দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণী সহ ৩২ জনকে বুধবার নির্দোষ বলে রায় দিয়েছে সিবিআই আদালত। সেই রায় শুনে ৯২ বছর বয়সী আডবাণী বলেন, “রামমন্দির নিয়ে আমার তথা বিজেপির অবস্থানই সঠিক বলে প্রমাণিত হোল।” এরপর তিনি বলেন “জয় শ্রীরাম! এখন আমাদের আনন্দের সময়”।

পরে এক বিবৃতিতে আডবাণী বলেন, “এই রায়ে আমার ও বিজেপির বিশ্বাসই সঠিক বলে প্রতিপন্ন হোল। ২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট একটি ঐতিহাসিক রায় দেয়। সেই রায়ের পরে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের সূচনা হয়েছে।”

পরে বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা আডবাণী বলেন, লক্ষ লক্ষ দেশবাসীর মতো আমিও অপেক্ষা করে আছি, কবে রামমন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণ হবে।

এদিন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক এস কে যাদব বলেন, “সমাজবিরোধীরা বাবরি মসজিদের কাঠামোটি ভেঙে ফেলেছিল। অভিযুক্তরা তাদের থামাতে চেষ্টা করেছিলেন।”

রায় শুনে বিজেপি নেতা তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডে বলেন, “১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম আমি। পুরো ব্যাপারটাই ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। এর পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র ছিল না। আমি মঞ্চ থেকে একটি সভা পরিচালনা করছিলাম। এমন সময় দেখলাম কয়েকজন করসেবক বাবরি মসজিদের ওপরে উঠে পড়েছে। আডবাণীজি তাতে অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন।”

বিজেপি নেতা রাম মাধব বলেন, “অনেকদিন আগেই অভিযুক্তদের নির্দোষ বলে ঘোষণা করা উচিত ছিল। দেশের সবচেয়ে সম্মানিত নেতাদের বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছিল। তিন দশক বাদে সেই মামলায় তাঁরা খালাস পেলেন। এই রায়কে প্রত্যেকের অভিনন্দন জানানো উচিত।”

করসেবকরা বিশ্বাস করত, যেখানে বাবরি মসজিদ দাঁড়িয়েছিল, সেখানেই জন্ম হয়েছিল রামচন্দ্রের। তাই তারা মসজিদটি ভেঙে ফেলে। তারপরে দেশ জুড়ে দাঙ্গা শুরু হয়। সরকারি হিসাবমতো দাঙ্গায় ৩০০০ মানুষ মারা গিয়েছিলেন। অযোধ্যার জমি নিয়ে যে মামলা চলছিল, তা এই বাবরি ভাঙার মামলার থেকে আলাদা। জমির মামলায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে। গত ৫ অগাস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাস করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

বাবরি মসজিদ ভাঙা পড়ার পরে পুলিশ দু’টি এফআইআর করে। প্রথমটি করা হয় কয়েক লক্ষ করসেবকের বিরুদ্ধে। তাঁরা ৬ ডিসেম্বর মসজিদের ওপরে উঠে হাতুড়ি ও কুড়ুল দিয়ে সৌধটি ভেঙে ফেলেছিলেন। দ্বিতীয় এফআইআরটি হয় আটজনের বিরুদ্ধে। তাঁরা হলেন বিজেপির আডবাণী, যোশি, উমা ভারতী এবং বিনয় কাটিহার এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিঙ্ঘল, গিরিরাজ কিশোর, বিষ্ণুহরি ডালমিয়া এবং সাধ্বী ঋতাম্ভরা। তাঁদের মধ্যে বিষ্ণুহরি ডালমিয়া, গিরিরাজ কিশোর ও অশোক সিঙ্ঘল মারা গিয়েছেন।

করসেবকদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত করে সিবিআই। অন্যদিনে বিজেপি ও ভিএইচপি নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় উত্তরপ্রদেশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here