দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আজই ফিরিয়ে দিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকদের।অনুব্রত কন্যা সুকন্যা জানিয়েছিলেন কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। তবে ঘন্টা খানেকের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের হল মামলা। অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডল প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা, অথচ স্কুলে যাননি কোনওদিন। তার থেকেও বড় অভিযোগ, সুকন্যা পাশই করেননি টেট। অর্থাৎ টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট পাশ না করেও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি।

সূত্রের খবর বোলপুরের কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হিসেবে নাম রয়েছে সুকন্যার। হিসেব বলছে তাঁর নিজের বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব খুব কম। অথচ তিনি স্কুলে যেতেন না। অভিযোগ, হাজিরার রেজিস্ট্রার আসত মণ্ডল বাড়িতে। সেখানেই নাকি হাজিরা খাতায় সই করতেন সুকন্যা। মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম আজ হাইকোর্টে অভিযোগ দায়ের করেন।

শুধু অনুব্রত কন্যা নয়, তৃণমূল নেতা ঘনিষ্ঠ আরও ৫ জনের নাম উঠে এসেছে। যারা বেআইনি ভাবে যুক্ত হয়েছেন শিক্ষক হিসেবে। সুমিত মণ্ডল, অর্ক দত্ত, সাত্যকী মণ্ডল,কস্তুরী চৌধুরী, সুজিত বাগদির নাম উঠে এসেছে। অভিযোগ এই ছ’জন টেট পাশ না করেই স্কুলের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। উল্লেখ্য এর আগেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে পরেশ অধিকারীর কন্যার। তার চাকরিও গিয়েছে আদালতের নির্দেশে, প্রাপ্ত বেতনও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে, আজ ফিরদৌস সামিম অনুব্রত কন্যার চাকরির প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে ওই ছ’জনকে টেট সার্টিফিকেট এবং নিয়োগপত্র নিয়ে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

অন্যদিকে,অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে প্রায় ১৭ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করল সিবিআই । এই টাকা ছিল ব্যাঙ্কে। ফিক্সড ডিপোজিট করে তা রাখা ছিল। বুধবার সেই টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি।

অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে জেরা করতে বুধবার বোলপুরে গিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি টিম। নিচুপট্টি এলাকায় অনুব্রতর বাড়িতে গিয়ে যখন তাঁরা পৌঁছন তখন সুকন্যা ভিতরেই ছিলেন। তবে সিবিআই বেশিক্ষণ সেখানে থাকেনি। কুড়ি মিনিট পরই বেরিয়ে আসেন গোয়েন্দারা। পরে সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সুকন্যা কোনও কথা বলতে চাননি। তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করছেন।

অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সিবিআইয়ের ওই দল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যায়। ওই ব্যাঙ্কেই ১৭ কোটি টাকা বিভিন্ন নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখা ছিল বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, ওই টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে যেমন টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তেমন অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রে হয়নি। অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ বলে সিবিআই যাঁদের জেরা করেছে বা যাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে, সেখানে কোথাও এক লপ্তে বড় অঙ্কের নগদ মেলেনি। বুধবার যা পাওয়া গিয়েছে, তাও ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা। এই টাকার উপরে আয়কর দেওয়া থাকলে, সেখানেও বড় কোনও অনিয়ম ধরা পড়বে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

তবে সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, ওই টাকার উপর কর দেওয়া থাকলেও উপার্জনের উৎস্য নিয়ে প্রশ্ন থাকবে। তার সদুত্তর দিতে হবে অনুব্রত মণ্ডলকে। কর দেওয়া থাকলেই ছাড় পাওয়া যাবে না। বেআইনি লেনদেন থেকে উপার্জিত অর্থের উপর কেউ কর দিলেও অপরাধ থেকে মুক্ত হতে পারেন না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here