দেবন্বিতা চক্রবর্তী: বনগাঁ: কলকা,শকুন্তলা,বোরো পাখি,মৌ, টিয়া পাখি,ফিগার,গোলাপ,জবা হরেক নামের শাড়ীর পসার হাতে নিয়ে আনোয়ারা বিবি ক্রেতাদের কে মুগ্ধ করছেন৷ বনগাঁ আঞ্চলিক হস্তশিল্প মেলায়৷ বিরভূমের নানুর গ্রামে ১৮০জন মহিলা সারা বছর ধরে সুতি,সিলক,তসর থেকে শুরু করে খেস বিভিন্ন রকমের শাড়ির উপরে সুতোর নকসা এঁকে তৈরী করেন রকমারী রঙিন শাড়িI যার বাজার মূল্য ১৫০০টাকা থেকে ১০,ooo টাকা পর্যন্ত রয়েছে৷ বনগাঁ পুরসভার নীলদর্পন স্টলে এবার মন কেরেছে মেলার ক্রেতাদের৷

রাজ্য ক্ষুদ্র ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং বস্ত্র বিভাগের উদ্যোগে বনগাঁ তে শুরু হয়েছে আঞ্চলিক হস্তশিল্প মেলা গত শনিবার বিকেলে এই মেলার উদ্বোধন করেন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী রত্না ঘোষ কর উপস্থিত ছিলেন জেলা

সভাধিপতি মিনা মন্ডল বনগাঁর মহকুমা শাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস পুরো প্রধান শঙ্কর আঢ্য সহ বিভিন্ন প্রতিনিধি এবং আধিকারিকেরা খেলাঘর ময়দানে আসর বসেছে দপ্তর সূত্রে জানা গেছে রাজ্যের কয়টি জেলা থেকে প্রায় সাড়ে ৪ooহস্তশিল্পী ৷

এই মেলায় তাদের শিল্প সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছেন ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই মেলা চলবে৷ দুপুর ১ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত সর্বসাধারনের জন্য এই মেলা খোলা থাকছে মেলা উদ্বোধন করার আগে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন মন্ত্রী বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নানান ধরনের শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা

জানতে চান পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন রাজ্য জুড়ে এমন প্রচুর শিল্পী রয়েছেন বাম আমলে এই শিল্পীর আত্ব ছিল তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে তাদেরকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয় এরপর এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাজার তৈরি করা হয় যেখানে হস্ত শিল্পীরা তাদের উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রি করার সুযোগ পান এছাড়া তাদেরকে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে আগামীতে তাদেরকে নিয়ে আরো ভাবনাচিন্তা রাজ্য সরকারের রয়েছে বলে তিনি জানান৷


বনগাঁ পুরসভার পুর প্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন সিপিএম আমলে মানুষ হাঁট ,বাজার ঠিক মত করতে পারতেননাবনগাঁয মেলা এখানকার মানুষের স্বপ্ন ছিল, সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে রুপ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,আমরা তাঁর অনুপ্রেরণায় রাজ্যের অন্যান্য শহরের মত বনগাঁ শহরে এই আঞ্চলিক হস্তশিল্প মেলাকে সমস্ত মানুষের কাছে তুলে ধরেছি৷

বঁনগা খেলাঘর ময়দানে দুপুর থেকে ভিড় করছেন মেলাপ্রেমীরা৷ এই মেলায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হস্তশিল্পীদের তাকলাগানো শিল্পকলার কিছু নিদর্শন যেমন রয়েছে তেমনি বঁনগা পৌরসভার নীলদর্পণ স্টলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে তৈরী খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে ঘরসাজানোর প্রচুর সম্ভার। মছলন্দপুরের চলন্তিকা গোষ্ঠীর মেয়েরা হাজির করেছে শীতের মরশুমে ঢেকিছাটা চালের গুঁড়ো, ইউক্যালিপটাস ও সুন্দরবনের মধু ,

খাটি হলুদ ও ঘী। মেলায় এসে দেশের সময় কে একান্ত সাক্ষাৎকারে এক স্কুল শিক্ষিকা ওইশিখা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,এক কথায় সারা বছরের প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম জিনিস এই মেলায় এসেছে৷প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে কিনছি যতটুকু সম্ভব৷এই রকম মেলা প্রতি বছর হলে ভাল হয়৷এই মেলার জন্য বনগাঁর ঐতিহ্য আরো উজ্জ্বল হয়েছে৷

বিশেষ করে বহু মহিলাদের হাতের কাজ দেখে অনেক মহিলা উৎসাহ পাচ্ছেন বলে আমার ধারনা।খাঁটি মধুর টানে এসেছি,মেলায় না এসে সুন্দরবনের মধু না কিনলে পস্তাবে অনেকেই৷

মেলা প্রাঙ্গণের মঞ্চে প্রতিদিন চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷ বনগাঁর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন এখানে প্রকৃত মাটির মানুষেরা এসেছেন

তাঁদের শিল্পসম্ভার নিয়ে, আর বনগাঁর মানুষ তাঁদেরকে সম্মান জানাতে প্রতিদিন মেলায় আসছেন এবং মা মাটি মানুষের জন্য আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় তাদের পাশে পাশে আছি সর্বক্ষণ।

ছবি তুলেছেন পার্থ সারথি নন্দী, দীপক পাল||

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here