দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: মুকুল রায়ের পর অ্যালকেমিস্ট  মামলার তদন্তে এবার তৃণমূল কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অরূপ বিশ্বাসকে তলব করল ইডি।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ওই মামলায় প্রায় ১৯০০ কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ হিসাবেই অরূপকে তলব করা হয়েছে। মন্ত্রী সময় চেয়েছেন। তাঁর আবেদন বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই ইডির একটি সূত্রের দাবি।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য কোষাধ্যক্ষ হিসেবে তাঁকে ডাকা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, তথ্য প্রমাণ নিয়ে যাওয়ার জন্য ইডির কাছে সময় চেয়েছেন অরূপ বিশ্বাস। অভিযোগ, ২০১৪তে ভোট প্রচারের সময় তৃণমূলের হেলিকপ্টার ভাড়ার খরচ জুগিয়েছিল অ্যালকেমিস্ট।

এবিষয়ে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, অ্যালকেমিস্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মিঠুন চক্রবর্তী।‌ কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য কুণালের এই দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোনও সম্মানীয় ব্যক্তিকে এভাবে অপমান করা যায় না। এর আগে এই মামলায় মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। মুকুল যেহেতু অসুস্থ তাই তাঁর বাড়ি গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।

অ্যালকেমিস্ট মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কেডি সিংহ। ইডি সূত্রে খবর, তাঁরই সংস্থা ছিল ‘অ্যালকেমিস্ট ইনফ্রা রিয়্যালটি’। সেই সংস্থার বিরুদ্ধে লগ্নিকারীদের কাছ থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তোলার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। ইডি ২০১৬ সালে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ ছিল, সেবি-র অনুমতি ছাড়াই ওই সংস্থাটি লগ্নিকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা তুলেছে। তদন্তে নেমে ২০১৯ সালে কেডি-র কুফরির রিসর্ট, চণ্ডীগড়ের শো-রুম, হরিয়ানার পঞ্চকুলার সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-সহ ২৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইডি।

সেই ঘটনার ১৫-১৬ মাস পর ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে কেডিকে গ্রেফতার করে ইডি। সেই সময় বিজেপিতে ছিলেন মুকুল। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে এসে কেডি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলেন, মুকুল বা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের মতো বিজেপি নেতারা তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে কী বলছেন? তত দিনে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ভোটের আগে কেডির গ্রেফতারি নিয়ে যখন বিজেপি শাসকদলকে লাগাতার বিঁধে চলছিল, সেই সময় তৃণমূলের তরফেও পাল্টা দাবি করা হয়েছিল যে, শুভেন্দু-মুকুলের কাছে ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থা সারদা এবং অ্যালকেমিস্টের সমস্ত খবর রয়েছে। গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সিবিআইকে চিঠি দিয়েও জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল। লোকসভা ভোটের সেই মামলা নিয়ে আবার তৎপরতা শুরু হয়েছে। মুকুলের পর তৃণমূলের অরূপকে ডেকে পাঠাল তদন্তকারী সংস্থা।

ইডি সূত্রের খবর, অ্যালকেমিস্ট চিট ফান্ডের নথি ও হিসাব খতিয়ে দেখার সময় কিছু ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন মিলেছে। তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, চিটফান্ড সংক্রান্ত কাজের জন্য হয়নি সেই সব লেনদেন। ওই বিষয়ে জানতে চেয়েই অরূপকে তলব করা হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের ওই সূত্রটির।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here