দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অতিমহামারী করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে ‌বন্ধ থাকার পর অবশেষে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলি খোলার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। আর তারপর থেকেই জোরদার তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে গোটা পাহাড়জুড়ে।

পর্যটনের উপরেই মূলত নির্ভর করে পাহাড়ের অর্থনীতি। প্রায় পাঁচ মাসের উপর পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ রয়েছে পাহাড়ে। তাই রুটিরুজি নিয়ে গভীর সমস্যায় মানুষ। এই পরিস্থিতিতেই মহালয়ার আগেই পাহাড়ে হোটেল, রেস্তোরাঁ চালু করার সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন জেলাশাসক। তারপরেই হাঁফ ছেড়েছেন মানুষ। মহালয়ার বাকি এখনও এক সপ্তাহ। এখন অতটা সময়ও আর অপেক্ষা করতে চাইছেন না হোটেল ব্যবসায়ীরা। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকেই পাহাড়ের বেশিরভাগ হোটেল খুলে দেওয়ার। কিছু হোটেলের মালিক বাইরে রয়েছেন, তারা ফিরে এলে এই সপ্তাহের মধ্যেই খুলে যাবে এই হোটেলগুলিও।

করোনা রুখতে মার্চ মাসের শেষ থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। তারপর থেকেই পর্যটকশূন্য পাহাড়। আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পরেও হোটেল- রেস্তোরাঁ খোলা নিয়ে ঘোঁয়াশা ছিলই। এবার সরকারি নির্দেশিকা জারির পর পাহাড়ের হোটেল খোলা নিয়ে যে টানাপড়েন চলছিল তা অনেকটাই মিটে গেল বলে মনে করছে পর্যটনের সঙ্গে জড়িত মানুষজন।

তবে হোটেল খুললেও কাঙ্খিত বুকিং এই মুহূর্তে হবে কি না তা নিয়ে এখনও মালিকেরা অনিশ্চিত। কারণ করোনা সংক্রমণ এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এই পরিস্থিতিতে ভয়কে জয় করে কত মানুষ বেড়াতে বের হবেন তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।

এদিকে হোটেল-রেস্তোরাঁ চালুর ব্যাপারে সরকারি নির্দেশিকা থাকলেও টাইগার হিল বা ডেলোর মতো ঘোরার স্পট, হোম–স্টে গুলি কীভাবে চালু হবে তা নিয়ে আলাদা করে কোনও নির্দেশিকা এখনও জানি হয়নি।। তবে পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, হোটেলের সঙ্গেই হোমস্টেও চালু হয়ে যাবে।

এগুলি খোলার বিষয়ে বিধি মেনেই সবটা করতে হবে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। এখন থেকে হোটেলগুলি খুলে সাফসুতরো করে পুরো আয়োজন করে রাখলে পুজোর সময়  কিছু পর্যটকের দেখা মিলতে পারে বলেও আশাবাদী তাঁরা।

প্রতি বছর মহালয়ার দিন থেকে পুজোর মরসুম শুরু হয়। এ বছর সমস্ত নিয়ম উল্টেপাল্টে দিয়ে মহালয়ার প্রায় এক মাস পড়ে পুজো। তাই হাতে রয়েছে অনেকটা সময়। এর মধ্যেই হোটেল–রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে হোম–স্টেগুলিও স্যানিটাইজ করে প্রস্তুতি সেরে ফেলতে চান পর্যটন ব্যবসায়ীরা। দার্জিলিং শহরেই এই মুহূর্তে প্রায় ৩৫০ হোটেল রয়েছে। গ্রামীণ এলাকা মিলিয়ে হোম–স্টে’‌র সংখ্যা প্রায় ৬০০।

গ্রামের মানুষদের মধ্যে যেহেতু আতঙ্ক এখনও রয়েছে তাই হোম–স্টে খুলতে গেলে গ্রামবাসীরা যদি কোনও বাধা দেন সেক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হবে পারে। এমন আশঙ্কাও রয়ে গেছে। দার্জিলিং হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানাগিয়েছে, ‘শহরের মানুষদের নিয়ে সমস্যা নেই। ‌গ্রামের মানুষদের বিষয়টি বোঝাতে হবে। প্রশাসনেরও এ ব্যপারে এগিয়ে আসতে হবে।’’

এই সমস্ত বাধা কাটিয়েই এখন এগোতে চাইছেন পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। জাবিকার স্বার্থেই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই তাঁদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here