দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন ঘোষণা করে কেন্দ্রই তা ভাঙতে বাধ্য করছে সাধারণ মানুষকে। এদিন এই ভাষাতেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের নিন্দা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, জন ধন প্রকল্পের টাকা তুলতে ব্যাঙ্কে লম্বা লাইন পড়ছে। মহিলারা ভিড় করছেন। এর ফলে লকডাউনের নিয়ম ভাঙা হচ্ছে বলে এদিন অভিযোগ করেন মমতা।

এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার জন-ধন প্রকল্পের নামে কী সব সুবিধা দিচ্ছে। আর তার জন্য হাজার হাজার লোক লাইনে দাঁড়াচ্ছে। কেন্দ্র লকডাউন ঘোষণার পরে নিজেরাই তা ভাঙাচ্ছে। এটা আমরা ভাল ভাবে নিচ্ছি না। আমি মুখ্যসচিবকে এ ব্যাপারে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি।” উজ্জ্বলা প্রকল্পে গরিব পরিবারকে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার বিলির ক্ষেত্রেও মানুষের ভিড় হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। তাঁর দাবি, এই দায়িত্ব রাজ্যের হাতে দিলে তা সুষ্ঠু ভাবে হত।

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের ঘোষণা মতো জন-ধন প্রকল্পে যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে তাঁদের তিন মাস ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। এপ্রিল, মে, জুন এই তিন মাস টাকা দেওয়া হবে। দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণার পরে পরেই দরিদ্র মানুষের জন্য ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্র। সেই ঘোষণার সময়েই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, দেশে জন-ধন প্রকল্পের আওতায় অ্যাকাউন্টের মালিক ২০ কোটি মহিলা। তাঁরা পাবেন মাসে ৫০০ টাকা। তিন মাস এই অর্থ দেওয়া হবে।

এই অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে ব্যাঙ্কে প্রাপকদের ভিড় না হয় সেই নির্দেশও দিয়েছে কেন্দ্র। এর জন্য সব ব্যাঙ্ককে বিশেষ নির্দেশও পাঠায় ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ)। সেই নির্দেশে বলা হয়, ৩ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল এই সাত দিনে ধাপে ধাপে জন-ধন প্রকল্পের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে হবে। এই নির্দেশের সময়ে আইবিএ জানায়, এমনিতে একই দিনে সব অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে ধাপে ধাপে টাকা জমা করতে বলার পিছনেও কারণ রয়েছে। একই সঙ্গে সব অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়লে তা তুলতে হুড়োহুড়ি লেগে যেতে পারে। সেই কারণেই ধাপে ধাপে টাকা জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আইবিএ এটাও জানায় যে, টাকা তোলার জন্য গ্রাহকদের হুড়োহুড়ি করার দরকার নেই। কারণ, এই টাকা সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টেই থেকে যাবে। টাকা জমা পড়ার পরে যে কোনও দিন তা তোলা যাবে। একই সঙ্গে বলা হয়, টাকা তোলার জন্য ব্যাঙ্কের শাখায় ভিড় করার দরকার নেই। যে কোনও এটিএম, ব্যাঙ্ক মিত্র কিংবা কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টে গিয়ে টাকা তোলা যাবে। অন্য ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে টাকা তুলতে কোনও চার্জও লাগবে না।

এদিন রেশনে চাল, ডাল বিলি নিয়েও বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। তবে বিজেপির নান নেননি তিনি। মমতা বলেন, “কিছু রাজনৈতিক দল রেশনের চাল নিয়ে রাজনীতি করছে। এটা ঠিক নয়। রেশনের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে। যদি দলের পক্ষ থেকে মানুষকে কিছু দিতে হয় তবে তা বাইরে থেকে কিনে দিন। আমাদের দলও কিনে দিচ্ছে।”

এই অভিযোগ অবশ্য প্রথম নয়। লকডাউনের মধ্যেই এই আভিযোগ আগেও করেছেন মমতা। এদিকে বিজেপির বক্তব্য, রাজনীতি আসলে করছে তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কম দামের চাল নিজেরা দিচ্ছে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here