দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পুজো কমিটিগুলিকে রাজ্য সরকারের অনুদান দেওয়ার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যে মামলা হয়েছিল তার রায় ঘোষণা হল শুক্রবার। সেই রায়ে আদালত স্পষ্ট বলে দিয়েছে, কোনও পুজো কমিটি ওই টাকা বিনোদনের জন্য খরচ করতে পারবে না। আদালত বলেছে, সরকারি টাকা বিনোদনে খরচ করা যায় না। সেইসঙ্গে এদিন কলকাতা হাইকোর্ট এও বলেছে, টাকা খরচের পূর্ণাঙ্গ হিসেব রাজ্য সরকারকে হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে।

আদালত স্পষ্ট বলে দিয়েছে অনুদানের টাকার ৭৫ শতাংশ খরচ করতে হবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিনতে। বাকি টাকা পুলিশের মাধ্যমে জনসংযোগমূলক কাজে খরচ করা যাবে। কোনও বিনোদন করা যাবে না।

  • রাজ্য সরকার দুর্গা পুজো কমিটিগুলিকে যে অনুদান দিয়েছে, সেই টাকা কোনও বিনোদনের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
  • তা পুলিশ ও জনগণের সমন্বয় ও মাস্ক-স্যানিটাইজার কেনার কাজে খরচ করতে হবে।
  • রায় কলকাতা হাইকোর্টের।

পুজো কমিটিগুলিকে বিল-ভাউচার সহ হিসেব দিতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। পুলিশ সেই হিসেব দেবে সরকারকে। তারপর পুজোর পর হিসেব সংক্রান্ত রিপোর্ট হলফনামা আকারে আদালতে জমা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।

এখানেই শেষ নয়। আদালতের নির্দেশ যাতে পুজো কমিটিগুলির বুঝতে অসুবিধা না হয় সে ব্যাপারেও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পুলিশকে বলা হয়েছে, আদালত যা যা নির্দেশ দিল তা পয়েন্ট আকারে লিফলেট ছাপিয়ে পুজো কমিটিগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

মমলাকারী দুর্গাপুরের সিটু নেতা সৌরভ দত্ত বলেন, “মূল মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারধীন। হাইকোর্ট যা বলেছে তাতে স্পষ্ট যে সরকার মুখে এক বলছে এবং আদালতে দাঁড়িয়ে অন্য কথা বলছে। এতে সবাই বুঝতে পারছে রাজ্য সরকারের অবস্থানের কোনও ঠিক নেই।গতকাল এই মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে আদালতের চোখা চোখা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্যকে। আদালত রাজ্যের উদ্দেশে বলে-

১) সরকার কি শুধু দুর্গাপুজোতেই অনুদান দেয়? নাকি অন্য উৎসবেও দেওয়া হয়? ইদেও কি দেওয়া হয়েছিল? দুর্গাপুজো নিয়ে আমরাও গর্বিত, কিন্তু তাই বলে কি যেভাবে ইচ্ছা টাকা দেওয়া যায়? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কি এই ভেদাভেদ করা যায়?

২) আপনারা (রাজ্য সরকার) বলছেন যে এই টাকা দেওয়া হচ্ছে মাস্ক, স্যানিটাইজার কেনার জন্য। কিন্তু এগুলো তো সরকার নিজেই কেন্দ্রীয়ভাবে কিনে দিতে পারত। তাতে খরচ অনেক কম হত।

৩) যেখানে করোনা সংক্রমণের জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রয়েছে, সেখানে পুজোর অনুমতি কীভাবে দিল সরকার?

৪) কী কী সুরক্ষা বিধি মেনে চলছে সরকার?

৫) ভিড় নিয়ন্ত্রণের কী ব্লু-প্রিন্ট করা হয়েছে?

৬) সব কাজ যদি পুলিশ করে তাহলে পুজো কমিটিগুলোকে টাকা দেওয়ার কী যুক্তি? এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই তো?

তবে অনুদানদেওয়া স্থগিত বা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়নি আদালত । পুজোর পর পুলিশের রিপোর্ট পেলে ফের এই মামলা উঠবে আদালতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here