিল। অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ১৬ জানুয়ারি তাঁকে বাইপ্যাপে এবং পরে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। আজ, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ নাগাদ প্রয়াত হন তিনি।

নারায়ণ দেবনাথের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‌আমার সঙ্গে ওঁর ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল। তবে উনি কখনওই বেশি কথা বলতেন না। খুব বিনয়ী মানুষ ছিলেন। নিজের কথা প্রায় বলতেনই না। আমার সঙ্গে বেশ কয়েকবার তাঁর দেখা হয়েছে। তবে কখনওই যে খুব আড্ডার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল এমন নয়। ওই যে বললাম, একটু লাজুক মানুষ ছিলেন, কুণ্ঠা ছিল কথা বলায়। তাঁর ঐকান্তিকতা ও নিষ্ঠার কোনও তুলনা নেই। সারাজীবন অবিশ্রাম কাজ করে যেতে পেরেছেন। তাঁকে বাঙালি বহুদিন মনে রাখবে।’‌

৯৬ বছরের নারায়ণ দেবনাথ অনেক দিন থেকেই বয়সজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। আগেও একাধিক বার চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিল রাজ্য সরকার। বেলভিউ ক্লিনিকে তাঁর চিকিৎসার জন্য গড়ে তোলা হয়েছিল  মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিক্যাল বোর্ড। তবে প্রবল চেষ্টার পরেও তাঁকে সুস্থ করে তুলতে পারলেন না চিকিৎসকরা। বিদায় নিলেন শিল্পী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here