দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শনিবার হলদিয়ার সভায় বিচার বিভাগ নিয়ে তাঁর মন্তব্য নিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলেছেন স্বয়ং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । কলকাতা হাইকোর্ট অবশ্য আদালত অবমাননার অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলা গ্রহণ করেনি। তবে তাতে দমে না গিয়ে সোমবার শ্যামনগরের জনসভায় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিচার ব্যবস্থার একাংশের বিরুদ্ধে ফের মুখ খুললেন।

সোমবার উত্তর ২৪ পরগ‌‌নার শ্যামনগরে দলের এক সভা থেকে এবিষয়ে সরব হন তিনি।  বিচার ব্যবস্থার এক শতাংশ প্রসঙ্গে হলদিয়ায় তাঁর করা মন্তব্য নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বলেছিলেন সীমা অতিক্রম করেছেন তিনি।

সোমবার সেই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‌আমি তো রাজ্যপালকে নিয়ে কিছু বলিনি। তাহলে রাজ্যপাল কেন কথা বলছেন? তার মানে ঠিক জায়গায় ঢিল পড়েছে।’‌ বিজেপি নেতাদের করা নানারকম মন্তব্য নিয়ে কেন রাজ্যপাল চুপ এদিনের সভায় সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।  রাজ্যপালের পাশাপাশি সিবিআইকে বিঁধে অভিষেক প্রশ্ন করেন, ‘‌সিবিআইয়ের গ্রহণযোগ্যতা কী? সুদীপ্ত সেন যাদের বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছে তাদেরকে ডেকেছে?’‌ তাঁর দাবি, এসএসসি, টেট–সহ যে কোনও বিষয় নিয়ে সিবিআই তদন্ত করুক ৷

তবে এদিনও কারও নাম করেননি। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, আদালতের প্রতি তাঁর এবং দলের পূর্ণ আস্থা আছে। কিন্তু এক শতাংশের কাজকর্ম নিয়ে আপত্তিও গোপন করেননি। তিনি বলেন, “তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ পদস্থ লোকজনের কথায় চলেন।”

দিন সাতেক আগে বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরেছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। অর্জুনের ঘরে ফেরা উপলক্ষে এদিনের সমাবেশের আয়োজন হয়েছিল।

সেখানেই ভাষণে বিচার বিভাগ নিয়ে তাঁর শনিবারের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, আমি তো বলছি, বিচার বিভাগের ৯৯ শতাংশই ভাল। এক শতাংশের অনিয়মের কথা তো বলতেই হবে। কোনও বিচারপতি বা বিচারকের নাম না করে অভিষেক জনতার উদ্দেশে বলেন, আপনারাই বলুন, একজন বলে দিচ্ছেন, মার্ডার কেসে তদন্ত হবে না। এফআইআর হবে না। এটা ঠিক না ভুল? আমার অধিকার নেই এটা নিয়ে বলার!

তাঁর কথায় রাজ্যপালের প্রতিক্রিয়া নিয়ে তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিচার বিভাগের এক শতাংশের বিরুদ্ধে বলেছি। তাতেই রাজ্যপালের কেন গায়ে লাগল? আমি তো রাজ্যপালকে কিছু বলিনি। আসলে ‘ঠাকুর ঘরে কে আমি তো কলা খাইনি’ ব্যাপার।” অভিষেক প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু অধিকারী যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করেন, দিলীপ ঘোষ আপত্তিজনক মন্তব্য করেন তখন রাজ্যপালের বিবেক দংশন হয় না কেন? অভিষেক বলেন, আমি বিচার ব্যবস্থাকে শ্রদ্ধা করি। বিচার ব্যবস্থাকে অবমাননা করছেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দুরা।

কিছু আসে যায় না।  নানা সময় গোলমালের জন্য খবরের শিরোনামে এসেছে ব্যারাকপুর। হুঁশিয়ারি দিয়ে এদিন অভিষেক বলেন, ‘‌কেউ যদি ভেবে থাকেন ব্যারাকপুরকে অশান্ত করবেন সেটা কিন্তু কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। একজন তৃণমূল কর্মীও যদি আক্রান্ত হন তবে আমি ছেড়ে কথা বলব না।’‌ কর্মীরাই দলের সবচেয়ে বড় সম্পদ বলে উল্লেখ করে উপস্থিত তৃণমূল নেতা–কর্মীদের প্রতি অভিষেকের বার্তা, ‘‌নেত্রী বলেছেন আমি নয় আমরা।

সবাইকে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’‌ এদিন এই সভাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন একজন তৃণমূল কর্মী। সঙ্গে সঙ্গেই ওই কর্মীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here