দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আগামী ২ ডিসেম্বর করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের উপর। শহরের প্রথম নাগরিক হিসেবে তাঁর উপর হচ্ছে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ। শেষ ধাপের ট্রায়াল চলছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন-এর। আর তারই অঙ্গ হিসেবে কলকাতায় এসেছে কোভ্যাক্সিনের ১ হাজার টিকা। পুরোটাই পরীক্ষামূলক কারণে এসেছে কলকাতায়। আর এই টিকার কলকাতায় পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্যে আহ্বান জানানো হয়েছিল কলকাতা পুরসভার প্রশাসক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। তিনি তাতে অত্যন্ত সদর্থকভাবেই সাড়া দিয়েছিলেন। এবার দিনক্ষণও চূড়ান্ত হয়ে গেল। ২ ডিসেম্বর অর্থাৎ বুধবার বিকেল চারটের সময় নাইসেডে করোনা ভ্যাকসিন নেবেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ জানিয়েছেন, ‘করোনাভাইরাস বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। তাই এর সমাধানসূত্র বের করতে গিয়ে যদি আমাকে প্রাণও দিতে হয়, আমি তাতেও রাজি। মানুষকে এভাবেও তো সেবা করা যায়।’ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ফিরহাদের কোনও কোমর্বিডিটি নেই। পেটের সামান্য সমস্যা ছাড়া হার্ট, ফুসফুসের মতো অঙ্গ একেবারে স্বাভাবিক রয়েছে।

কেন ফিরহাদকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে? সূত্রের খবর, যে সমস্ত শহরে কোভ্যাক্সিনের টিকার ট্রায়াল চলছে, সেখানকার মেয়রদেরই প্রথম ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্যে আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু অনেক শহরের মেয়রই সেই সাহস দেখাতে পারছেন না, আবার অনেকের রয়েছে কোমর্বিডিটির সমস্যাও। তাই তাঁরাও পিছিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ফিরহাদ সেই প্রস্তাব না ফিরিয়ে অত্যন্ত সাহসিকতার নজির রেখেছেন।

নাইসেড সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের গোড়া থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় দফার পরীক্ষা। গোটা দেশে ২৫৮০০ জনের শরীরে ওই টিকা প্রয়োগ করা হবে। যার মধ্যে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গেরও ১০০০ জন। ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে দায়িত্ব পাওয়া দেশের ২৮ সংস্থার অন্যতম নাইসেডের তরফে ভ্যাকসিনগুলি সংরক্ষণ করা হয়েছে মাইনাস ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায়।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, টিকা আসার পর প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মীদের তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। সরকারি, বেসরকারি মিলিয়ে ৫ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সহযোগী কর্মীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। দ্বিতীয় পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে উর্দিধারীদের (পুলিশ, নিরাপত্তা কর্মী, সেনা, আধাসেনা ইত্যাদি)। এরপর টিকা পাবেন কো-মর্বিডিটি থাকা প্রবীণ নাগরিকদের। সে তালিকা তৈরির কাজ পুজোর আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।

উল্লেখ্য, দেশের টিকাকরণ কর্মসূচিতে গোটা দেশে সম ভাবে টিকা বন্টন এবং কোল্ডচেন বজায় রেখে সাধারণের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব বর্তায় কেন্দ্রের উপর। সেক্ষেত্রে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ‘নোডাল এজেন্সি’ হিসেবেই কাজ করে। স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান, এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই হবে। জানা গিয়েছে, আপাতত তাই টিকার সংরক্ষণ এবং বণ্টনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো যাচাই করে দেখার কাজ চলছে। তবে, কত পরিমাণে টিকা আসবে সেই সংখ্যার সঙ্গেই ডোজের পরিমাণও ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here