দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ খবরের কাগজ থেকে কোভিড-১৯ হওয়ার আশঙ্কা দেখছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। কারণ তা ছাপা হয় পুরো যান্ত্রিক ব্যবস্থায়। প্যাকেটও করা হয় যন্ত্রেই। শুধু খবরের কাগজ নয়, ডাকে পাঠানো বা অনলাইনে অর্ডার করা পণ্যের প্যাকেট নিয়েও আশঙ্কার কিছু দেখছে না হু। বর্তমান অতিমারির সঙ্কট-পর্বে নিজের সময়-সুযোগ মতো তথ্য ও খবরাখবর জেনে নিয়ে সজাগ থাকাটাও কম জরুরি নয়। ফলে সব দিক বিবেচনা করে সরকারও সংবাদপত্রকে লকডাউনের আওতার বাইরে রেখেছে। দুধ, আনাজ, মাছ-মাংসের মতোই।
তবে খাবার-দাবার কিনে আনলেও খবরের কাগজের পাতা ওল্টাতে এখন দু’বার ভাবছেন কেউ কেউ। এ ক্ষেত্রে হু-র বক্তব্য, ‘‘কেউ এক জন সংক্রমিত হলেও তাঁর থেকে প্যাকেটে বা খবরের কাগজে নোভেল করোনাভাইরাস লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তা ছাড়া, এই ধরনের প্যাকেট ও সংবাদপত্র বহু এলাকা ও নানা রকম তাপমাত্রা পার করে পৌঁছয়। এ কারণে ওই সব প্যাকেটের বা কাগজের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা আরও কম।’’
কিন্তু সংবাদপত্র যাঁরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন, তাঁদের নিয়ে কী ভাবা হচ্ছে? তাঁদের ছোঁয়াও আজকাল এড়ানো যাচ্ছে। দেশে-বিদেশে মাস্কের সঙ্গে গ্লাভস বা দস্তানা হাতে কাগজ বিলি, রাস্তায় ফেলে বিক্রি না-করার বন্দোবস্ত আরও নিশ্চিত করছে সুরক্ষা। যে কারণে বিজ্ঞানী, শিক্ষক ও সংবাদপত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরাও দাবি করছেন, খবরের কাগজ থেকে কোভিড-১৯ ছড়ানোর আশঙ্কা অমূলক। এর সঙ্গে, আরও স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে উৎপাদন ও বণ্টনের আশ্বাসও দিচ্ছে সংবাদপত্র সংস্থাগুলি। ভরসা জোগাচ্ছে আর একটি তথ্যও। বিশ্বের এতগুলি দেশে রোগটি ছড়িয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত সংবাদপত্র, ছাপা পত্রপত্রিকা বা চিঠি থেকে কোভিড-১৯ হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। বিশ্বের শীর্ষ স্তরের বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকেরাই জানাচ্ছেন এ কথা। ইন্টারন্যাশনাল নিউজ় মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সিইও ই জে উইলকিনসন নিজের ব্লগেও তা উল্লেখ করেছেন।
ভারত সরকার
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক
(বিপিএন্ডএল সেকশন)
শাস্ত্রী ভবন, নয়াদিল্লি-১১০০১১
২৩শে মার্চ, ২০২০
মাননীয়
মুখ্য সচিবগণ,
রাজ্যসমূহ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
বিষয়: কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে মুদ্রণ ও বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমের কাজ বজায় রাখা
স্যর/ম্যাডাম,
আপনারা সকলেই জানেন কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করার জন্য ভারত সরকার তথা সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে। এমতাবস্থায়, সঠিক ও সময়োচিত খবর পরিবেশনার জন্য জরুরি তথ্য প্রদানকারী মাধ্যম যেমন: টিভি চ্যানেল, নিউজ এজেন্সি, টেলিপোর্ট অপারেটর্স, ডিজিটাল স্যাটেলাইট নিউজ গ্যাদারিং (ডিএসএনজি), ডিরেক্ট টু হোম (ডিটিএইচ) ও হাই-এন্ড-ইন-দ্য স্কাই (হিটস), মাল্টি সিস্টেম অপারেটর্স (এমএসও), কেবল অপারেটর্স, ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশন (এফএম) রেডিয়ো এবং কমিউনিটি রেডিয়ো স্টেশনস (সিআরএস) একান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সব নেটওয়ার্কের যথোচিত ভাবে কাজ করা প্রয়োজন, শুধুমাত্র মানুষের মধ্যে সচেতনতা জাগানো বা গুরুত্বপূর্ণ খবর পৌঁছে দেওয়ার জন্যই নয়, বরং দেশকে বর্তমান সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করার জন্যও। ভুয়ো খবরকে এড়িয়ে চলা, এবং যা সঠিক (গুড প্র্যাক্টিসেস) তাকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এই সব নেটওয়ার্ক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
গ) ডিটিএইচ/হিটস পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা ও তার রক্ষণাবেক্ষণ
ঘ) এফএম বা সিআরএস নেটওয়ার্ক
ঙ) এমএসও এবং কেবল নেটওয়ার্ক
চ) নিউজ এজেন্সিস
৩) এই সব পরিষেবা যাতে নির্বিঘ্নে চলতে পারে, সে জন্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকারকে অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা যেন তাতে সব রকমের সহায়তা করে। পাশাপাশি এ-ও মনে রাখতে হবে, কোভিড-১৯ প্রতিহত করার জন্য যদি কোনও রকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, সে ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত নির্দেশগুলোর মান্যতা দিতে হবে —
ক) উপরোক্ত পরিষেবা প্রদানকারী বা তাদের সহায়কদের (ইন্টারমিডিয়ারি) কাজ করার অনুমতি
খ) নির্বিঘ্নে জোগান ও বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ) এই সব কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের অনুমতি
ঘ) সংশ্লিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারীর অ্যাক্রেডিটেড কর্মীদের চলাফেরার অনুমতি
ঙ) সংবাদমাধ্যম ও ডিএসএনজি কর্মীদের নিয়ে যাচ্ছে এমন গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে ও জ্বালানি ভরার ক্ষেত্রে সুবিধা

চ) এই সব ক্ষেত্রে কাজ সচল রাখার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা সমেত অন্য লজিস্টিকসকে সুবিধা

৪) সংশ্লিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারীর নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা প্রদান করতে যদি কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হয়, সে ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

ধন্যবাদান্তে
গোপাল সাধওয়ানি
ডিরেক্টর
যোগাযোগ: ০১১-২৩৩৮৫০১৬
sadhwani.gopal@nic.in

তথ্য- সম্প্রচার মন্ত্রকের সেই চিঠি৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here