দেশের সময়: বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ। আর এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। কিন্তু তার রিপোর্ট এখনও সামনে আসেনি। এদিকে লক্ষ লক্ষ টাকা এসে পড়ে রয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। অথচ ডাল নিয়ে বন্ধ রয়েছে প্রকল্প। এর জেরে বঞ্চিত হচ্ছে হাজার হাজার চাষি। মার খাচ্ছে সুফল বাংলাও।

বিষয়টি ঠিক কীরকম? বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের তরফে বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়কে একটি প্রকল্প দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-গবেষক ড. রাজীব নাথ। ঠিক হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে চাষিদের ডালের বীজ দেওয়া হবে। কীভাবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডাল চাষ করতে হয়, তার প্রশিক্ষণ দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা। তারপর ডাল চাষ করে চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল রাজ্য সরকারের কৃষি বিপণন দফতরের মার্কেটিং হাবে সরাসরি বিক্রি করবেন। এর ফলে মাঝে যে ফড়েরা থাকে, তারা ফায়দা লুটতে পারবে না। কৃষকরা ফসল বিক্রি করে ন্যায্য দাম পাবেন।

এগ্রিকালচার মার্কেটিং হাব থেকে ওই ডাল চলে যাবে সুফল বাংলার স্টলে। সেখান থেকে বাংলার মানুষ বাজারের চেয়ে কমদামে ডাল কিনতে পারবেন। কিন্তু এই প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। আর এর পিছনে রয়েছে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, কিছুটা কাজ হওয়ার পরই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ফলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। যিনি এই প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। এমনকী তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহনপুর ক্যাম্পাস থেকে বদলি করে দেওয়া হয় পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রে।

বর্তমানে রাজীববাবু ফের মোহনপুর ক্যাম্পাসে ফিরলেও ডাল নিয়ে ওই প্রকল্প আর চালু হয়নি। এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন ওই অধ্যাপক। তিনি বলেন, একেবারেই মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি তিনবার উত্তর দিয়েছি। অন্তত চার হাজার পাতার নথি পেশ করেছি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। কিন্তু তাদের রিপোর্ট আজও সামনে আসেনি। ধার করে ওই প্রকল্পের জন্য বীজ কেনা হয়েছিল। সরকারের তরফে দেরিতে টাকা পাঠানো হয়েছে।

২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি থেকে ৩০ লক্ষ টাকা এসে পড়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। অথচ ওই টাকা খরচ করতে দেওয়া হচ্ছে না। কাজ করতে পারছি না। এর ফলে চাষিরা চরম বঞ্চিত। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। এদিকে, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ এই তিন দেশ নিয়ে ডাল চাষের এলাকা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেছিল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সেই কাজও বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ডাল নিয়ে গবেষণার কাজ একপ্রকার মুখ থুবড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here