দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃমহারাষ্ট্রের আলিবাগের কাছে ল্যান্ডফল হয়েছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ-র। এই আলিবাগেই ঝড়ের জেরে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। ঝড়ের মধ্যেই দুপুর দেড়টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়ে তাঁর উপর এসে পড়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটি। এর জেরে মৃত্যু হয়েছে ৫৮ বছরের দশরথ বাবু ওয়াঘমারের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। এছাড়াও পুলিশ জানিয়েছে পুণেতে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিনজন।

দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমণ নিয়ে জেরবার মহারাষ্ট্র। সবচেয়ে শোচনীয় পরিস্থিতি মুম্বইয়ে। তার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় নিসর্গের মুখোমুখি মহারাষ্ট্র। উম্পুনের ধ্বংসলীলার মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় সাইক্লোন আছড়ে পড়ল দেশে। বুধবার বেলা ১টা নাগাদ মহারাষ্ট্রের আলিবাগের কিছুটা দক্ষিণে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার।

ঘূর্ণিঝড়ে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত রায়গড় জেলা। জেলাশাসক নিধি চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘আলিবাগের উমতে গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে ৫৮ বছর বয়সী এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে। জেলা থেকে আর কোনও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।’ তবে ঘূর্ণিঝড়ে জেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৮৫টি বড় গাছ ঝড়ে উপড়ে গিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি বাড়ির উপরে গিয়ে পড়ে। এ ছাড়া ১১টি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বাহিনী (NDRF) উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। 

মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া পার্শর্বর্তী রত্নাগিরি জেলাতেও নিসর্গের কারণে চার জন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। এছাড়া বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে গিয়েছে বেশ কিছু গাছ। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি।

নিসর্গের দাপটে ইতোমধ্যেই মুম্বইয়ে উপড়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি গাছ ও ল্যাম্পপোস্ট। ঝড়ের দাপটে মুম্বইয়ের স্যান্টাক্র‌ুজ এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের সিমেন্টের চাঙড় ভেঙে পড়ে আহত হয়েছেন একই পরিবারের তিনজন। বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যাহত মোবাইল পরিষেবা। তবে যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা সেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলেই খবর।

বুধবার বিকেলে পর থেকে শক্তি হারিয়ে দুর্বল হতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। সন্ধে ৬টার পর চালু হয়েছে বিমান পরিষেবা। বেশ কিছু এলাকায় দোকানপাট খুলেছে বলে খবর। আলিবাগের কাছে ল্যান্ডফলের পর তুমুল বৃষ্টি শুরু হয় মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রের একাধিক উপকূলীয় জেলায়। ল্যান্ডফলের সময় হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২৫ কিলোমিটার। আবহবিদদের অনেকের মতে আলিবাগের কাছে ল্যান্ডফল হওয়ায় নিসর্গের তাণ্ডব থেকে অনেকাংশে বেঁচে গিয়েছে মুম্বই।

ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। নিম্ন উপকূলীয় এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ সর্বাধিক। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়েছে বেশ কিছু এলাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here