দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃরাহুল গান্ধীর মোকাবিলায় নতুন অস্ত্রে শান দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। রাফায়েল নিয়ে রাহুল যত সুর চড়াচ্ছেন, মোদীর সেনাপতিরাও অগুস্তা মামলায় গান্ধী পরিবারের ‘যোগ’ নিয়ে ঝাঁপাচ্ছেন। এই আবহের মধ্যেই ২০১৯-এর লোকসভা ভোটকে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে বসলেন অমিত শাহ। দিল্লির রামলীলা ময়দানে দু’দিনব্যাপী বিজেপির জাতীয় পরিষদের বৈঠক চলছিল। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছিল সেই বৈঠক। সেখানেই শাহ বলেন, পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আফগান সেনাদের কাছে মারাঠাদের পরাজয় যতটা তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, আদর্শের দিক দিয়ে আগামী লোকসভা ভোটও ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর মতে, উনিশের ভোট হল মতাদর্শের লড়াই। একদিকে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ, তার বিপরীতে যারা রয়েছে তাদের না আছে নীতি, না আছে আদর্শ। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আফগানদের কাছে পরাজয় হয়েছিল মারাঠাদের। অনেকের মতে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের কথা বলে, আদতে ভারতের হিন্দুত্ব এবং জাতীয়তাবাদের আবেগেই সুড়সুড়ি দিতে চেয়েছেন অমিত শাহ বস্তুত রাম মন্দির নিয়েও যথেষ্ট চাপে রয়েছে মোদী সরকার। একদিকে রাম মন্দির নিয়ে মোদী যখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষা করছেন, ঠিক তার উল্টো পথে হেঁটে শিবসেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো এ বিষয়ে অধ্যাদেশ আনার জন্য জোর আওয়াজ তুলছে। অমিত শাহের দাবি, অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়তে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বিজেপির, সরকার শুধু আইনি সমাধানের জন্য অপেক্ষা করছে। মামলাটি এখন বিচারবিভাগের অধীনে। এই পদ্ধতি শেষ হলে সরকারের যা কর্তব্য সেটাই করবে। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, এই বিষয়ে আইনি পদ্ধতিকে দেরি করিয়ে দিচ্ছে কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশে লোকসভা ভোটের আগে জোট ঘোষণা করবে মায়াবতী-অখিলেশ। সেই পিসি-ভাইপোর জুটিকেও আজ কটাক্ষ করেন অমিত শাহ। বলেন, “চোদ্দর ভোটে আমরা ৭৩টা আসন জিতেছিলাম। এ বার তার চেয়ে বেশি জিতব। জোট করে আমাদের আটকানো যাবে না।”২০১৪ লোকসভা ভোটের বিপুল জয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শাহ বলেন, “সে বার আমরা ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২৮২টি আসনেই জয় পেয়েছিলাম। এ বারও দল সেই বিপুল জয় নিয়ে আসবে।” সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “গত বিধানসভা ভোটে দল ১২২টি আসনে দেড় কোটি মানুষের সমর্থন পেয়েছিল, এ বার দু’কোটি মানুষের সমর্থন আমরা আশা করছি।”উনিশের ভোটের আগেই সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খেয়েছে মোদী সরকার। সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত খারিজ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ২২টি ভুয়ো সংঘর্ষের পুরনো মামলা নতুন করে চাপে ফেলেছে মোদী-শাহ-সহ গোটা বিজেপি শিবিরকে। আশঙ্কা একটা রয়েছেই যে, লোকসভা ভোটের আগে এ নিয়ে নতুন করে হইচই শুরু হলে তাতে মোদী-শাহ বিপাকে পড়তে পারেন। বিরোধী কটাক্ষের মুখে তাই উনিশের ভোটের সঙ্গে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের মিল টেনে এনে শাহ বলেছেন, “১৭৬১ সালে আফগান শাসক আহমেদ শাহ দুরানি মারাঠা বীরদের পরাস্ত করেছিল। আর সেই পরাজয় এনেছিল ২০০ বছরের দাসত্ব।” সেই সঙ্গে শাহের মন্তব্য, “আমরা যদি আসন্ন নির্বাচনে জয়লাভ করি, তাহলে আমাদের ভাবধারা আগামী ৫০ বছর দেশকে শাসন করবে। তাই এই নির্বাচন জিততে আমাদের বাড়তি উদ্যম লাগবে।”


আমাদের দয়ায় মধ্যপ্রদেশে সরকার চালাচ্ছে কংগ্রেস। শীর্ষনেতৃত্ব চাইলে যেকোনও মুহূর্তে কংগ্রেসের পরিবর্তে সরকার গঠন করতে পারে বিজেপি।’‌ মধ্যপ্রদেশের সরকারকে উদ্দেশ্য করে এরকমই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপির সাধারণ সচিব কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা দ্বিগিজয় সিং দাবি করেছিলেন, কমলনাথ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিজেপি ১০০ কোটি টাকা অফার করা হয়েছে কংগ্রেস বিধায়কদের। এরপরই মুখ খুললেন বিজয়বর্গীয়। একটি জনসভায় বক্তৃতা রাখতে গিয়ে বলেন, ‘‌এটা কী ধরনের সরকার?‌ এই সরকার আমাদের দয়ায় চলছে। ১৫ বছর আমরা এখানে সরকার চালিয়েছি। শীর্ষ নেতৃত্ব চাইলে যেকোনও মুহূর্তে এই রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরতে পারে। এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করাটা কোনও ব্যাপার নয়। গত ১৫ বছরে আমাদের সরকার এই রাজ্যে অনেক কাজ করেছে। কোনও সরকারি আধিকারিককে কাজ করাতে হলে একটি ফোনই যথেষ্ট ছিল। আর এখনকার সরকার, যাঁরা কাজ করছে না তাঁদেরই পুজো করছে।’ যদিও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজয়বর্গীয়ের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। ‘‌সাধারণ মানুষের রায় মানতে চাইছে না বিজেপি। বিজয়বর্গীয়ের কথায় পরিষ্কার, কমলনাথের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তাঁরা টাকা দিয়ে বিধায়ক কেনাবেচার চেষ্টা করছেন। এভাবে জনগনের রায়কে অপমান করার অধিকার তাঁদের নেই।’ বলেন মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের মুখপাত্র নীলাভ শুক্লা।‌ ‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here