অর্পিতা বনিক, বনগাঁ: উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত শহর বনগাঁয় যশোর রোডের দু’পাশের মৃত শিরিষ গাছের কাণ্ডে চলছে ভাস্কর্যের কাজ ৷ যাতে বনগাঁ বাসীর মধ্যে এই গাছগুলি স্মৃতি হয়ে থেকে যেতে পারে। একই সঙ্গে সীমান্ত শহর বনগাঁর সৌন্দর্যও বাড়বে।
যশোর রোডের দু’পাশে শতাব্দী প্রাচীন শিরিষ গাছ বহু ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। জরাজীর্ণ অনেক গাছই এখন মৃতপ্রায়। বেশ কিছু গাছ ইতিমধ্যে মারাও গিয়েছে। বনগাঁ পৌরসভার উদ্যোগে সেই মৃত গাছে প্রাণ ফেরাচ্ছেন শিল্পীরা। মৃত গাছগুলির শাখা-কান্ড খোদাই করে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন শিল্পনৈপুণ্য। কোনও গাছে ফুটে উঠছে মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি, কোনও গাছে আবার বিশ্ব বাংলার লোগো। বর্তমানে হাতি এবং অশোকস্তম্ভ তৈরির কাজ চলছে। দেখুন ভিডিও
বনগাঁ পৌরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ রামনগর রোডের মুখ থেকে বিএসএফ ক্যাম্প মোর পর্যন্ত যশোর রোডের ধারের মৃত দশটি গাছে ভাস্কর্যের কাজ চলছে। আরও বেশ কিছু গাছ মৃত অবস্থায় রয়েছে। আগামিদিনে সেই কাজগুলোতেও ভাস্কর্য তৈরি করা হবে। পৌরপ্রধান গোপাল শেঠ জানান, শতাব্দী প্রাচীন এই শিরিষ গাছগুলি বনগাঁর বহু ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। বয়স ভারে যে গাছগুলি মারা যাচ্ছে, সেই গাছগুলি ফেলে না-দিয়ে তাতে বিভিন্ন ধরনের ভাস্কর্য করা হচ্ছে। যাতে বনগাঁবাসীর মধ্যে এই কাজগুলি স্মৃতি হয়ে থেকে যেতে পারে। একইসঙ্গে এর ফলে সীমান্ত শহরটির সৌন্দর্যও বাড়বে।
গোপাল শেঠ বলেন, “বিভিন্ন আর্ট কলেজের ছাত্ররা এই ভাস্কর্যের কাজ করছেন।” শিল্পী কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, “গাছগুলি মারা গেলেও এখনও কাঠ খুব ভালো রয়েছে। একে কাঠ নয় পাথর বললে চলে।” তিনি জানান, প্রায় এক বছর ধরে ১০-১৫ জন ভাস্কর্য শিল্পী ওই সমস্ত গাছে খোদাইয়ের কাজ করে চলেছেন। বর্তমানে তাঁরা চার থেকে পাঁচ জন মিলে কাজ করছেন। তাঁদের এই কাজ শেষ করতে এখনও প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগবে ৷
বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন বনগাঁ বাসিন্দা তথা আইনজীবী দীপাঞ্জয় দত্ত। তিনি বলেন, “এতে গাছগুলি আরও কয়েকটা বছর আমাদের মধ্যে থেকে যাবে।” এ বিষয়ে প্রধান গোপাল শেঠ বলেন, “আগামিদিনে যদি রাস্তা সম্প্রসারণ হয় তখন এই ভাস্কর্যগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে সরিয়ে রাস্তার পাশেই আবার বসানো হবে।