দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রবিবার রাজ্যের ১০৭টি পুরসভায় সম্পন্ন হয়ছে নির্বাচন। পুরসভায় ছিল নির্বাচন। দিনভর নানা অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। আর ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হতে না হতেই বাংলা বন্‌ধের ডাক দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বন্‌ধ সফল করতে সকাল থেকে পথে নেমেছে গেরুয়া শিবির।

বেলা গড়াতে না গড়াতেই বন্‌ধ প্রত্যাহারের জন্য দলীয় নেতৃত্বকে অনুরোধ জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়ায় এসে শুভেন্দু বলেন, “হঠাত্‍ করে ডাকা বন্ধে অনেকের অসুবিধা হচ্ছে। অনুরোধ করব বেলা ১২টায় প্রত্যাহার করে নিতে। আমি অনুরোধ করব ধর্মঘটিদের, প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে দেবেন। আপনারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিন।”

https://www.facebook.com/pdebta/videos/1593550170991203/

স্বাভাবিক মতুয়াগড় বনগাঁ ৷ শহরে এদিন সকাল থেকেই খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট, বাজার, অফিস, বন্ধের প্রভাব চোখে পড়ল না । চলছে বাস । খোলা হয়েছে দোকানপাট । এখনো পর্যন্ত রাস্তায় দেখা নেই বিজেপি কর্মী সমর্থকদের । -ছবি সাহেলী দত্ত৷

নির্বাচনে অশান্তি ও শাসকদলের সন্ত্রাসের অভিযোগে সোমবার, অর্থাৎ আজ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা, ১২ ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। রবিবার সকাল থেকেই বিরোধী দলের প্রার্থীকে মারধর, বিরোধী দলের এজেন্টকে বের করে দেওয়া, ছাপ্পা ভোট, একাধিক পুর এলাকায় ইভিএম ভাঙচুর বোমাবাজি ইত্যাদি নিয়ে কমিশন ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়ে সরব হয়েছিল বিজেপি।

রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ফোনে অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘উনি এমন কোনও কথা আমাকে বলেননি। বলেছেন সংবাদমাধ্যমে। আমাকে যদি তেমন কোনও আর্জি জানাতেন, তা হলে আলোচনা হত। তবে এখন বন্‌‌ধ প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়।’’

অন্যদিকে,বনধে খোলা থাকছে স্কুল,কলেজ, খোলা থাকবে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস। বন্ধ করা যাবে না দোকানপাট। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন । ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে এদিন বিজেপি-র ডাকা বনধ-এর বিরুদ্ধে সরকারি অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার৷

বনধের প্রতিবাদে পালটা মিছিলের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। সোমবার বিকেল চারটের সময়ে তৃণমূলের তরফে সর্বত্র মিছিল করার ডাক দেওয়া হয়েছে।

বিজেপির ডাকা বাংলা বনধে তেমন কোন প্রভাব পড়ল না কলকাতায়। শহরের বেহালা, আলিপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় বাজারঘাট ও যান চলাচল স্বাভাবিক। হাওড়া এবং সংলগ্ন এলাকায় বন্‌ধের কোনও প্রভাব পড়েনি। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। চলছে সরকারি ও বেসরকারি বাস। বিজেপির ডাকা বাংলা বন্ধে কোনো প্রভাব পড়লো না হাওড়া শহরে | হাওড়া স্টেশন, হাওড়া বাসস্ট্যান্ড হাওড়া ব্রিজ যান চলাচল স্বাভাবিক।

বেলা আটটা অবধি বিজেপির বনধের কোন প্রভাব পড়েনি। লোকাল ট্রেন অন্যান্য দিনের মত স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। মানুষ শহরের বাইরে থেকে আসছে। সকলেই বলছে, বনধ হলে ক্ষতি।

শিলিগুড়ির সফদর হাসমি চক বা ভেনাস মোড়ে,  জলকামান নিয়ে প্রস্তুত শিলিগুড়ি পুলিশ৷ প্রতিদিনের মতই সকালের দিকে স্বাভাবিক রয়েছে যান চলাচল।

বালুরঘাটে সরকারি বাসস্ট্যান্ডে বিজেপি-র কর্মী সমর্থকরা বন্‌ধের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখালেন। রাস্তায় বসে তাঁরা অবরোধও করেন। বন্‌ধ সমর্থকদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্ত ধস্তাধস্তি হয়।

কয়েকটি এলাকায় ভোটগ্রহণ পর্ব ঘিরে রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখান। দিনভর শাসকদলের নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে বঙ্গ বিজেপি। নির্বাচন শেষ হতে না হতেই সোমবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধের ডাক দেয় বিজেপি। বন্‌ধ সফল করতে তাই সকাল সকাল রাস্তায় নেমে পড়েছে বন্‌ধ সমর্থকরা।

সোমবার সাত সকালে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা।  সোমবার সকাল সাতটা নাগাদ হুগলি স্টেশনে ডাউন বর্ধমান লোকাল আটকে বিক্ষোভ দেখান বন্‌ধ সমর্থকরা। কিছুক্ষণ পর ব্যান্ডেল রেল পুলিশ এসে হস্তক্ষেপ করে। তাদের সহায়তায় অবরোধ সরিয়ে স্বাভাবিক হয় রেল চলাচল। এরপর হুগলি স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা।

অন্যদিকে কোচবিহারে ভবানীগঞ্জ বাজারে পাওয়ার হাউস চৌপথিতে সরকারি বাস আটকে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে। এদিন সকাল থেকেই কোচবিহারে সরকারি, বেসরকারি বাস স্বাভাবিকভাবেই চলতে শুরু করে। বন্‌ধের বিরোধিতা করতেই সোমবার সকালে কোচবিহারে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি।

পাশাপাশি হাওড়ায় যানচলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ব্যাঁটরা থানার খানপুর মোড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। হাওড়া-আমতা রোড অবরোধের চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরাতে চেষ্টা করলেই শুরু হয় ধস্তাধস্তি। কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে পুলিশ।  সকাল থেকেই বন্‌ধ সফল করতে রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় নামলেও একেবারে স্বাভাবিক শহর কলকাতা। সকাল থেকে সময় মতোই চলছে ট্রেন, মেট্রো। রাস্তাঘাটেও স্বাভাবিক যানচলাচল। তবে দিনভর উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপির একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। মৌলালি, উল্টোডাঙা, বড়বাজার, যাদবপুর, বেহালা, হাজরা মোড়ে বিজেপির কর্মসূচি রয়েছে।

ভোটে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টা বনধে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে তেমন কোন প্রভাব পরল না। ট্রেন ও বাস চলাচল স্বাভাবিক। জুট মিল গুলো সবই খোলা। বাংলা বনধের কোন প্রভাব পড়েনি বীরভূমের সিউড়িতে। বাস চলাচল করছে , খোলা দোকান পাট।

বিজেপির ডাকা বাংলা বন্ধের কোন প্রভাবই পড়লো না আসানসোল শিল্পাঞ্চলে । চলছে সমস্ত ধরনের বাস , খোলা স্কুল, দোকান । টহল দিচ্ছে পুলিশ। বিজেপির ডাকা বাংলা বনধে এখনো পর্যন্ত আংশিক প্রভাব মালদহে। রাস্তায় নেমেছে সরকারি বাস। দৈনন্দিন সবজি বাজারও খোলা। অটো, টোটো, রিক্সার মত যানবাহন রাস্তায় নেমেছে। তবে বেসরকারি বাস সেভাবে চোখে পড়েনি।

সকাল সাতটা নাগাদ হুগলির স্টেশনে ডাউন বর্ধমান লোকাল আটকে দেয় বনধ সমর্থকরা। ব্যান্ডেল রেল পুলিশ এসে অবরোধ সরিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে। পরে হুগলি স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে বিক্ষোভ করে বিজেপি।

বনধের আংশিক প্রভাব পুরুলিয়ায়, খোলা দোকান পাট। সবজির বাজার, চলছে সরকারি বাস। তবে এদিন রাস্তায় নামেনি বেসরকারি বাস। হুগলিতে রেল অবরোধ করে বিজেপি। শিলিগুড়িতে বিজেপির ডাকা বনধের এখনো পর্যন্ত মিশ্র সাড়া। সরকার, বেসরকারী বাস চলাচল স্বাভাবিক। চলছে টোটো, অটো, রিকশ। স্কুল বাসও স্বাভাবিক। গোলমালের মোকাবিলায় শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন ৷

বন্‌‌ধের বিরোধিতা করে কোচবিহারে রাস্তায় নামে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি।

বিজেপি ডাকা ১২ঘণ্টার বন্‌ধে আংশিক প্রভাব লক্ষ্য করা গেল কোচবিহার শহরে। বেসরকারি পরিবহন পথে দেখা না গেলেও সরকারি পরিবহন রাস্তায় নেমেছে। তাছাড়াও টোটো অটো রাস্তায় নেমেছে। কোচবিহারে ভবানীগঞ্জ বাজারে পাওয়ার হাউস চৌপথিতে সরকারি বাস আটকান বিজেপির দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে।

বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ফলে, পুলিশ কিছু বন্‌ধ সমর্থকদের আটকও করে।শুধু বন্‌ধ ডাকাই নয়, তা সফল করতে রাজ্যের সর্বত্র বিজেপি কর্মীরা পথে নামবেন বলেও গেরুয়া শিবিরের পক্ষে রবিবার জানানো হয়। দিনের শেষে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরেও যায় বিজেপি প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন রাজ্য নেতা শিশির বাজোরিয়া, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। চিঠি দিয়ে ১০৮ পুরসভার ভোটই বাতিলের দাবিও জানিয়েছিল বিজেপি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here