দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। দু’দেশই সেনা মোতায়েন করেছে। তার মাঝেই সোমবার লাদাখের ডেমচোক এলাকায় চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির এক সৈনিক প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে ঢুকে পড়েন। তাঁকে আটক করে ভারতীয় সেনা। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে চিনের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। অবশ্য তার আগে দীর্ঘক্ষণ তাঁকে জেরা করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

সাউথ ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই চিনা সেনার নাম ওয়াং ইয়া লং। আটক করা হলেও তাঁকে অক্সিজেন, ওষুধ, গরমবস্ত্র দেওয়া হয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অঞ্চলে চিনা সেনা ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যে রকম আচরণ করা হয়েছে বা হচ্ছে, সেই তুলনায় ভারতীয় বাহিনীর এই আচরণে বৈপরীত্য রয়েছে বইকি।

এর আগে সোমবার সেনা সূত্রে বলা হয়, ধৃত ওই পিএলএ সৈনিককে জেরা করা হচ্ছে। চিনের ষষ্ঠ মোটোরাইজড ডিভিশনের সৈনিক তিনি। জেরায় ওই সৈনিক জানিয়েছেন, তাঁর চামরি গাই খোয়া গিয়েছে। সেটি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। তবে সেনা অফিসারদের সন্দেহ, চরবৃত্তি করতে ভারতের ভূখণ্ডের মধ্যে ঢুকেছিলেন ওই চিনা সৈনিক। তাঁর কাছ থেকে মিলিটারি ডকুমেন্ট উদ্ধার করা হয়েছে।

চিনা সৈনিক ধরা পড়ার পরে সোমবারই লাল ফৌজ থেকে ভারতীয় বাহিনীর কাছে আবেদন এসে পৌঁছয়। তাতে বেজিংয়ের তরফে বলা হয়, পিএলএ-র এক সৈনিক নিঁখোজ। সে ব্যাপারে ভারতীয় বাহিনীর কিছু জানা থাকলে যেন তা জানানো হয়।

সেনা সূত্রে বলা হয়, ওই সৈনিক যদি পথ হারিয়ে ঢুকে পড়ে থাকে তা হলে তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। চরবৃত্তির কোনও প্রমাণ পেলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে ভারতীয় বাহিনী। পরের দিন অবশ্য তাঁকে ফেরত পাঠাল ভারত।

বস্তুত এমন সময়ে ওই চিনা সেনা সীমান্ত পেরিয়ে চলে এসেছিলেন যখন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারত –চিন বিবাদ তীব্র। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর চিনের ভূমিকা নিয়ে বারবার হতাশা প্রকাশ করছেন। এক সময়ে চিনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ছিলেন তিনি। চিনা প্রশাসনের সঙ্গে নয়াদিল্লির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনি অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু জয়শঙ্করও চিনের আগ্রাসী আচরণ নিয়ে বিরক্ত।

লাদাখে দুই দেশের সেনাবাহিনী প্রায় ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। শীতে সংঘাত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য দুই দেশই প্রস্তুতি ও রসদের যোগান বাড়াচ্ছে। তার মধ্যেই চিনা সেনা ধরা পড়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় কূটনৈতিক মহলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here