দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গতকাল বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে এখন অনেকটাই সুস্থ ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা বর্তমান বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। গতকালই আনজিওপ্লাস্টি হয়েছে সৌরভের। বসানো হয়েছে স্টেন্ট। তারপরে এখন তাঁর পালস রেট ও রক্তচাপ স্বাভাবিক বলেই হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে। রাত ভাল ঘুমিয়েছেন দাদা।


রবিবার সকালে হাসপাতালের তরফে যে বুলেটিন দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে আর কোনও সমস্যা হয়নি সৌরভের। তিনি ভাল করে ঘুমিয়েছেন। এমনকি রবিবার সকালেও তিনি ঘুমিয়েছেন। রাতে একবারই ঘুম ভেঙেছিল দাদার। তখন তাঁকে কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। সেই ওষুধ খেয়ে ফের ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। রাতে তাঁর দেখভালের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ছিল বলে খবর। এছাড়া সৌরভের স্ত্রী ডোনাও তাঁর পাশের কেবিনেই ছিলেন রাতে।


বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে তাঁর পালস রেট প্রতি মিনিটে ৭০। রক্তচাপ ১১০/৭০। অর্থাৎ দুটি প্যারামিটারই প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া সকালে তাঁর রুটিন চেকআপ করা হয়েছে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৮ শতাংশ। মানসিকভাবে চনমনে রয়েছেন তিনি। গতকাল থেকে যাঁরাই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন সবার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। চিকিৎসক, নার্স ও পরিবারের লোকেদের সঙ্গেও কথা বলছেন তিনি।

শনিবার রাতে করোনো পরীক্ষা হয়েছিল ‘মহারাজ’-এর। তবে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় স্বস্তি পান অনুরাগীরা। রবিবার সকাল পর্যন্ত তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁকে হালকা খাবার দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালের বুলেটিন জানিয়েছে, রবিবার সকালে ফের ইসিজি করা হবে সৌরভের। একেবারে রুটিন পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য এই ইসিজি হবে। সময়ে সময়ে চিকিৎসকরা গিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখছেন বলেই জানানো হয়েছে।


শনিবার সকাল বেলায় জিম করতে গিয়ে আচমকা ব্ল্যাক আউট হযে যায় দাদার। পরিবার জানিয়েছে, প্রথমে পিঠে ব্যথা হচ্ছিল তাঁর। পরে মাথা ঘুরে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। প্রথমে উডল্যান্ডের জরুরি বিভাগে আনা হয় সৌরভকে। তারপর তাঁকে হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসক সরোজ মণ্ডলের তত্তাবধানে চিকিৎসা চলছে দাদার।
সৌরভের অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয়েছে উডল্যান্ড হাসপাতালে। একটি স্টেন্ট বসানো হয়েছে। ধমনীর মধ্যে রক্ত জমে ব্লক হয়ে যাওয়ার কারণে মাইল্ড অ্যাটাক হয় সৌরভের। সেই ব্লক ছাড়িয়ে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক করার জন্যই অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি ও স্টেন্ট বসানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট থেকে যা ইঙ্গিত, তাতে এ কথা বলা অসমীচীন হবে না যে, এই প্রথম হৃদরোগে আক্রান্ত হলেন না সৌরভ। আগেও একবার মৃদু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন তিনি। কিন্তু তখন বা তার পরেও সেটা বুঝতে পারেননি। শুধু তা-ই নয়, ইঞ্জেকশন ইত্যাদিকে শোয়েব আখতারের চেয়েও ভয় পাওয়ায় সৌরভ দীর্ঘদিন নিজের কোনও শারীরিক পরীক্ষাও করাননি। তাঁর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, শেষবার তাঁর খুঁটিনাটি শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল ২০০২-’০৩ সালে। যখন তিনি শেষবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আগের ঘটনাটি বুঝতে না পারার এটিও একটি বড় কারণ হয়ে থাকতে পারে। হাসপাতাল সূত্রের বক্তব্য, লিপিড প্রোফাইলের মতো পরীক্ষাগুলি নিয়মিত করালে তিনি হয়ত হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া এড়াতেও পারতেন

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি ব্লক রয়েছে হার্টে। একটি স্টেন্ট বসানো হয়েছে আজকে। আরও দুটি স্টেন্ট আগামীকাল বসানো হতে পারে বলেই হাসপাতাল সূত্রের খবর ৷তবে  এখনও পর্যন্ত সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here