দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে জোড়া ধাক্কা অনুব্রত মণ্ডলের ৷ গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সেই চার্জশিটেই অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যার বয়ানকেই হাতিয়ার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

২০৩ পাতার চার্জশিটে যেমন আছে অনুব্রতর বিপুল সম্পত্তির কথা, তেমনই আছে এনামুল হক, আবদুল লতিফ, সায়গল হোসেনদের বয়ান। কীভাবে গরু পাচার হত এবং কীভাবে সেই টাকা অনুব্রতর কাছে এসে পৌঁছতে চার্জশিটে তারই উল্লেখ করেছে ইডি।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে গরু পাচারকাণ্ডে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দাখিল করেছে। সেখানে নাম রয়েছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। ইডির চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, গরু পাচার থেকে কমপক্ষে ৪৮ কোটি টাকা পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল।

সুকন্যা মণ্ডলের ভোলে ব্যোম রাইস মিল এবং শিব শম্ভু রাইস মিলের নাম রয়েছে ইডির চার্জশিটে। আরও দু’টি সংস্থা অভিযুক্তের তালিকায়। একইসঙ্গে মনোজ মহনত নামে আরও এক অনুব্রত-ঘনিষ্ঠের নাম রয়েছে অভিযুক্তের তালিকায়।

অনুব্রত এবং তাঁর পরিবারের প্রায় সাড়ে ১১ কোটির নগদ এবং সম্পত্তি ইতিমধ্যেই ইডি বাজেয়াপ্ত করেছে বলে ইডি সূত্রে খবর। এখনও পর্যন্ত মোট ৩২ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। সূত্রের দাবি, আব্দুল লতিফ থেকে অনুব্রত ঘনিষ্ট মলয় পিট, বিদ্যুৎবরণ গায়েনের বয়ানের ভিত্তিতে এই চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে। একইসঙ্গে রাজীব ভট্টাচার্যের বয়ানও রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের বয়ান থেকে উঠে এসেছে গরুপাচারে অনুব্রতর ভূমিকা কী। একইসঙ্গে বেনামে সম্পত্তিরও খোঁজ মিলেছে বলে ইডি সূত্রে খবর।

সূত্রের খবর, চার্জশিটে অনুব্রত এবং তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল সহ তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠদের নামে বিপুল সম্পত্তির উল্লেখ করেছে ইডি৷ শুধু তাই নয়, অনুব্রতর বিরুদ্ধে সুকন্যার বয়ানকেই হাতিয়ার করেছেন তদন্তকারীরা৷ চার্জশিটে ইডি দাবি করেছে, জিজ্ঞাসাবাদে সুকন্যা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, বাবার কথা মতোই তিনি চেকে সই করে দিতেন৷ আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না৷

এ ছাড়াও অনুব্রত মণ্ডল কতটা প্রভাবশালী, তা বোঝাতে তাঁর দিল্লি যাত্রা আটকাতে দুবরাজপুরের এক তৃণমূল কর্মীকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় এক বছর পর অনুব্রতকে পুলিশের গ্রেফতারির ঘটনাও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে৷ আবার দিল্লি নিয়ে যাওয়ার সময় রাজ্য পুলিশের ঘেরাটোপে থাকা সত্ত্বেও যেভাবে শক্তিগড়ের একটি হোটেলে অনুব্রত প্রাতঃরাশের ফাঁকে ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন, সে বিষয়টিও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে৷

ঘটনাচক্রে এ দিনই অনুব্রতর আসানসোল জেলে ফেরার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালত৷ এর আগের দিন শুনানি চলাকালীনই ইডি-র আইনজীবী আদালতে দাবি করেছিলেন, আগামী কয়েক বছর তিহাড় জেলকেই ঘরবাড়ি ভেবে নিতে হবে অনুব্রতকে৷ তার পর পরই অনুব্রতর বিরুদ্ধে এই চার্জশিট জমা দেওয়া হল৷

তবে এই ধাক্কার মধ্যেই আগামী শনিবার অবশেষে তিহাড় জেলে মেয়ে সুকন্যার সঙ্গে দেখা হতে পারে অনুব্রতর৷ এই মুহূর্তে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে সুকন্যাও তিহাড় জেলেই বন্দি রয়েছেন৷

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here