দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে ফের একবার পাকিস্তানকে একহাত নিল ভারত। শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের ৭৫ তম সাধারণ সভায় জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের দাবির বিরোধিতা করল ভারত। শুধু তাই নয়, ভারতে সন্ত্রাসবাদের জন্য সম্পূর্ণভাবে পড়শি দেশকে দায়ী করে বিবৃতি দিলেন ভারতের তরফে সেখানে উপস্থিত ইন্ডিয়া মিশন টু দ্য ইউনাইটেড নেশন্সের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো বিনিতো।

ভারতের আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রেকর্ড করা বক্তব্য শোনানো হয় সভায়। সেই সময় সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান বিনিতো। নিজের বক্তব্য ইমরান দাবি করেন, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত রাষ্ট্রসংঘের। নিজের বক্তব্যে ইমরানের দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বিনিতো বলেন, “জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাই এই এলাকায় যে নিয়ম ও আইন আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয়।”

জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের স্বাধীনতা ও অধিকার খর্ব করা হচ্ছে বলে ইমরানের দাবির বিপক্ষে ভারতের তরফে বলা হয়, “কাশ্মীরের একমাত্র সমস্যা হল এখানকার একটা অংশ এখনও বেআইনিভাবে পাকিস্তান দখল করে রেখেছে। তাই সেই এলাকা থেকে সরে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছে ভারত।”

এই সভায় বিনিতো আরও বলেন, “এই সভা এতক্ষণ এমন একজনের কথা শুনল (পড়ুন ইমরান), যাঁর নিজের কোনও বক্তব্য নেই, কোনও সাফল্য নেই, বিশ্বের উন্নতির জন্য কোনও পরামর্শও নেই। তার বদলে আমরা দেখলাম মিথ্যে কথা, ভুল তথ্য, ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা। এই সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে সব ভাষার ব্যবহার করেছেন তাতে এই সভার সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে।”

পাকিস্তানের অভিযোগের জবাবে রাইট টু রিপ্লাই বা জবাব দেওয়ার অধিকার বলবত করে এই জবাব দেওয়া হয়েছে ভারতের তরফে। বিনিতো বলেন, এই ইমরান খানই কিছুদিন আগে ওসামা বিন লাদেনকে শহিদ বলেছেন। সংসদে দাঁড়িয়ে তাঁর কথা তাঁর মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে।

ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদকে প্রত্যক্ষভাবে মদত দেওয়ার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দুষেছে ভারত। বিনিতো বলেন, “এই দেশই ৩৯ বছর আগে দক্ষিণ এশিয়ায় গণহত্যা করেছিল। নিজেদের লোককেই মেরেছিল তারা। এই দেশই বারবার জঙ্গিদের অস্ত্র, টাকা ও অন্যান্য সবরকমের মদত দেয়। তার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। এমনকি জঙ্গিদের পেনশনও দেওয়া হয়। এই দেশেই সবথেকে বেশি জঙ্গি রয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।”

এখানেই থেমে থাকেননি বিনিতো। তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রসংঘে আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত কী ভাবে জঙ্গি সংগঠনগুলিকে লাগাতার সাহায্য করে চলেছে পাকিস্তান। কী ভাবে বারবার সতর্কতা সত্ত্বেও এই কাজ করছে তারা। গত ৭০ বছরে বিশ্বকে দেখানোর মতো পাকিস্তানের একমাত্র উজ্জ্বল বিষয় হল সন্ত্রাসবাদ। তাই একমাত্র সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়ার রাস্তা থেকে সরে এলে তবেই পাকিস্তান স্বাভাবিক হবে। নইলে তা শুধুমাত্র ভারত নয়, দক্ষিণ এশিয়া নয়, গোটা বিশ্বের পক্ষেই ক্ষতিকারক।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here