দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ২০১৯ এই বছরটার উল্লেখ বারবার আসবে। ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস চিরদিন মনে রাখবে এই ঘটনাবহূল বছরটাকে। আর তার কারণ অনেক। আমরা বেছেছি এমন ১০টা ঘটনা যা সত্যি স্মরণীয় করে রাখবে ২০১৯ সালকে।

দ্বিতীয় মোদী সরকার

এই বছরের মে মাসে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনে অনেকটা শক্তি বাড়িয়ে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন নরেন্দ্র মোদী। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় বিজেপি একাই পায় ৩০৩টি আসন। এনডিএ জয় পায় ৩৫৩টি আসনে।


রাহুল গান্ধীর পদত্যাগ

পর পর বিভিন্ন রাজ্যে হারের মুখ দেখছিল কংগ্রেস। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের ফলে রীতিমতো ভরাডুবি হয় শতাব্দী প্রাচীন দলের। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় মাত্র ৫২টিতে জয় পায়। এর পরেই পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে দলের সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল গান্ধী। পরে অগস্ট মাসে দায়িত্ব নেন সনিয়া গান্ধী।

৩৭০ ধারার অবলুপ্তি

জম্মু-কাশ্মীরে সাত দশক ধরে চলা ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি হয় এই বছরেরই। ৫ অগস্ট শুধু একই সঙ্গে ওই রাজ্যকে দু’ভাগ করে কেন্দ্র। জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুই আলাদা রাজ্যের জন্ম হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, তাঁর ছেলে ওমর আবদুল্লা, পিডিপি নেত্রী মেহবুব মুফতিকে গৃহবন্দী করে রাখে কেন্দ্র। বন্ধ করে দেওয়া হয় উপত্যকার ইন্টারনেট পরিষেবা।

অসমের নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ

ছ’বছর ধরে চলা এনআরসি-র কাজ এই বছরেই শেষ হয় অসমে। ৩১ অগস্ট প্রকাশিত হয়ে চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি। সেই তালিকায় তিন কোটির বেশি মানুষের নাম নথিভূক্ত হয়। চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ যায় অসমে বসবাসকারী ১৯ লাখ মানুষের নাম।

অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তি

অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি বিতর্কের সমাধান হয় সুপ্রিম কোর্টে। আদালত জানিয়ে দেয় বিতর্কিত জমিতে তৈরি হবে রামলালার মন্দির। অন্য দিকে পাঁচ একর জমি সরকারকে দিতে হবে মসজিদ বানানোর জন্য। এর পরেও অনেক মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু ডিসেম্বরে সব আবেদন নাকচ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

আঁধার চাঁদে যাত্রা

চাঁদের অন্ধকার দিক স্পর্শ করে ভারতের চন্দ্রযান। গোটা দেশ উৎসব পালন করে ইসরোর উদ্যোগ নিয়ে। যদিও ৭ সেপ্টেম্বর স্বপ্নভঙ্গ হয়। চন্দ্রযান টু পরিকল্পনা মাফিক চাঁদের মাটি ছুঁতে পারেনি। সফট ল্যান্ডিং না হলেও ইসরো দাবি করে এই অভিযান ৯৫ শতাংশ সাফল্য পায়।

মহারাষ্ট্রে মহা-নাটক

এই বছরে অনেক রাজ্যেই বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়ে সম্প্রতি ভোট হয়েছে। তবে এমন নাটক আর কোথাও হয়নি যেমনটা মহারাষ্ট্রে হয়েছে। নির্বাচনের পরে জোট ভেঙে যায় বিজেপি ও শিবসেনার। জোট বাঁধে সম্পূর্ণ বিপরিত মেরুর কংগ্রেস এবং শিবসেনা। অন্য দিকে, রাতারাতি শপথ নিয়ে নেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ানবিশ। পরে প্রয়োজনীয় বিধায়ক সংখ্যার অভাবে পদত্যাগও করেন। সংখ্যায় জিতে শপথ নেন শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে।

নাগরিকত্ব আইন

এই বছরে দেশ সব থেকে বেশি উত্তাল হয় নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনীকে ঘিরে। লোকসভা ও রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পরে আইন হয়। এর পরেই দেশ জুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। তীব্র আন্দোলনে নামেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ কিংবা উত্তর-পূর্ব ভারত উত্তাল হয়ে ওঠে নতুন আইনের বিরোধিতায়।

ইয়েদুরাপ্পার প্রত্যাবর্তন

কর্ণটকে চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির বি এস ইয়েদুরাপ্পা। জুলাই মাসে সেও এক নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। ১৫ বিধায়কের পদত্যাগে ভেঙে যায় ১৪ মাসের কংগ্রেস ও জেডিএস জোট সরকার। খুব কম ব্যবধানে বিজেপি ফের সরকার গড়ে। যদিও ডিসেম্বরে হওয়া উপনির্বাচনে স্বস্তিজনক জায়গায় চলে যায় ইয়েদুরাপ্পা সরকার।

কুলভূষণ যাদবের ফাঁসিতে স্থগিতাদেশ

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বড় জয় পায় ভারত। পাকিস্তানকে বলা হয়েছে, আপনারা কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ গুরুত্বের সঙ্গে পুনর্বিবেচনা করুন। যতদিন না ফের বিবেচনা করা হচ্ছে, ততদিন কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড যেন কার্যকর না হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here